অঙ্গীকারনামা কিভাবে লিখতে হয় ?

অঙ্গীকারনামা লেখার নিয়ম

অঙ্গীকারনামা হলো ব্যাবসায়ী কাজে কোন চুক্তি করার ক্ষেত্রে লেখা হয়ে থাকে, এটি একটি প্রমাণ হিসেবে থাকে। অনেক সময়  সঠিক প্রমাণের অভাবে অনেক বড় আর্থিক ঝামেলায় পড়তে হয় সেই সমস্যা বোধের জন্য যথার্থ প্রমাণ রাখা  জন্য এই ব্যবস্থা। অঙ্গীকারনামা যে শুধু মাত্র ব্যাবসায়িক ক্ষেত্রে কাজে লাগে তা কিন্তু নয় এটি শিক্ষা ক্ষেত্রে, চাকরির ক্ষেত্রে  ও নানা  কাজে লাগে। এটি একটি কাজ শুরু করার বা কোন লেনদেনের একটি সাক্ষী পত্র। 

অঙ্গীকারনামা লেখার নিয়ম, চুক্তিপত্র লেখার নিয়ম, চাকরির অঙ্গীকারনামা লেখার নিয়ম, অঙ্গীকারনামা লেখার নিয়ম pdf, চাকরির অঙ্গীকারনামা লেখার নিয়ম
অঙ্গীকারনামা লেখার নিয়ম

অঙ্গীকারনামা কি?

অঙ্গীকারনামা ও চুক্তিপত্র একই বিষয়। অঙ্গীকারনামা হল একটি লেখিত চুক্তি বা স্ট্যাম্প, যা দুটি পক্ষের মধ্যে একটি সম্ঝোতা বোঝায়। অঙ্গীকারনামা মুলত বিজনেসের কাজে কোন চুক্তি করার ক্ষেত্রে লিখা হয়ে থাকে, এটি একটি প্রমাণ হিসেবে থাকে যেখানে দুই পক্ষের অবস্থান সমান থাকে। অঙ্গীকারনামা দ্বিপক্ষীয় সম্ঝোতা নির্ধারণ করে এবং এটি সাধারণভাবে দুটি পক্ষের অধিকার এবং দায়িত্ব স্পষ্ট করে দেয়। এটি বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী একটি লিখিত ধাঁরা। এটি যেকোন কাজে একটি প্রমানপত্র হিসেবে কাজ করে, যাতে ভবিষ্যতে কোন ঝামেলায় পড়তে না হয়।  অঙ্গীকারনামে দুই পক্ষের পরিচয় থাকে, তার সাথে কে কি করতে চলেছে তার বর্ণনা থাকে, স্বাক্ষর থাকে এবং টাকা পয়সার বিষয় থাকলে তার পরিমাণ উল্লেখ  করা থাকবে।

অঙ্গীকারনামা লেখা কারণ কি? 

অঙ্গীকারনামা লেখার কারণ হলো একটি নিরাপদ, সহজ এবং নিরপেক্ষ উপায়ে দুই পক্ষের মধ্যে একটি সম্মতি অর্জন করা। এটি বৈশিষ্ট্যমূলক মৌলিক তথ্য এবং শর্তাদি নির্ধারণ করার জন্য ব্যবহৃত হয়। একটি  অঙ্গীকারনামা পত্র একটি লেখা বা একটি অথরিটেটিভ ডকুমেন্ট হয়ে থাকতে পারে।  এটি ব্যবহার হয় বাণিজ্যিক, আধিকারিক এবং সামাজিক ক্ষেত্রে। চুক্তি পত্র কোন ধরনের চুক্তির জন্য লেখা হয়ে থাকে সেটি নির্ভর করতে পারে  দুইপক্ষের প্রয়োজনীয়তার উপর। 

অঙ্গীকারনামা মূল বিষয়বস্তু উভয় পক্ষেরই জানা ও সম্মতি থাকতে হবে। মূল বিষয়বস্তু অঙ্গীকারনামায় উল্লেখিত থাকতে হবে। নাহলে  কার্যক্রম বিচ্ছিন্ন হবে এবং ক্ষতি হবে। 

অঙ্গীকারনামা লেখার নিয়ম

অঙ্গীকারনামা লেখার নিয়ম মোতাবেক  কোন সংস্থা বা কোম্পানির অঙ্গে অথবা ব্যক্তির সাথে একটি সীমিত সুত্রে চুক্তি করতে হয়। অঙ্গীকারনামা প্রদানের জন্য নিম্নলিখিত নিয়মগুলি মেনে চলা উচিত:

