সকালে খালি পেটে লেবু জল খেলে কি হয় ?

লেবু জল খাওয়ার উপকারিতা

আজ আমি আপনাদের সঙ্গে যে পানীয়টির বিষয় নিয়ে আলোচনা করব,সেটি বানাতে আপনার প্রয়োজন পড়বে শুধু এক গ্লাস জল এবং একটি অর্ধেক পাতিলেবু। হ্যাঁ, বন্ধুরা আজ আমি আপনাদের জানাবো যে মাত্র এক টাকা থেকে দুই টাকা দামের এই ফলটি আপনার ঠিক কতটা উপকারে আসতে পারে এবং ঠিক কেন প্রতিদিন সকালে অন্তত এক গ্লাস লেবু জল আমাদের সকলেরই খাওয়া উচিত। আসলেই শরীরের জন্য ক্ষতিকর নয় বরং উপকার বই আনতে পারে এমন একটি পানির অভ্যেস আমরা চাইলে করতে পারি। যদি প্রতিদিন সকালে আপনি এক গ্লাস লেবু জল পান করেন তাহলে আপনার শরীর পায় কিছু আশ্চর্য জাদুকরী উপকার। কেন এমন কথা বলছি তাই ভাবছে নিশ্চয়ই। আসলে একাধিক স্টাডিতে দেখা গেছে নিয়মিত লেবু জল খাওয়া শুরু করলে ছোট বড় কোনো রোগী ধারে কাছে ঘেষতে পারে না। এবং সেই সঙ্গে মিলে আরো অনেক বহুপ্রকার। বন্ধুরা  লেখাটি শুরু থেকে শেষ অব্দি পড়ুন । এই লেখাটিতে লেবু জল পানের উপকারিতা ছাড়াও আমি জানিয়েছি যে ঠিক কিভাবে আপনি লেবু জল তৈরি করবেন এবং কোন নিয়ম মেনে এটি পান করলে আপনি সর্বাধিক ভালো ফল পাবেন। চলুন তাহলে আর কথা না বাড়িয়ে জেনে নিন লেবু জল পানের উপকারিতা বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে ।


লেবুর উপকারিতা,লেবু পানি খাওয়ার নিয়ম,লেবু জল,লেবু জল খাওয়ার উপকারিতা,লেবু পানি খাওয়ার উপকারিতা,খালি পেটে লেবু পানি খাওয়ার উপকারিতা,লেবু জল খাওয়ার নিয়ম,লেবু পানি খাওয়ার উপকারিতা,লেবু জলের উপকারিতা,লেবু গরম পানির উপকারিতা,সকালে খালি পেটে লেবুর রস খাওয়ার উপকারিতা,লেবুপানির উপকারিতা,খালি পেটে লেবু পানি খাওয়ার উপকারিতা,লেবুর রস খাওয়ার উপকারিতা,প্রতিদিন লেবু জল খাওয়ার উপকারিতা কি,লেবু পানি,লেবু জল খেলে কি হয়,লেবু,লেবু খাওয়ার উপকারিতা
লেবু জল খাওয়ার উপকারিতা


লেবু জল খেলে লিভারের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে

একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত লেবু জল খেলে লিভারের উপস্থিত ক্ষতিকারক টক্সিন উপাদান এড়িয়ে যাবার সুযোগ পায়। ফলে লিভারের কোন ধরনের ক্ষতি হবার আশঙ্কা যায় অনেকটাই কমে।


হাই প্রেসার বা হাইপারটেনশন নিয়ন্ত্রণের রাখতে লেবুর রস বিশেষভাবে কার্যকরী 

একটি পাতিলেবু ১০০ মিলিলিটার গরম জলে মিক্স করে সকালে খালি পেটে খেলে হাই প্রেসার বা হাইপারটেনশন আক্রান্ত রোগীরা উপকার পাবেন।


কনস্টিপেশন বা কোষ্ঠবদ্ধতা

১০ গ্রাম পাতি লেবুর রসের সঙ্গে ২৫০ গ্রাম জল মিশিয়ে সকালে খালি পেটে খেলে আপনার কোষ্ঠবদ্ধতার কোন সমস্যা থাকলে  তা  থেকে মুক্তি পাবেন ।

 

 লেবু জল কিডনি পাথর প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে

লেবুর রস থাকে সাইট্রিক এসিড। আর মনে করা হয় যে এই সাইট্রিক অ্যাসিড ক্যালসিয়াম অক্সালেট স্টোন বিকাশের সম্ভাবনা অনেকটাই কমিয়ে দেয় ।বিভিন্ন ক্লিনিক্যাল গবেষণাতে দেখা গেছে লেবুর রস থেকে নির্গত সাইট্রিক এসিড ইউরিন  এসিড  বা প্রস্রাবের অম্লতা কমাতে সাহায্য করে ।ফলে কিডনিতে পাথর সংক্রমণের সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যায়।


লেবু জল নিয়মিত পান করলে শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যা কমে

যারা অ্যাজমা বা কোন ধরনের রেস্পিরেটরি প্রবলেম এ ভুগছেন তারা যত দ্রুত সম্ভব আপনার রোজকার ডায়েটে লেবুর জলকে অন্তর্ভুক্ত করুন। দেখবেন কেমন দ্রুত ফল পান। শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত একাধিক জটিলতাকে কমিয়ে ফেলতে দারুণভাবে কাজে আসে ।


লেবু জল পুষ্টির ঘাটতি দূর করতে সাহায্য করে

লেবুতে রয়েছে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এছাড়াও লেবু জলে থাকে পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ,ম্যাগনেসিয়াম। এই খনিজ উপাদান গুলি আমাদের শরীরের পুষ্টির ঘাটতি দূর করে শরীরকে মজবুত রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।


লেবু জল শরীরের পিএইচ লেভেলকে ঠিক রাখে

ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে লেবু জল খেলে দেহের   পিএইচ লেভেলের ভারসাম্য ঠিক থাকে। ফলে ভেতর এবং বাইরে থেকে শরীর এতটাই চাঙ্গা হয়ে উঠেছে দেহের কর্মক্ষমতা দ্রুত বৃদ্ধি পায়।


টিবি রোগের চিকিৎসায় কাজে আসে লেবু জল

সম্প্রতি প্রকাশিত গবেষণা পত্রে এমনটাই দাবি করা হয়েছে যে টিবি রোগের চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত ওষুধের সঙ্গে লেবুর মত ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল খাওয়া যায় তাহলে ওষুধের কর্মক্ষমতা মারাত্মক পরিমাণের বৃদ্ধি পায় ।ফলে রোগের প্রকোপ কমাতে সময় লাগেনা।


লেবু জল খেলে পেটের স্বাস্থ্যের প্রকোপ কমে

যারা বদহজম বারংবার পেট খারাপ সহ নানাবিদ পেটের রোগে ভুগে থাকেন তারা প্রতিদিন সকালে গরম জলে লেবুর রস মিশিয়ে খাওয়া শুরু করুন ।এমনটা করলে স্টমাক এসিডের ক্ষরণ ঠিক মত হতে শুরু করবে। ফলে রোগের প্রকোপ কমবে সেইসঙ্গে শরীরে জমে থাকা ক্ষতিকর উপাদান বা টক্সিন বেরিয়ে যাবে।


ওজন হ্রাস পায়

নিয়মিত লেবু জল খেলে শরীরে  জমে থাকা অতিরিক্ত মেদ ঝরে যেতে একেবারেই সময় লাগে না। কারণ  লেবুতে উপস্থিত  পেকটিন নামক একটি উপাদান শরীরে প্রবেশ করার পর অনেকক্ষণ পর্যন্ত পেট ভরিয়ে রাখে। ফলে বারেবারে খাবার ইচ্ছে চলে যায় ।আর যেমনটা আপনাদের প্রত্যেকেরই জানা আছে যে কম মাত্রায় খাবার খেলে স্বাভাবিকভাবেই শরীরে কম মাত্রায় ক্যালরির প্রবেশ ঘটে। ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগই পায় না ।


লেবু জল এনার্জীর ঘাটতি দূর করে

ঘুম থেকে উঠে চা বা কফি না খেয়ে প্রতিদিন এক গ্লাস করে লেবু জল খাওয়ার চেষ্টা করুন। এমনটা করলে দেখবেন শরীর চনমনে হয়ে উঠতে সময় লাগবে না। আসলে লেবুতে থাকা একাধিক উপকারী উপাদান শরীরে প্রবেশ করার পর এমন খেল দেখানো শুরু করে দেয় যে সকাল-সকাল শরীর এবং মস্তিষ্ক চাঙ্গা হয়ে ওঠে একেবারেই সময় লাগে না।


সংক্রমণে প্রকোপ কমে 

লেবুতে আছে প্রচুর পরিমাণে এন্টিব্যাক্টেরিয়াল প্রপার্টিস  তাই   লেবুর জল যেকোনো ধরনের সংক্রমণ বিশেষত গলার সংক্রমণ কমাতে দারুন ভাবে সাহায্য করে থাকে। এক্ষেত্রে লেবু জল দিয়ে গার্গল করলে উপকার পাওয়া যায়।


মুখগহ্বরের নানা রোগ সেরে যায় লেবু জল পান করলে

আপনার কি মুখ থেকে খুব দুর্গন্ধ বের হয় ।বহু কিছু করেও কোনো সুরাহা মিলছে না ।তাহলে আজ থেকে লেবু জল খাওয়া শুরু করুন ।দেখবেন মুখের দুর্গন্ধ একেবারে কমে যাবে ।শুধু তাই নয় মাড়ি থেকে রক্তপাত এবং দাঁতের যন্ত্রণা মতো সমস্যা হলেও এই ঘরোয়া পদ্ধতি ভীষণ ভালো কাজে আসে এবং দ্রুত উপকার পাওয়া যায় ।


আরও পড়ুন - চিয়া সিড এর উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম


ত্বকের সৌন্দর্য বাড়ায় লেবু জল

হাজারো বিউটি প্রোডাক্ট যা করে উঠতে পারেনি তা লেবুর জল নিমেষে করে ফেলতে পারে। আসলেই পানীয়তে উপস্থিত বেশ কিছু উপাদান ত্বকের হারিয়ে যাওয়া  ঊজ্জ্বল ফিরিয়ে আনে। সেই সঙ্গে ত্বকের বয়স কমানোর পাশাপাশি ব্ল্যাকহেডস এবং বলিরেখা কমে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রসঙ্গত গরমকালে তো ঠান্ডা এবং ঘামমুক্ত রাখতে লেবু জল দিয়ে বারে বারে মুখটা ধুতে পারেন ।দেখবেন উপকার পাবেন।


স্ট্রেস এবং অবসাদের থেকে দ্রুত মুক্তি মেলে  লেবু জল খেলে

একাধিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে নিয়মিত লেবু জল খেলে স্ট্রেস একেবারে কমে যায়। সেই সঙ্গে অবসাদের প্রকোপ কমে। আসলে লেবু জলে উপস্থিত বেশ কিছু উপাদান শরীরে প্রবেশ করামাত্র বিশেষ কিছু হরমোনের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয়। যে কারণে এমন সব  সমস্যা নিমেষে কমে যেতে শুরু করে।


লেবু জল রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়

বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে প্রতিদিন লেবু জল খাওয়া শুরু করলে আমাদের শরীরে ভিটামিন সি  এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে ।  যার প্রভাবে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষক্ষমতা এতমাত্রয় শক্তিশালী হয়ে ওঠে এর ছোট বড় কোন রোগে ধারে কাছে ঘেঁষতে করে না ।


কিভাবে আপনি লেবু জল বা  লেবু পানি পানি তৈরি করবেন

একটি গ্লাসে ২৫০ লিটার জল ঢালুন। যদি আপনার কোন হজমের সমস্যা থেকে থাকে তাহলে হালকা উষ্ণ জল ব্যবহার করবেন। একটি পাতিলেবু অর্ধেক কেটে তার সম্পূর্ণ রস ভালোভাবে জলের সঙ্গে মিশিয়ে নিন। প্রয়োজনবোধে এক চিমটি বিট নুন জলের মধ্যে মিশিয়ে নিতে পারেন। পানীয়টি  তৈরি হয়ে গেলে পান করুন।


লেবু  জল  বা  লেবু পানি খাওয়ার নিয়ম

সর্বাধিক ভালো ফল পাওয়ার জন্য প্রতিদিন সকালে উঠে সম্পূর্ণ খালি পেটে আপনাকে লেবু জল পান করতে হবে। লেবু জল খাওয়ার দু'ঘণ্টার মধ্যে কোন পানীয় বা খাবার খাওয়া যাবে না।আপনার প্রয়োজন এবং সুবিধামতো আপনি ইচ্ছে করলে এই পানীয়টি  বিকেলবেলার দিকে  আরবার পান করতে পারেন ।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন