সোনালী ব্যাংক থেকে সঞ্চয়পত্র কেনার নিয়ম
সোনালী ব্যাংক থেকে অনেকেই সঞ্চয়পত্র ক্রয় করতে চান। তবে সোনালী ব্যাংক থেকে সঞ্চয়পত্র ক্রয় করতে গেলে কোন ডকুমেন্টস লাগবে তা জানাবো আজকের এই লেখাতে। তার সঙ্গে আপনাদেরকে আরও তথ্য জানিয়ে নেই। খুব কম পরিমাণ অর্থ ইনভেস্ট করে আপনি সঞ্চয়পত্র থেকে বিপুল লাভ অর্জন করতে পারেন। সঞ্চয়পত্র নিয়ে আগ্রহের শেষ নেই। ব্যাংকের ফিক্স ডিপোজিটের বাৎসরিক হারের চেয়ে এর লাভ অনেকগুণ বেশী। সরকারি বা বেসরকারি ব্যাংকগুলোর বর্তমানে ফিক্সড ডিপোজিটে যেখানে দিচ্ছে ৫ থেকে ৭%। সেখানে সঞ্চয়পত্রের কিনে প্রায় আপনি ১০ কিংবা ১১ শতাংশ মুনাফা পেয়ে যাবেন সঞ্চয়পত্রে। তাই সঞ্চয়পত্রের বিনিয়োগ বেশি লাভ এবং নিরাপদ যেহেতু এটি সরকারি।
সোনালী ব্যাংক থেকে সঞ্চয়পত্র কেনার নিয়ম |
প্রথমে জানাবো সঞ্চয় পত্র কি?
সঞ্চয়পত্র একটা সঞ্চয়স্কীম যা জাতীয় সঞ্চয় ব্যুরো মাধ্যমে সরকার জনসাধারণের নিকট হতে গ্রহণ করে থাকে। জাতীয় সঞ্চয় ব্যুরো অফিস প্রতিটি জেলায় অবস্থিত। বাংলাদেশ সরকার তফসিলি ব্যাংকগুলোর মধ্যে সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে। সেক্ষেত্রে ব্যাংক শুধু বিক্রেতা, জাতীয় সঞ্চয় ব্যুরো মাধ্যমে আপনার সঞ্চয় সঞ্চিত থাকে। সোনালী, অগ্রণী, রুপালি আপনি সরকারি বা বেসরকারি ব্যাংক থেকেই সঞ্চয়পত্র কিনেন না কেন।
আরও পড়ুন - ১ লক্ষ টাকার সঞ্চয়পত্র কত টাকা লাভ দেয়
সঞ্চয়পত্রের ডকুমেন্ট সমূহ :
১) সঞ্চয়পত্র ক্রয়ের আবেদন ফরম :
সঞ্চয়পত্র ক্রয়ের ক্ষেত্রে আপনার আবেদনপত্রটি ব্যাংক বা সঞ্চয় ব্যুরো অফিস থেকে সংগ্রহ করুন। আপনি চাইলে অনলাইন থেকে প্রিন্ট করে ব্যবহার করতে পারেন। বর্তমানে সঞ্চয়পত্র ক্রয় সহজীকরণ একপাতার ফ্রম প্রকাশ করা হয়েছে। এখানে ক্রেতা ও নমিনির তথ্য প্রধান ভাবে পূরণ করতে হবে। আপনি ফ্রম ক্রেতা বা নমিনির ক্ষেত্রে দুইটি অংশ পাবেন। আপনি চাইলে দুজন ক্রেতা তমিলে বা দুইটি নমিনি ব্যবহার করতে পারেন। তবে একজন ক্রেতা এবং একজন নমিনির ক্ষেত্রে এক নাম্বার ক্রেতা এবং এক নাম্বার নমিনির অংশ পূরণ করবে। দুই নাম্বার ক্রেতার ক্ষেত্রে দুই নাম্বার নমিনির অংশ ফাঁকা থাকবে।
২) গ্রাহকের এনআইডি প্লাস ২ কপি ছবি:
গ্রাহক বা যিনি ক্রেতা তার দুটি ছবি যুক্ত করতে হবে ফরমের। দুটি ছবি স্টাপলার দিয়ে যুক্ত করবেন। মনে রাখবেন ছবি তো অবশ্যই আপনার নাম লিখে দিবেন। ছবি অবশ্যই পাসপোর্ট সাইজের দিতে হবে। যদি একপাতার ফ্রম হয় পাসপোর্ট সাইজের ছবি বড় হয়ে যায়। দেখতে অনেকটা বেমানান লাগে । তবুও আপনি পাসপোর্ট সাইজের ছবি সংযুক্ত করতে পারবেন এটি।
৩) নমিনির এনআইডি এবং এক কপি ছবি:
নমিনির হচ্ছে আপনার মৃত্যুর পর আপনার সঞ্চয়কৃত অর্থের মালিক কে হবে তার তথ্য।নমিনির তথ্য পূরণ করবেন এবং তার স্বাক্ষর গ্রহন করে নিবেন । যদি নমিনি অপ্রাপ্তবয়স্ক হয় তবে তার জন্য অন্য এক প্রতিনিধির তথ্য দিবেন। জাতীয় পরিচয় পত্র অনুসারে ছবি এখানেও পাসপোর্ট সাইজের হতে হবে । আপনি ফরমের ডানপাশে মাঝখানে স্টেপলার করে দিবেন ছবিটি। ফর্মের সাইজ ছোট হয় ছবিটি যথাস্থানে রাখা হয়তোবা আপনার পক্ষে সম্ভব না।
৪) টিন সার্টিফিকেট :
৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত সঞ্চয়পত্র ক্রয়ের জন্য বর্তমান সময়ে নতুন অর্থবছরে ক্ষেত্রে কোন ধরনের টিন সার্টিফিকেটর প্রয়োজন হয় না। তবে ৫ লক্ষের অধিক সঞ্চয়পত্র ক্রয়ের জন্য অবশ্যই রিটার্ন জমা দেয়া হয়েছে এর একনলেজমেন্ট স্লিপের ফটোকপির সঙ্গে সঙ্গে টিন সার্টিফিকেটের ফটোকপি কিন্তু প্রয়োজন হয়ে থাকবে। নিজের রিটার্ন জমা দিতে না পারলে সেক্ষেত্রে আয়কর আইনজীবী সহায়তা দিয়ে তার নির্দিষ্ট ফি জমা দিয়ে কিন্তু রিটার্ন জমা দিতে পারবেন। যে পরিমাণ অর্থের সঞ্চয়পত্র কিনবেন তা অবশ্যই প্রথম রিটার্ন যদি হয়ে থাকে তাহলে তা ফাইলে আগে দেখে দিবেন। পরবর্তীতে এটা নিয়ে কিন্তু আপনার কোন ধরনের সমস্যা হবে না এবং এক্ষেত্রে সুবিধাও অনেকটা বেশি পাবেন।
৫) নমিনি নাবালক হলে:
নমিনি নাবালক হলে একজন প্রত্যায়নকারীর এনআইডি এবং এক কপি ছবি দিতে হবে । নমিনি নাবালক অপ্রাপ্তবয়স্ক হয়। তবে অন্য কোন ব্যক্তি তার চাচা,খালু,দাদু ইত্যাদি কোন ব্যক্তির এনআইডি ও তার তথ্য ও তার সাক্ষ্য গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায় এটি এড়িয়ে যান।
৬) হিসাবের চেক বই:
আপনার যে ব্যাংক হিসাব রয়েছে সে একাউন্টের চেক বইের উপরের পৃষ্ঠার ফটোকপি দিতে হবে। এক লক্ষ টাকার বেশি বিনিয়োগে আপনাকে অবশ্যই আপনার একাউন্টে টাকা জমা সাপেক্ষে চেক লিখে সঞ্চয় পত্র ক্রয় উপস্থিত হতে হবে। মোটকথা টাকার অংক লেখা ও স্বাক্ষরসহ আপনি একটি চেক ফরমের সাথে জমা দিবেন। এক্ষেত্রে যাহারা নামে চেক ইস্যু হবে তার নাম বা ঐ ঘর ফাঁকা থাকবে এবং এই চেকটি অবশ্যই এমআইসিআর যুক্ত চেক হতে হবে।
৭) পেনশনার হলে মঞ্জুরীপত্র/আনুতোষিক কপি/ পিপিও/ পিএসসি ফরম/ ই পিপিও কপি:
পেনশনার সঞ্চয়পত্রের ক্রয়ে আপনি মুনাফার হার আরও বেশি পাবেন। তাছাড়া পেনশনের সঞ্চয়পত্রের কোন প্রকার আয়কর কর্তন হয় না সর্বোচ্চ ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্তহ। সেক্ষেত্রে পেনশনের বা তার পরিবার সে অর্থ দিয়ে যদি পেনশনার সঞ্চয়পত্র ক্রয় করে থাকেন। তবে সেই জন্য উপযুক্ত প্রমাণ দাখিল সাপেক্ষে পেনশনার সঞ্চয়পত্র ক্রয় করতে পারবেন।
সঞ্চয়পত্রের মুনাফা কোথায় গিয়ে জমা হবে?
বর্তমান সময়ে কেনা সঞ্চয়পত্রের মুনাফার নিতে গেলে আর আপনাকে লাইনে দাঁড়াতে হবে না। এক্ষেত্রে আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নাম্বার দিয়ে দিবেন ফরম পূরণের সময় সেই ক্ষেত্রে আপনার টাকাটি আপনার ব্যাংক একাউন্টে ঢুকে যাবে।