  1. আপনার পরিচয় প্রদান করা অপর পক্ষকে:  অঙ্গীকারনামায়  আপনাকে আপনার নাম, ঠিকানা, বয়স, ধর্ম, জাতীয়তা, আইডি নাম্বার ইত্যাদি উল্লেখ করতে হবে।
  2. শর্ত  বর্ণনা করুন: অঙ্গীকারনামা একে একে শর্তাদি বর্ণনা করতে হবে। 
  3. স্বাক্ষর করুন:  অঙ্গীকারনামার শেষে আপনার স্বাক্ষর দিতে হবে। এটি আপনার প্রতিশ্রুতির প্রতি একটি চিহ্ন হিসেবে কাজ করবে। 
  4. তারিখ উল্লেখ করুন:  অঙ্গীকারনামার মোতাবেক প্রদান করা সম্ভব হবে এমন কোনও শর্তে তারিখ উল্লেখ করতে হবে।

অঙ্গীকারনামা কোন সংস্থা বা কোম্পানি বিশেষ হয়ে থাকে তাহলে তাদের নিজস্ব প্রিন্ট করা কাগজ হলেই চলবে বিশেষ প্রয়োজনে স্ট্যাম্প পেপার ব্যবহার করতে হবে। এই সময়ে  স্বচ্ছ এবং মৌলিক ভাষা ব্যবহার করে অঙ্গীকারনামা তৈরি করা গুরুত্বপূর্ণ।

অঙ্গীকারনামা নমুনা: 

আমি[আপনার পূর্ণ নাম], পিতা [আপনার পিতার পূর্ণ নাম],  মাতা [আপনার মাতার পূর্ণ নাম],  ঠিকানা: [আপনার ঠিকানা], বয়স: [আপনার বয়স], জাতীয়তা: [আপনার জাতীয়তা], আইডি নাম্বার: [আপনার আইডি নাম্বার], এবং [অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য ]। 


 [অনুমোদিত কাজ বা শর্তাবলী  গুলো  উল্লেখ করতে হবে এবং  আইনি জটিলতা উল্লেখ করতে হবে ] 


আমি অঙ্গীকারনামা  মেনে চলতে প্রস্তুত এবং প্রতি সময় এটি অনুসরণ করতে থাকব। এটি প্রদান করার পর আমি এই অঙ্গীকারনামা থেকে পূর্ববর্তী কোনও অপব্যবহার করতে অথবা এটি বিরোধ করতে পারব না। আমি এই অঙ্গীকারনামা নিয়ম মনে চলার  প্রতিশ্রুতিবদ্ধ  হওয়ার জন্য অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর করিলাম। 

ধন্যবাদ,
[আপনার নাম]
[তারিখ]

স্বাক্ষর: ____________________
ই-মেইল:
মোবাইল নম্বর:


বিভিন্ন কার্যক্রমের জন্য অঙ্গীকারনামা প্রয়োজনীয়তা  রয়েছে। যেমন:  টাকা লেনদেনের ক্ষেত্রে, সরকারি কাজে অঙ্গিকারনামা, শিক্ষাগত অঙ্গীকারনামা, বিয়ের অঙ্গীকারনামা। 


টাকা ধার দেওয়া চুক্তিপত্র


অঙ্গীকারনামা



মোঃ ………………….., পিতাঃ………………………………, মাতা-…………………………., জাতীয় পরিচয়পত্র নং …………….., মোবাইল নং-…………………., বর্তমান ঠিকানাঃ …………………। স্থায়ী ঠিকানাঃ গ্রাম/মহল্লাঃ …………………, ডাকঘর: …………………, উপজেলাঃ …………………., জেলাঃ ………………….., জাতীয়তা-বাংলাদেশী, ধর্ম-ইসলাম, পেশা-চাকুরী।

—–প্রথম পক্ষ (দাতা)।



মোঃ ………………….., পিতাঃ………………………………, মাতা-…………………………., জাতীয় পরিচয়পত্র নং …………….., মোবাইল নং-…………………., বর্তমান ঠিকানাঃ …………………। স্থায়ী ঠিকানাঃ গ্রাম/মহল্লাঃ …………………, ডাকঘর: …………………, উপজেলাঃ …………………., জেলাঃ ………………….., জাতীয়তা-বাংলাদেশী, ধর্ম-ইসলাম, পেশা-চাকুরী।

—–দ্বিতীয় পক্ষ (গ্রহীতা)।


প্রথম পক্ষ নিকট হতে  আমি দ্বিতীয় পক্ষের টাকা প্রয়োজন হওয়ায় নগদ  ৩,০৮,০০০/- (তিন  লক্ষ আট হাজার) টাকা প্রয়োজনে প্রথম পক্ষের নিকট হতে লিখিত শর্তাবলীর সাপেক্ষে নগদ টাকা গ্রহণ করিলাম।

শর্তাবলী


১। আমি দ্বিতীয় পক্ষ নগদ ৩,০৮,০০০/- (তিন  লক্ষ আট হাজার) টাকা ২৭ (সাতাশ) মাসের মেয়াদে দোকানের মাল কেনার জন্য প্রথম পক্ষ হইতে নেয়া হল। যার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর অর্থাৎ ০৭/০১/২০২৩ইং তারিখ হইতে ০৮/০৯/২০২৫ইং তারিখ দোকানের লভ্যাংশ ৪৩,৬৩০/ (তেতাল্লিশ হাজার ছয়শত ত্রিশ) টাকা, আসল ৩,০৮,০০০/- (তিন  লক্ষ আট হাজার) টাকা সহ মোট ৩,৫১,৬৩০/- (তিন লক্ষ একান্ন হাজার ছয়শত তিরিশ ) টাকা প্রথম পক্ষে বুঝাইয়া দিবো। 

২। ২৭ (সাতাশ) মাস পর ৩,৫১,৬৩০/- (দুই লক্ষ সাতচল্লিশ হাজার ছয়শত আটাশ) টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে আমি (দ্বিতীয় পক্ষ) কোনো ধরনের তালবাহানা করিলে প্রথম পক্ষ দ্বিতীয় পক্ষের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারবেন। এতে দ্বিতীয় পক্ষের কোনো আপত্তি থাকিবে না।

৩। চুক্তির মেয়াদে আমি দ্বিতীয় পক্ষ ০৮/০৯/২০২৫ইং তারিখের মধ্যে প্রথম পক্ষের নিকট ৩,৫১,৬৩০/- (তিন লক্ষ একান্ন হাজার ছয়শত তিরিশ) টাকা ফেরত প্রদান করিবো। যদি উক্ত তারিখের মধ্যে প্রথম পক্ষের নিকট উক্ত টাকা ফেরত দিতে ব্যার্থ হয় তাহলে নিদিষ্ট মেয়াদ শেষে প্রতি মাসের জন্য মূল টাকার ৫% লভ্যাংশ ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য থাকিবো।

৪।কোন অবস্থাতেই উপরে বর্ণিত ধার্যকৃত মাসিক লভ্যাংশের পরিমান বৃদ্ধি করা যাইবে না।

৫। প্রকৃতিক দুর্যোগ বা অন্য কোন সরকারী বিধিনিষেধের কারণে ব্যবসা পচিালনায় বিঘ্ন ঘটিলে উভয় পক্ষের আলাপ আলোচনার মাধ্যমে মাসিক লভ্যাংশের পরিমান মওকুফ বা কমানো যেতে পাওে, বিষয়টি অবশ্যই উভয় পক্ষের মানবিক দিক বিবেচনায় করা হবে।

৪। চুক্তিপত্রের বলে প্রথম পক্ষ দ্বিতীয় পক্ষের বিরুদ্ধে আইনের মাধ্যমে প্রদত্ত টাকা ক্ষতিপূরণসহ  দ্বিতীয় পক্ষের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি হয়তে আদায় করিয়া নিতে পারবেন। এতে দ্বিতীয় পক্ষের কোনো ওয়ারিশদের কোনো প্রকার আপত্তি থাকিবে না।

এই বিবৃতি আমি দ্বিতীয়পক্ষ স্বেচ্ছায়, সজ্ঞানে এবং বিনা প্ররোচনায় উপস্থিত স্বাক্ষীগণের উপস্থিতিতে নিম্নে আমার সহি সম্পাদন করিলাম।   

প্রথম পক্ষের স্বাক্ষর  এবং তারিখ। 
দ্বিতীয় পক্ষের স্বাক্ষর এবং তারিখ। 
স্বাক্ষীগণের স্বাক্ষর এবং তারিখ। 
১।
২।
৩।
৪।


অঙ্গীকারনামা লেখার নিয়ম pdf ডাউনলোড করে নিন 


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন