ক্যারিয়ার হিসেবে সাইবার সিকিউরিটি কেমন ?

সাইবার সিকিউরিটি ক্যারিয়ার

বিশ্বে প্রতিনিয়ত যেমন নতুন নতুন প্রযুক্তির আবির্ভাব ঘটেছে  সেই সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে প্রতিনিয়ত ভার্চুয়াল সাইবার আক্রমণ বলা হয়ে থাকে একুশ শতকের সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হচ্ছে তথ্য যে যত বেশি তথ্যের মালিক সে ততই ক্ষমতাবান। আর সে তথ্য কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছে পৃথিবীর অন্যতম বৃহৎ ইন্ডাস্ট্রি সাইবার সিকিউরিটি যেহেতু প্রযুক্তি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সাথে আরো বেশি ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে উঠেছে তাই এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই , যে দক্ষ সাইবার সিকিউরিটি প্রফেশনালদের প্রয়োজন দিন দিন বেড়েই চলেছে। তারই ধারাবাহিকতায় আমাদের আজকের লেখাতে আমরা আলোচনা করতে চলেছি সাইবার সিকিউরিটি ক্যারিয়ার নিয়ে। যেখানে আপনারা জানতে পারবেন সাইবার সিকিউরিটি সেক্টরে কি কি ক্যারিয়ার অপশন আছে তাদের ভবিষ্যৎ কেমন,বেতন কেমন এবং কি কি  স্কিল লাগবে সাইবার সিকিউরিটি সেক্টরে  ক্যারিয়ার গড়তে।


বর্তমান সময়ে মানুষ যে পরিমাণ সাইবার চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। সেই তুলনায় দক্ষ সাইবার সিকিউরিটি প্রফেশনালদের যথেষ্ট অভাব রয়েছে। কিন্তু তারপরেও সঠিক ক্যারিয়ার গাইডলাইনের অভাবে  এই সেক্টরটাতে আমাদের বাংলাদেশীদের আনাগোনা তুলনামূলক অনেক কম তাই আমরা আজকে ঠিক এই বিষয়টিতে আপনাদেরকে সাহায্য করার চেষ্টা করব। সাইবার সিকিউরিটি সেক্টরে ক্যারিয়ার গড়ার ক্ষেত্রে কয়েকটি পূর্ব শর্ত রয়েছে ।তার মধ্যে সবচেয়ে বেসিক শর্ত হচ্ছে সাইবার সিকিউরিটি বিষয়ক কোন একটি সাবজেক্টে অনার্স করা। তবে আপনার যদি এই সাবজেক্টে অনার্স করা না থাকে তাহলে আপনি কোন একটি ভাল প্রতিষ্ঠান থেকে সাইবার সিকিউরিটি বিষয়ে কোন একটি দীর্ঘমেয়াদী কোর্স করে আপনার পথচলা শুরু করতে পারেন।


সাইবার সিকিউরিটি,সাইবার সিকিউরিটি কি,সাইবার সিকিউরিটি কোর্স,সাইবার সিকিউরিটি স্পেশালিস্ট এর ফিউচার কি?,কীভাবে সাইবার সিকিউরিটিতে ক্যারিয়ার শুরু করবেন,সাইবার সিকিউরিটি অ্যানালিস্ট,সাইবার সিকিউরিটি অ্যানালিস্ট কি,সাইবার সিকিউরিটি cia triad,সাইবার সিকিউরিটি প্রফেশনাল,কিভাবে সাইবার সিকিউরিটি অ্যানালিস্ট হওয়া যায়,সাইবার সিকিউরিটি প্রফেশনাল হতে চান,সিকিউরিটি,সাইবার,সাইবার ৭১,সাইবার হামলা,ক্যারিয়ার,ক্যারিয়ার ১০১,সিকিউরিটি প্রফেশনাল,সাইবার সুরক্ষা
সাইবার সিকিউরিটি ক্যারিয়ার


বর্তমানে এন্ট্রি লেভেল থেকে এক্সিকিউটিভ ম্যানেজমেন্ট পর্যন্ত প্রায় সকল পদেই এই সেক্টরে ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ রয়েছে তবে সবচেয়ে ভালো হয় যদি আপনি   এন্ট্রি লেভেল দিয়ে শুরু করেন তারপর আপনার যোগ্যতা এবং অভিজ্ঞতা অনুযায়ী পরবর্তী লেভেলে মুভ করেন। তাহলে চলুন দেখা যাক বর্তমান সময়ের সেরা পাঁচটি সাইবার সিকিউরিটি চাকরি পদ এবং তাদের বেতন সম্পর্কে


নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ার

আমাদের  লিস্টে প্রথম চাকরি হচ্ছে নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ার। নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়াররা মূলত একটি প্রতিষ্ঠান নেটওয়ার্কিং   ইকুয়েপমেন্ট   কনফিগারেশন বিভিন্ন ডিভাইস সিস্টেম ইনস্টলেশন এবং সিস্টেমের স্ট্যান্ডার্ড ডকুমেন্টিং তৈরি করে থাকে   সহজ বাংলায় একটি প্রতিষ্ঠান কম্পিউটার গুলোর মধ্যে সংযোগ স্থাপন এবং সেগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করে থাকে। এই entry-level সাইবার সিকিউরিটি পদটি আপনাকে একজন দক্ষ ইথিক্যাল হ্যাকার হওয়ার পথে অনেকাংশেই সাহায্য করবে বাংলাদেশ একজন দক্ষ নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ার প্রতি বছর গড়ে থেকে  লক্ষ টাকা উপার্জন করে থাকে যা উন্নত বিশ্বে প্রায় দ্বিগুণেরও বেশি


