ক্লাউড কম্পিউটিং কী ? ক্লাউড কম্পিউটিং কিভাবে কাজ করে

ক্লাউড কমপিউটিং বা ক্লাউড স্টোরেজ 


ক্লাউড কম্পিউটিং এর ধারণা কোথা থেকে এসেছে ? ক্লাউড হচ্ছে মেঘ বা মেঘাচ্ছন্ন্ আমরা ক্লাউড কম্পিউটিং এর ছবি বা লোগো দেখে বুঝতে পারি এই মেঘ থেকে ক্লাউড কম্পিউটিং এর ধারণা এসেছে। সেটা হচ্ছে মেঘ কিভাবে হয় । জলীয়বাষ্প বিভিন্ন জায়গা থেকে উঠে গিয়ে আকাশে এক জায়গায় জমা হয়ে মেঘের সৃষ্টি হয় । তারপর ওই মেঘ থেকে বৃষ্টি হয়। তখন ঐ নির্দিষ্ট এলাকায় বৃষ্টিটা সবাই পায় । ঠিক ক্লাউড কমপিউটিং কিংবা ক্লাউড স্টোরেজ অনেকটা একই রকম। মেঘের মতো বিভিন্ন জায়গা থেকে তথ্য উপাত্ত ডেটার ডকুমেন্ট ডিজিটাল কনটেন্ট গুলো এক জায়গায় গিয়ে জমা হয়। তারপর বৃষ্টির মতো নির্দিষ্ট এলাকার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট লোকজন কনটেন্ট গুলো পেতে পারে। তাছাড়া আরো একভাবে ধারণা পাওয়া যায় । সেটা হচ্ছে অনেকগুলো ইন্টারনেট সংবলিত কম্পিউটার বা ডিভাইস মেঘের মতো কানেক্ট থাকে । যদি বইয়ের ভাষায় বলি তাহলে ক্লাউড কম্পিউটার হল একগুচ্ছ রিমোট সার্ভারের কম্পিউটার রিসোর্টস। যেমন হার্ডওয়ার সফটওয়্যার নেটওয়ার্ক ইত্যাদি ব্যবহার করে ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিভিন্ন সার্ভিস প্রদান করাকে ক্লাউড কমপিউটিং বলে

 

ক্লাউড কম্পিউটিং,ক্লাউড কম্পিউটিং কি,ক্লাউড কম্পিউটিং কী ?,ক্লাউড কম্পিউটিং কাকে বলে?,ক্লাউড কম্পিউটিং কত প্রকার?,ক্লাউড কম্পিউটিং কি?,ক্লাউড কম্পিউটিং hsc,ক্লাউড কম্পিউটিং কি নিরাপদ,ক্লাউড কম্পিউটিং এর সংস্থার নাম?,ক্লাউড,ক্লাউড কম্পিউটিং কী,ক্লাউড কম্পিউটিং এর মডেল,ক্লাউড কম্পিউটিং কাকে বলে,ক্লাউড কম্পিউটিং কত প্রকার,ক্লাউড কম্পিউটিং এর সার্ভিস,ক্লাউড কম্পিউটিং এর উদাহারণ,কম্পিউটিং,ক্লাউড কম্পিউটিং এর বৈশিষ্ট্য,ক্লাউড কম্পিউটিং এর প্রকারভেদ
ক্লাউড কম্পিউটিং

এবার একটু সাধারণভাবে চিন্তা করি । আপনার একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট কিংবা জিমেইল অ্যাকাউন্ট আছে । সেখানে আপনি ইমেইল করেন কিংবা ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন । কিংবা ছবি আপলোড করেন । কিন্তু সেগুলো আপনি ডিলিট না করা পর্যন্ত ইন্টারনেটের মাধ্যমে দেখতে পান । কিন্তু কখনও চিন্তা করেছেন এই কাজগুলো কোথায় কোন দেশের কম্পিউটার প্রসেস হয় বা জমা হয় । আসলে আমরা ব্যবহারকারীরা কেউ জানিনা এগুলো কোথায় গিয়ে জমা হচ্ছে কিংবা কোথায় প্রসেস হচ্ছে। কারণ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এই সার্ভিস প্রদানকারী কোম্পানিগুলোর বিপুলসংখ্যক সার্ভার রয়েছে। যার মাধ্যমে তারা বিপুলসংখ্যক ক্লায়েন্টকে সার্ভিস প্রদান করে ।এটাই হচ্ছে ক্লাউড কমপিউটিং ক্লাউড স্টোরেজ। আর সার্ভিসগুলো আমরা বিনামূল্যে পেয়ে থাকি । যেমন ড্রপবক্স, গুগোল ড্রাইভ, ওয়ানড্রাইভ , ওয়ান ড্রাইভ ডিডো ইত্যাদি। গুগোল ড্রাইভ দিয়ে আপনি 15 জিবি পর্যন্ত রাখতে পারবেন । তার উপরে রাখতে গেলে টাকা লাগবে।শুধু বিনামূল্যে না বেশিরভাগ ক্লাউড-কম্পিউটিং পেইড হয়ে থাকে। যেমন যাদের ওয়েবসাইট রয়েছে তারা কিন্তু বছরের জন্য ওয়েব হোস্টিং ভাড়া নেয় । কিন্তু এক ধরনের ক্লাউড স্টোরেজ বা ক্লাউড কমপিউটিং।

 

ক্লাউড কমপিউটিং পদ্ধতি কে সাধারনত তিন ভাগে ভাগ করা যায়। সেগুলো :

 

১.প্রাইভেট ক্লাউড

২.পাবলিক ক্লাউড

৩.হাইব্রিড ক্লাউড

 

আবার ক্লাউড কম্পিউটিং এর সার্ভিস মডেলকে তিন ভাগে ভাগ করা যায় সেগুলো হচ্ছে:

SaaS

PaaS

IaaS

 Saas হচ্ছে  Software as a service অর্থাৎ সফটওয়্যার ভিত্তিক সেবা ।PaaS হচ্ছে Platform as a service। অর্থাৎ প্ল্যাটফর্ম ভিত্তিক সেবা। IaaS  হচ্ছে   Infrastructure as a service অর্থাৎ অবকাঠামোগত সেবা।এছাড়াও আরো অনেকগুলো মডেল রয়েছে। সেগুলো হচ্ছে network as a service অর্থাৎNaaS । Data as a service অর্থাৎ DaaS । Security as a service অর্থাৎ SECaaS

 

SASS

সফটওয়্যার এজ এ সার্ভিস অর্থাৎ  saas। এটি হচ্ছে সফটওয়্যার  ভিত্তিক সেবা । ড্রপবক্স ,গুগোল ড্রাইভ এ সেবা গুলো saas  এর পর্যায়ে পড়ে । এই মডেলে ব্যবহারকারীরা সার্ভিস দাতা প্রতিষ্ঠান উন্নয়ন করার সফটওয়্যার ও ডাটাবেজ এক্সপ্রেস এবং ব্যবহারের সুযোগ পায় । এর ফলে আপনার বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত ডকুমেন্ট বা ডিজিটাল কনটেন্ট আপনি রাখতে পারেন । আবার পৃথিবীর যেকোন জায়গা থেকে ইন্টারনেট সংযোগ দিয়ে আপনার ডকুমেন্টগুলো নিতে পারেন । আপনি চাইলে নির্দিষ্ট কাউকে শেয়ার করতে পারবেন । অর্থাৎ আপনার কাছে থাকলে আপনার পিসি নষ্ট হয়ে। বিভিন্ন ডকুমেন্ট নষ্ট হয়ে যেতে পারে । কিন্তু আপনি যদি ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের saas সেবাটি ইউজ করেন। তাহলে ডাটা হারানোর বা নষ্ট হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই । যে কোথাও থেকে আপনি যখন তখন ব্যবহার করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে আপনার কম্পিউটার স্টোরেজের অবস্থান কিংবা কনফিগারেশন ইত্যাদি আপনার জানা বা রক্ষনাবেক্ষন প্রয়োজন পড়ে না ।


