শিম পাতার উপকারিতা
শরীরে এলার্জি
,চুলকানি, দাদ,
খুজলি ,খোসপাচড়া
একটি মারাত্মক
ধরনের ব্যাধি।
অনেকে অনেক
ধরনের কারণে
এই সমস্যায়
ভুগে থাকেন
। সব
সময় এই
রোগগুলো যে
একটি নির্দিষ্ট
কারণে হবে
। ব্যাপারটা
এমন নয়
। একেক
ধরনের চুলকানির
পেছনে একেক
ধরনের জীবাণু
দায়ী। সমস্যাটা
তখন হয়ে
দাঁড়ায় অনেক
ধরনের ঔষধ
সেবন করার
পরেও দীর্ঘদিন
ধরে চুলকানি
বা এলার্জি
, দাদ, খাঁজ
আপনার শরীর
থেকে যায়
না। আর
সবচেয়ে বড়
সমস্যার ব্যাপার
হচ্ছে এটি
ছড়াতে থাকে
। যে
জায়গায় হয়
তার থেকে
ছড়াতে ছড়াতে
আরো বিভিন্ন
জায়গায় হতে
থাকে। আপনার
স্ক্রীন অসুন্দর
করে দেয়।
লোকের সামনে
আপনাকে লজ্জা
মুখে পড়তে
হয় ।
আর অনেক
অনেক সময়
তো এমন
জায়গায় হয়
যার কথা
আপনি কাউকে
বলতেও পারে
না ।
আবার ডক্টরের
কাছে ও
যেতে চান
না ।
আপনার শরীরের
যেকোনো ধরনের
চুলকানি হয়ে
থেকে থাকে
আজকের লেখাটি
কষ্ট করে
কন্টিনিউ করবেন
। আজকে
এমন একটি
পাতার গোপন
ব্যবহার সম্পর্কে
আপনাদেরকে জানাবো
যে পাতা
দিয়ে আপনার
চোখের সামনে
আছে কিন্তু
তারপরেও আপনি
নানাবিধ সমস্যায়
ভুগছেন। পাতাটি
ব্যবহার জেনে
নিলে কিন্তু
শরীরে ধরনের
সমস্যা গুলো
আর থাকতো
না। আর
এটি অন্য
কোন পাতা
নয় এটি
হচ্ছে শিম
পাতা।
শুধুমাত্র স্কিনের
রোগ এলার্জি
চুলকানি ও
চর্মরোগ ছাড়াও
শিম পাতার
আরও অনেক
ব্যবহার রয়েছে
। শিম
পাতা সঠিক
ব্যবহার সম্পর্কে
জানতে পুরো
লেখাটি পড়তে
হবে।
শিম পাতার উপকারিতা |
শিম অত্যন্ত
পুষ্টিকর একটি খাবার।
শিমের যে
পরিমাণে পুষ্টি
রয়েছে তা
খুব কম
সংখ্যক খাবারে
রয়েছে ।
শিম রান্না
করে খেলে
এটি কনস্টিপেশন
থেকে শুরু
করে হাই
ব্লাড প্রেসার
সবকিছু নিয়ন্ত্রণ
করতে পারে।
যদিও শীতকালে
সবজিটি আমরা
পাই। শিমের
পাতা পেতে
চাইলে শীতকালের
অপেক্ষা করতে
হবে না
। সারা
বছরই আপনি
পাতা পেয়ে
যাবেন । শিম গাছের
এ পাতা
ভর্তা হিসেবে
ব্যবহার করা
হয়ে থাকে।
সিমের পাতা
ভালো করে
ধুয়ে কাঁচা
পেঁয়াজ এবং
রসুন দিয়ে
ভেজে। তারপরে
এর ভর্তা
তৈরি করে
খাওয়া হয়
। এটি
কিন্তু শুধুমাত্র
এমনি এমনি
খাওয়া হয়না।
রক্ত পরিশুদ্ধ
করার জন্য
পাতার ভর্তা
পাতার রস
খুবই উপকারী।
এটি কনস্টিপেশন
থেকে শুরু
করে বিভিন্ন
ধরনের শারীরিক
রোগগুলোকে আমাদের
থেকে দূরে
রাখে। শিম
পাতার চুলকানি
সম্পর্কিত ব্যবহার
সম্পর্কে জানার
আগেই
শিমপাতা ব্যাবহার
করে অন্য
কোন কোন
রোগ থেকে
আমরা দূরে
থাকতে পারব
তা আমাদের
জেনে নেয়া
উচিত ।
রক্ত পরিশ্রুত করে
রক্ত পরিশুদ্ধ করা খুবই বেশি জরুরি । অনেকে হয়তো ভাবছেন রক্ত পরিশুদ্ধ হবে কেন? আবার রক্ত দূষিত হয় কেন? আমরা যে পরিবেশে বড় হচ্ছেই এবং যেমন ধরনের ক্ষতিকর খাবার খাচ্ছি তাতে আমাদের সকলেরই রক্ত দূষিত । কেউ বলতে পারবেনা তাদের রক্ত পরিচ্ছন্ন। তবে এক্ষেত্রে কারও কারও কম কারও বেশি। আপনি এখন ভাবতে পারেন আমার যে রক্ত দূষিত আমি কিভাবে বুঝব । আপনার রক্ত দূষিত হলে অনেক ধরনের রোগ হতে থাকবে । একটার পর একটা রোগ লেগেই থাকবে । আপনি সে সমস্ত রোগ থেকে সহজে মুক্তি পেতে পারবেন না । এছাড়াও দেখা যাবে যে আপনার ত্বক অসুন্দর হয়ে যাবে ।
মুখে ব্রণ ফুসকুড়ি বারবার করতে থাকবে। শরীরের বিভিন্ন জায়গা গুলো কোলেস্টেরলের কারণে কাল হতে থাকবে। এছাড়া আপনি কোন কাজে এনার্জি পাবেন না। আপনি ক্লান্তি দুর্বলতা এসমস্ত সমস্যায় ভুগবেন। এই সমস্ত সমস্যা থেকে যদি মুক্তি পেতে চান বিশেষ নিয়মের শিম পাতাকে সেবন করতে হবে । সেই বিশেষ নিয়মটি কি তা লেখার শেষে জানাচ্ছি। শুধুমাত্র শরীর পরিশুদ্ধকরণ করলেই চলবে না। রক্ত পরিশোধন করার পাশাপাশি শরীরের যতগুলো উপশিরা আছে । প্রত্যেকে শিরা-উপশিরা ওপেন করতে হবে এবং এর মধ্যে জমে থাকা চর্বি গুলোকে গলিয়ে বের করে দিতে হবে। আপনার অজান্তেই হাটে কোন সমস্যা থেকে থাকলে,হার্ট ব্লকেজ হয়ে থাকলে সমস্ত ক্ষেত্রে এই পাতাটি ব্যবহারের মাধ্যমে উপকার মেলা সম্ভব । এককথায় শরীরের বাজে কোলেস্টেরলকে কমিয়ে ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে শরীরের বন্ধ শিরা, উপশিরা গুলো খুলে হাটে সমস্ত চর্বিগুলোকে গলিয়ে দিতে সাহায্য করবে এই পাতাটি । কোন মাসে যদি মাত্র ৭দিন নিয়ম করে আপনি এই পাতাটি সেবন করতে পারেন । শরীরের মধ্যে সুপ্ত বিভিন্ন রোগ গুলো দূর হয়ে যাবে।
লিভারের জমে থাকা টক্সিন দূর হয়
যদি কারো লিভারের টক্সিন থেকে থাকে সে ক্ষেত্রে দেখা যায় যে তার লিভার বড় হয়ে যায় কিংবা লিভারের চর্বি হয়ে যায় ,তার হাত পা ফুলে যায় , শরীরের জ্বর আসতে থাকে,বারবার জন্ডিস হতে থাকে।একসময় হেপাটাইটিসের মত রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন তিনি । এছাড়া শিম পাতা কনস্টিপেশনের জন্য একটি আদর্শ দাওয়াই। এটি পেটটাকে পরিষ্কার করে । পেটের ভেতরে জমে থাকা দূষিত বায়ু এবং গ্যাস বের করে দেয় ।আপনার যদি অনেক দিনের শক্ত মল থাকে তা দূর করার জন্য একটি আদর্শ রেমিডি হতে পারে শিম পাতা।যদি পেটের গ্যাস ও কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করতে চান ।
গ্যাস ও কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করতে শিম পাতা
শিম পাতা একটি ডালের মধ্যে তিনটি পাতা একসাথে থাকে । এমন পাতা আপনারা নিয়ে নেবেন তিনটি। খেয়াল রাখবেন শিম গাছে অনেক ধরনের অসুখ থাকতে পারে । তাই পরিচ্ছন্নতার পাতা নিয়ে নেবেন। হেলদি পাতা কিন্তু বেশ উপকার করতে পারবেন । একটু পুরো পাতা নিতে হবে । কচি পাতা নিলে তেমন একটা কাজ করবে না । এমন তিনটি ডাল নিয়ে নেবেন । যার প্রত্যেকটি ডালে এমন তিনটি তিনটি করে পাতা থাকবে। অর্থাৎ পাতার পরিমাণ হবে নয়টি । এই পাতাগুলোকে ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে নেয়ার পরে। সামান্য পরিমাণে আদা নিয়ে নেবেন। এক ইঞ্চি পরিমাণ দিলেই যথেষ্ট তার মধ্যে এক গ্লাস পরিমান জল দিয়ে দেবেন। এটিকে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নেবেন।
আরও পড়ুন - চিয়া সিড এর উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম
এই যে মিশ্রণটি পেলেন এটিকে ছাঁকার প্রয়োজন নেই । কারণ ছাঁকলে এর মধ্যে যে খাদ্য-আঁশ গুলো আছে তা চলে যাবে। এই মিশ্রণটি সকালবেলা ঘুম থেকে ওঠার পরে খালি পেটে পান করবেন । সেদিনের পর থেকে কনস্টিপেশন কি তা আপনার ভুলে যেতে হবে । পাশাপাশি পেটে গ্যাসের সমস্যা থাকলে তাও দূর হতে থাকবে। তবে পেটে গ্যাসের সমস্যা দূর করার জন্য আপনি চাইলে এর মধ্যে সামান্য পরিমাণে বিট লবণ এবং গোলমরিচের গুড়ো ব্যবহার করতে পারেন। এতে করে পেটের গ্যাস আরো ভালো হবে দূর হবে। আর যদি আপনি শরীরের শিরা উপশিরা গুলো খুলতে চান ,হার্টের ব্লক দূর করতে চান ,রক্ত পরিশোধনের কাজে ব্যবহার করতে চান এই পাতাটিকে সে ক্ষেত্রে এমনই পাতার তিন থেকে চারটি ডাল অথবা ৯ থেকে ১২টি পাতা সংগ্রহ করে তারপরে ভাল করে ধুয়ে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করার পরেই পাতা গুলোকে ছেঁকে নিতে পারেন । স্বাদ বাড়োনোর এর মধ্যে লেবু অথবা মধুমিশ্রিত করতে পারেন। তারপরে এটিকে সকাল বেলা খালি পেটে পান করবেন এবং টানা সাতদিন পান করবেন। প্রত্যেক মাসে এভাবে শিমের পাতার রস সাত দিন ধরে পান করতে পারলে। শরীরের যাবতীয় সমস্যা গুলো সারতে মোটেও সময় লাগবে না।
চর্মরোগ থেকে মুক্তি
চর্ম রোগ অনেক কারণেই হতে পারে । কারো কারো সিজন পরিবর্তনের সময় শরীর চুলকানির সমস্যা হয় , কারো কারো অতিরিক্ত গরমে এমন চুলকানি হয় , কারো কারো আবার ঘামাচির কারণে এমন চুলকানি হয় , কারো কারো আবার দেখা যায় দাদ হচ্ছে ,সোরিয়াসিস এর মত রোগ হচ্ছে, খাঁজ-খুঁজলি হচ্ছে । শরীরের চুলকানি বিভিন্ন জায়গাতেই হয়ে থাকে । মাথার মধ্যে ,হাত ,পায়ের তালুতে, হাত-পায়ের কনুইয়ে,হাত-পায়ের ভাঁজগুলোতে ,আঙ্গুলের ফাঁকা গুলোতে, দুই উরুর মাঝখানে এমন জায়গা গুলোতে। এমন জায়গায় হয় যাতে আপনি লজ্জায় কাউকে বলতেও পারেন না । এই সমস্ত সমস্যাগুলোকে দূর করার জন্য আপনি ভরসা করতে পারেন শিম পাতার ওপরে । বিভিন্ন রোগের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ভাবে ব্যবহার করার নিয়ম রয়েছে । প্রথমে বলছি দাদের ক্ষেত্রে কিভাবে এটাকে ব্যবহার করবেন ।
যদি আপনার শরীরের দাগ হয়ে থাকে তাহলে গোল গোল আকৃতির এক ধরনের ঘা হবে । ঘায়ের চারপাশের অংশগুলো ফুলে উপরের দিকে উঠে আসবে এবং লাল হয়ে থাকবে এবং মাঝখানে ছোট ছোট ফুসকুড়ি মত হবে । যেখানে একবার দাঁত হয় এই দাদ বড় হতে থাকে । আবার আশেপাশেও আর তিন চারটি দাদ হয়। এটিতে প্রচুর পরিমাণে চুলকানি হয় । এ ধরনের দাদের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য শিম পাতা পরিষ্কার করে নিয়ে বেটে নিতে হবে। এর জন্য আপনি দু থেকে তিনটি ডাল নিলেই যথেষ্ট । অর্থাৎ দুই থেকে তিনটি ডালে নাটি পরিমাণ পাতা থাকবে। শিম পাতাকে ভালো বেটে নেয়ার পরে। এর মধ্যে সামান্য পরিমাণে লবণ মিশ্রিত করে নিতে হবে। কাঁচা লবণ । তারপর পেস্টটি আপনা দাদের জায়গায় লাগাতে হবে । প্রথম যখন লাগাতে শুরু করবেন তখন টানা সাতদিন পর্যন্ত লাগিয়ে যাবেন একদিনও না করে । এতে করে কিন্তু পুরনো দাদ সেরে যাওয়ার কথা। তার পরেও যদি ভালো না হয় সে ক্ষেত্রে আরো দু'একদিন বাড়াতে পারেন। তবে এর মধ্যে আপনার দাঁদ পুরোপুরিভাবে ভালো হয়ে যাবে এবং স্কিন রোগ থেকে আপনি মুক্তি পাবেন।
আরও পড়ুন - লেবু খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
বিভিন্ন ধরনের চর্মরোগে শিম পাতা ব্যবহার
যেকোনো ধরনের চুলকানিতে এই পাতাটি ব্যবহার করার পুর্বে আগে আপনার স্থানটি ভালো করে কুসুম গরম জল দিয়ে ধুয়ে ফেলবেন । জলে সামান্য নুন মিশিয়ে নেবেন। না নুন কিন্তু এক ধরনের অ্যান্টিসেপটিক যা আপনার ত্বক থেকে ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসের সংক্রমণ কে ধরে রাখতে সাহায্য করে। চর্ম রোগ ছাড়াও আপনার যদি কোন জায়গায় ঘা হয়ে গিয়ে থাকে এবং সেখান দিয়ে পুঁজ পড়তে থাকে সে ক্ষেত্রে আপনি এই রেমিডিটি ব্যবহার করতে পারেন । শিম পাতা যখন বাইবেল তখন এর মধ্যে এক্সট্রা কোন জল দেবেন না । কারণ এর মধ্যে থেকে আপনি অনেক বেশি জল পেয়ে যাবেন । তিনটি ডালে শিম পাতা নিয়ে নেবেন তবে আক্রান্ত স্থান অনেক বেশি হলে আপনি পরিমাণ বাড়িয়ে নিতে পারেন ।
এবারে ২ ইঞ্চি পরিমাণ কাঁচা হলুদ নিয়ে নেবেন। যে কাঁচা হলুদ আপনার শরীরের ইনফেকশনকে দূর করতে খুবই ভালো সাহায্য করবে। সবগুলো উপকরণ ভালোভাবে বেটে নিতে হবে। বেটে নেয়ার পর আক্রান্ত স্থানে এটিকে প্রলেপ লাগিয়ে রাখতে হবে । প্রথমে যখন লাগিয়ে রাখবেন তখন হালকা কুট কুট করতে পারে। কিছুক্ষণের মধ্যে এই কুট কুট ভাল হয়ে যাবে। তারপরে আধাঘণ্টা থেকে এক ঘন্টার মত রেখে কুসুম গরম জল দিয়ে আবার আক্রান্ত স্থানে জোর করে পাতলা সুতি কাপড় দিয়ে মুছে দেবেন । দাদের ক্ষেত্রেও এমন ৩০ মিনিট থেকে ১ ঘন্টা পর্যন্ত রাখতে হবে। এবারে যদি আপনি ভালভাবে এ জায়গাটি ধৌত করে নেন। তাহলে দেখতে পাবেন চুলকানি ,খুঁজলি ,এলার্জি সমস্যা সব কিছু খুব দ্রুত দূর হয়ে যাচ্ছে। মাথায় ঘা হলে মাথা ব্যবহার করতে পারেন । আবার হাত পায়ের আঙুলের ফাঁকে হলে সেখানে ব্যবহার করতে পারেন । এক কথায় যে জায়গাতে ঘা হয়েছে ,এলার্জি ,খোস- পাঁচড়া চুলকানির রয়েছে সমস্স্ত জায়গাতে এটাকে ব্যবহার করতে পারবেন কারণ এটি প্রাকৃতিক এবং সম্পূর্ণ নিরাপদ।