আরও পড়ুন - Top 10 Private University for CSE in Bangladesh


ইনফর্মেশন সিকিউরিটি এনালিস্ট

আমাদের  লিস্টে  দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ইনফর্মেশন সিকিউরিটি এনালিস্ট। একজন ইনফর্মেশন সিকিউরিটি এনালিস্ট এর প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা এবং প্রতিনিয়ত তথ্যে নজরদারি করা ইনফরমেশন সিকিউরিটি এনালিস্ট বিভিন্ন সাইবার আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য বিভিন্ন ধরনের পরিকল্পনা করেন এবং প্রয়োজনে তা বাস্তবায়ন করেন। বাংলাদেশে একজন অভিজ্ঞ ইনফর্মেশন সিকিউরিটি এনালিস্ট প্রতিবছর গড়ে থেকে ১০  লক্ষ টাকা উপার্জন করে থাকে।


ইথিকাল হ্যাকার

লিস্টের  তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ইথিকাল হ্যাকার। তারা পেনিট্রেশন টেস্টার নামেও পরিচিত। তারা মূলত হ্যাকার তবে তার তাদের হ্যাকিং  স্কিলটাকে ভাল কাজে ব্যবহার করে আর কারণেই তাদেরকে ইথিকাল হ্যাকার বলা হয়। তাদের প্রধান কাজ হল কোন একটি সিস্টেমের দুর্বলতা খুঁজে বের করা এবং তাদের চিহ্নিত করে সমাধান করা ।বাংলাদেশের সাধারণত একজন সার্টিফাইড ইথিকাল হ্যাকারের বাৎসরিক বেতন গড়ে   থেকে ১০ লক্ষ টাকা হয়ে থাকে।


আরও পড়ুন -  ইথিক্যাল হ্যাকিং কি ? কিভাবে ইথিক্যাল হ্যাকিং শিখব ?


সিকিউরিটি আর্কিটেক্ট

লিস্টের চতুর্থ যে চাকরি পদটি নিয়ে আমরা আলোচনা করতে যাচ্ছি তা হচ্ছে সিকিউরিটি আর্কিটেক্ট। সিকিউরিটি আর্কিটেক্টসরা  মূলত একটি প্রতিষ্ঠান সিকিউরিটি ইলিমেন্টস নিয়ে গবেষণা করে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের সিকিউরিটি স্ট্রাকচার ডিজাইন করে। সিস্টেমের কোন অংশে  নেটওয়ার্কিং ইকুয়েপমেন্ট যেমন সুইচ, রাউটার,ভিপিএন এবং ফায়ারওয়াল ইনস্টলেশন অথবা আপডেট করার প্রয়োজন হলে তা একজন সিকিউরিটি আর্কিটেক্ট অ্যাপ্রুভ করেন। বাংলাদেশে একজন দক্ষ অভিজ্ঞ সিকিউরিটি আর্কিটেক্ট বছরে গড়ে   থেকে ১২ লক্ষ টাকা উপার্জন করে থাকেন


Read more - Software development company in Bangladesh 


সিআইএসও 

লিস্টের সর্বশেষ এবং পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে  চিফ ইনফরমেশন সিকিউরিটি অফিসার বা সিআইএসও ।তারা মূলত একটি প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ ঊর্ধ্বতন সিকিউরিটি কর্মকর্তা ।তারা প্রতিষ্ঠানের সকল তথ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করে এবং প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ধরনের সিকিউরিটি সিস্টেম ডেভলপ করা ইমপ্লিমেন্ট করা এবং টেস্ট করার সাথে জড়িত থাকে। একজন চিফ ইনফরমেশন সিকিউরিটি অফিসারের দায়িত্ব এখানেই শেষ নয় ।তারা প্রতিষ্ঠান স্টেকহোল্ডারদের সাথে সিকিউরিটি বিষয় ইন্টারেক্ট করে। বাংলাদেশের একজন চিফ ইনফর্মেশন সিকিউরিটি অফিসার এর বাৎসরিক গড় বেতন সাধারণত ১২  থেকে ১৫ লক্ষ টাকা হয়ে থাকে।  তবে এই পর্যন্ত আসতে আসতে অনেক সিকিউরিটি স্পেশালিটি উন্নত বিশ্বের ভালো ভালো প্রতিষ্ঠান অফার পেয়ে সেখানে চলে যান এবং সেখানে তাদের বেতন পায় দ্বিগুণেরও বেশি হয়ে থাকে। সব মিলিয়ে বর্তমান অনলাইননির্ভর পৃথিবীতে সাইবার সিকিউরিটি সেক্টরে ক্যারিয়ার গড়ার এখনই উপযুক্ত সময়।  ২০২২ সালের সবচেয়ে ডিমান্ডেবল যে কয়টা ক্যারিয়ার সেক্টর রয়েছে তার মধ্যে সাইবার সিকিউরিটি অন্যতম এবং বলা হয়ে থাকে পরবর্তী বছরগুলোতে এর ডিমান্ড আরো বাড়বে। সুতরাং আপনি যদি এই সেক্টরে ক্যারিয়ার গড়তে চান তাহলে আপনার উচিত হবে এখন থেকেই পথ চলা শুরু করা।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন