ব্র্যাক এনজিও প্রবাসী লোন
অনেক ভাইয়েরা আছেন যারা বিদেশে কাজ করার জন্য ভিসা পেয়েছেন। কিন্তু ভিসা সংশ্লিষ্ট খরচ, প্লেনের টিকিটের খরচ এবং অন্যান্য খরচের জন্য যে টাকা প্রয়োজন তা তাদের কাছে নেই। আবার প্রবাসী অনেকে আছেন যারা দেশে কিছু একটা করতে চাচ্ছেন। এজন্য তাদের কিছু টাকার প্রয়োজন। এসব কাজের জন্য ব্র্যাক এনজিও প্রবাসী লোন দেয়া হচ্ছে। ব্র্যাক এনজিও হতে কিভাবে আপনি সহজেই লোন নিতে পারবেন তা জানতে আজকের লেখাটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে দেখুন পড়ুন।
ব্র্যাক এনজিও থেকে এই লোন কারো নিতে পারবেন?
নতুন এবং পুরাতন দুই প্রবাসী এই লোন নিতে পারবেন। নতুন যারা বিদেশে যাওয়ার জন্য ভিসা পেয়েছেন তারা ভিসার কাগজ দেখিয়ে ব্রাক এনজিও থেকে লোন নিতে পারবেন। আবার যারা পুরাতন প্রবাসী দেশে কিছু একটা করতে চাচ্ছেন। যেমন: একটা বাড়ি কিনতে যাচ্ছেন বা একটা জমি কিনতে চাচ্ছেন । তারা খুবই সহজে ব্রাক এনজিও হতে লোন নিতে পারবেন। এই লোন নেওয়ার জন্য আবেদনকারীর বয়স হতে হবে ১৮ থেকে ৬৪ বছর। সাধারণত মিডল ইস্টে বিভিন্ন দেশে যাওয়ার জন্য ব্রাক এনজিও হতে এই লোন দেওয়া হয়। আমি কয়েকটি দেশের নাম উল্লেখ করছি যেমন- সৌদি আরব, কাতার, কুয়েত, দুবাই ,ওমান ,লেবানন ইত্যাদি।
ব্র্যাক এনজিও প্রবাসী লোন |
ব্রাক এনজিও প্রবাসী লোনের পরিমাণ:
ব্রাক এনজিও হতে যে প্রবাসী ঋণ দেয়া হয় তা নতুন প্রবাসীদের দেওয়া হয় ১ লক্ষ টাকা থেকে শুরু করে ৫ লক্ষ টাকা। অর্থাৎ নতুন প্রবাসীরা এক লক্ষ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ পাঁচ লক্ষ টাকা লোন পাবেন। আর পুরাতন প্রবাসীরা পাবেন ১ লক্ষ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত।
ব্রাক এনজিও প্রবাসী লোনের মেয়াদ:
এই মেয়াদ হচ্ছে এক থেকে দেড় বছর। অর্থাৎ আপনি যদি প্রতিমাসে একটি কিস্তি হিসাব করা হয়। তাহলে আপনি ১২টি কিস্তি থেকে শুরু করে ১৮ কিস্তিতে এই লোনটি পরিশোধ করতে পারবেন। ব্রাক এনজিও হতে যে প্রবাসী ঋণ দেয়া হয়। সে ঋনটি নেয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের কাগজপত্র দিতে হয়।
আবেদনকারী যে সকল কাগজপত্র লাগবে -
- আবেদনকারীর পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
- আবেদনকারীর ভোটার আইডি কার্ড অথবা পাসপোর্ট বা তার জন্ম নিবন্ধনের কপি।
ব্রাক এনজিও হতে লোন নেওয়ার জন্য দুজন জামিনদারের প্রয়োজন হয়। একজন জামিনদার দিতে হবে তার পরিবারের যে কেউ। যেমন- তার বাবা/মা/ভাই/বোন/স্বামী অথবা স্ত্রী এবং জামিনদারের যে সকল কাগজপত্র প্রয়োজন হয় তা হল:
- জামিনদারের পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
- জামিনদারের ভোটার আইডি কার্ড অথবা পাসপোর্ট বা তার জন্ম নিবন্ধনের কপি।
দুজন আরেকজন হতে হবে তার পরিবারের বাইরে অন্য কেউ। এক্ষেত্রে দ্বিতীয় জামিনদারের লাগবে:
- পাসপোর্ট সাইজের একটি ছবি ।
- ভোটার আইডি কার্ড অথবা পাসপোর্ট অথবা তার জন্ম নিবন্ধনের একটি ফটোকপি।
নতুন প্রবাসীর ক্ষেত্রে ব্রাক এনজিও হতে লোন নেয়ার ক্ষেত্রে আরো লাগবে:
- ভিসার ফটোকপি
- ওয়ার্ক পারমিটের ফটোকপি।
পুরাতন প্রবাসী যদি লোন নিতে চাই সেক্ষেত্রে আরও যে সকল কাগজপত্র লাগবে তাহলো:
- তার রেমিটেন্সের কাগজ । অর্থাৎ প্রবাসী বিদেশ থেকে রেমিটেন্সের টাকা পাঠায় সেই রেমিটেন্সের কাগজ।
- আর প্রবাসী যদি বিদেশ থেকে তার ব্যাংক একাউন্টের টাকা পাঠায় সে ক্ষেত্রে ব্যাংক একাউন্টে একটি স্টেটমেন্ট।
- তার পাসপোর্টের কপি এবং তার ভিসার ফটোকপি এবং আকামার ফটোকপি এবং ছুটির কাগজ।
২ লাখ টাকা পর্যন্ত এ লোন নেয়ার ক্ষেত্রে কোন দলিলের প্রয়োজন হবে না। তবে দুই লক্ষ টাকার উপরে লোন নেয়ার ক্ষেত্রে মূল দলিল জমা দিতে হবে। সেক্ষেত্রে, যেসব কাগজপত্র লাগবে তাহলো-
- মূল দলিল।
- নামজারির কাগজ
- পরচা এবং খাজনা রশিদ।
- আর যদি মূল দলিল না থাকে। সেক্ষেত্রে লাগবে মূল দলিল উত্তোলনের রশিদ।
আরও পড়ুন - ইসলামী ব্যাংক এফডিআর
আমি আগেই বলেছি এই ঋণের মেয়াদ এক থেকে দেড় বছর। সেক্ষেত্রে কেউ যদি এক বছরের জন্য এই লোন নিয়ে থাকে তাহলে ১২ টা কিস্তি দিতে হবে। আর দেড় বছরের জন্য লোন নেয় তাহলে তাকে ১৮ কিস্তি দিতে হবে। কেউ যদি ১ লক্ষ টাকায় এক বছরের লোন নেয়। তাহলে প্রতি মাসে কিস্তি দিতে হবে ৯৫০০ টাকা। আর যদি কেউ এক লক্ষ টাকা দেড় বছর মেয়াদে লোন নেয় তাহলে তাকে কিস্তি দিতে হবে ৬৮০০ টাকা।
এছাড়া এই লোন নেওয়ার জন্য আবেদনকারীর একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে। ব্যাংক একাউন্টটি যেকোন ব্যাংকে হলেই হবে এবং এই ব্যাংক একাউন্টের একটি চেক বইয়ের পাতা লোন নেয়ার সময় জমা দিতে হবে ।