জাতীয় স্মৃতিসৌধ
স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদদের সম্মানে নির্মিত। বাংলাদেশের জাতীয় স্মৃতিসৌধ ঢাকা থেকে ৩৫ কিমি উত্তর-পশ্চিমে সাভারে অবস্থিত। বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের মহান শহীদদের অসামান্য ত্যাগ ও শৌর্যের স্মৃতি হিসেবে সৌধটি দাঁড়িয়ে আছে। ১৯৭৮ সালে এটি নির্মাণের জন্য নকশা আহ্বান করা হয়। স্বপতি সৈয়দ মঈনুল হোসেন এর নকশা নির্মাণ করেন এবং ১৯৮২ খ্রিস্টাব্দে এটি নির্মিত হয়। সৌধটির উচ্চতা ১৫০ ফুট। অসমান উচ্চতা ও স্বতন্ত্র ভিত্তির ওপর সাতটি ত্রিভুজাকৃতির প্রাচীর নিয়ে মূল সৌধটি গঠিত। কাঠামোটি এমনভাবে বিন্যস্ত যে, ভিন্ন ভিন্ন কোণ থেকে একে ভিন্ন ভিন্ন অবকাঠামোয় পরিদৃষ্ট হয়। সৌধটির সাত জোড়া ত্রিভুজ আকারের দেয়াল ছোট থেকে বড় হয়ে বাপে ধাপে উপরে উঠে গেছে। এই সাত জোড়া দেয়াল বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের সাতটি ক্রমকালের প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। ১৯৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪-এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ১৯৫৬-তে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সোহরাওয়ার্দীর শপথ গ্রহণ, ১৯৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৬-এর ছয় দফা, ১৯৬৯-এর গণঅভ্যু এবং ১৯৭১-এ স্বাধীনতা সংগ্রাম- এগুলো হল সাতটি সালের প্রধান গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। জাতীয় স্মৃতিসৌধ ঐতিহাসিক সাত বছরের নাম-না-জানা অগণিত শহীদদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে নির্মিত। এটি শহীদদের আত্মত্যাগ ও নির্ভিকতাকে মনে করিয়ে দেয়। সমগ্র কমপ্লেক্সটি ৩৪ হেক্টর (৮৪ একর) জমি জুড়ে বিস্তৃত। একে ঘিরে আছে আরও ১০ হেক্টর সবুজ ভূমি। ১৩৬টির সামনে বেশ কয়েকটি গণকবর ও একটি প্রতিফলন সৃষ্টিকারী জলাশয় নির্মিত হয়েছে। বাংলাদেশের মহান শহীদদের স্মরণে আমরা জাতীয় স্মৃতিসৌধে যেমন পুষ্পস্তবক অর্পণ করব, তেমনি এর পবিত্রতা রক্ষা করা আমাদের কর্তব্য।