PASS

প্লাটফর্ম এজ এ সার্ভিস অর্থাৎ     pass। এটা হচ্ছে প্ল্যাটফর্ম ভিত্তিক সেবা । এই মডেলে মেশিন ভাড়া না দিয়ে ভাড়া  দেয়া হয় কম্পিউটিং প্ল্যাটফর্ম। যার মধ্যে থাকে অপারেটিং সিস্টেম, প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ, এক্সিকুশেন পরিবেশ ,ডেটাবেজ এবং ওয়েব সার্ভার ইত্যাদি । অর্থাৎ এর মাধ্যমে আপনি প্ল্যাটফর্ম ভাড়া নিতে পারবেন। মনে করেন আপনার একটি উইন্ডোজ কম্পিউটার আছে । কিংবা আপনার প্রতিষ্ঠানের ২০টি উইন্ডোজ কম্পিউটার রয়েছে । কিন্তু আপনার একটি সফটওয়্যার বানাতে বিশ দিনের জন্য আর একটি ম্যাক বা অ্যাপেল অপারেটিং সিস্টেম প্রয়োজন। এখন আপনি চিন্তা করেন এই কয়দিনের জন্য আপনি কি অপারেটিং সিস্টেম ভাড়া নেবেন নাকি কিনবেন? এখানে যদি আপনি ক্লাউড কম্পিউটিং এর paas  সেবা ইউজ করেন তাহলে অপারেটিং সিস্টেম ,প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ, একজুকেশন পরিবেশ ডেটাবেজ এবং ওয়েব সার্ভার ইত্যাদি ভাড়া নিয়ে আপনি কাজগুলো করতে পারবেন । তাছাড়া পিসি বা কম্পিউটারের কনফিগারেশন খারাপ হলে আপনি Paas উজ করে কাজটি আপনি করতে পারবেন । এই প্লাটফর্মে ব্যবহারকারী কম খরচে এপ্লিকেশন সফটওয়্যার ডেভেলপ এবং রান করাতে পারবেন। এর উদাহরণ হিসেবে বলা যায় microsoft-এর   azure এবং গুগলের  app engine। 


IAAS

ইনফ্রাস্ট্রাকচার এজ এ সার্ভিস অর্থাৎ  Iaas। এটি হচ্ছে অবকাঠামোগত সেবা । এই মডেলে ভাড়া দেওয়া হয় অবকাঠামো । আপনি ভার্চুয়াল  মেশিনের নিজের ইচ্ছামত অপারেটিং সিস্টেম ইন্সটল করে নিজের নিয়ন্ত্রণে এপ্লিকেশন সফটওয়্যার চালাতে পারবেন । অ্যামাজনের ইসিটু  এর প্রতিটি সার্ভারে এক থেকে আটটি ভার্চুয়াল মেশিন চলে। ক্রেতারা এগুলো ভাড়া নিয়ে থাকেন । এই হচ্ছে ক্লাউড কম্পিউটিং এর তিনটি প্রধান সেবা । ক্লাউড কম্পিউটিংকে আমরা যদি ওভারঅল ভিউ করি । তাহলে এভাবে বলা যায় মনে করেন আপনি একটি স্পেস বা দোকান ভাড়া নিলেন । সেখানে যখন ইচ্ছা কিছু রাখলেন কিংবা বের করলেন কিংবা কাউকে দোকানের চাবি দিলে তিনি যে কোন সময় সেখান থেকে কোন কিছু রাখতে পারেন। কিংবা বের করতে পারবেন। ঠিক তেমনি এই কাজটা যদি অনলাইনে করা হয়। তবে সেটা হবে ক্লাউড কমপিউটিং। অর্থাৎ আপনি অনলাইনে কোন কোম্পানি থেকে ফ্রিতে বা মূল্য অনুযায়ী নির্দিষ্ট এক্সপ্রেস নিলেন । তারপর সেখানে কিছু রাখলেন। তারপর যখন যেখানে ইচ্ছা সেখানে পারলেন কিংবা বের করে নিতে পারলেন। আবার আপনি ইচ্ছা করলে কাউকে অ্যাক্সিস দিতে পারেন । এটা অনেকটা ভার্চুয়াল অফিস এর মত কাজ করে । ব্যবসা বা কাজের জন্য সফটওয়্যার বা হার্ডওয়ার ভাড়া নিয়ে স্বল্প ব্যয়ে বা স্বল্প খরচে আপনি কাজ করতে পারেন । মোটকথা ক্লাউড কমপিউটিং মানে হচ্ছে ইন্টারনেটভিত্তিক সার্ভিস । যেখানে সফটওয়্যার কিংবা হার্ডওয়ার আপনি ভাড়া নিতে পারবেন ।

আরও পড়ুন - কোয়ান্টাম কম্পিউটার কি ?

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন