আজকের লেখায় আমার জানবো বাংলাদেশের মতো ঘনবতিপূর্ণ দেশে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কতটা কার্যকরী হবে, এ বিদ্যুৎ আমাদের জন্য সত্যিকার অর্থে উপকারী নাকি ধ্বংস, রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে পূর্ণ বর্ণনা উঠে আসবে যেগুলো আপনি আগে শুনেনি।
ঢাকা থেকে ১৮২ কিলোমিটার দূরত্বে পাবনার ঈশ্বরদীর রূপপুর চলছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিশাল মহাযজ্ঞ। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবহার করা হচ্ছে VVER-1200 REACTOR এটি ইতিহাসের থার্ড জেনারেশ রিয়েক্টর । রাশিয়ার উদ্ভাবিত রিয়েক্টিরটিকে বর্তমান পৃথিবীর সবচেয়ে আধুনিক রিয়েক্টর। অত্যান্ত নির্ভরযোগ্য এই রিয়েক্টরটি ডিজাইন করা হয়েছে জাপানের ফুকুশিমা পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিপর্যয়ের পরে। অত্যন্ত আধুনিক ডিজাইন এন্ড ডেভেলপমেন্ট করেছে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পারমাণবিক সংস্থা রোসাটম। রোসাটমের তৈরি VVER নিউক্লিয়ার রিয়েক্টর ব্যাবহার করছে বর্তমান বিশ্বের ৪৭ টিরও বেশি দেশ উল্লেখযোগ্য সেসব দেশগুলোর মধ্যে জার্মানি, হাঙ্গারিস, স্লোভাকিয়া, ফিনল্যান্ড বুলগেরিয়া কিংবা ইউক্রেনের মতো দেশের নামও রয়েছে। অন্যদিকে চায়না, ইন্ডিয়া,ইরান,তার্কে মতো দেশেগুলো রয়েছে এই তালিকায়। রিয়েক্টরের এই ডিজাইনটিতে পেয়েন্ট টু পায়েন্ট নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করা হয়েছে । ৫ স্তরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সবচেয়ে বড় অংশটি জুড়ে রয়েছে ১২টি হাইড্রোআকুমোডেশন। তাই আপনি প্রশ্ন করতে পারেন হাইড্রোআকুমোডেশন কী কাজ করবে?
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র |
কোন কারণে যদি কোন ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে কিংবা কোনো কারণে চুল্লির ভেতরে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্ম নেয়। তবে অন্তত ৭২ ঘন্টা পর্যন্ত বাইরের কোনো সহযোগিতা কিংবা তদারকিতে ছাড়াই চুল্লিটি নিরাপদে পরিচালনা করবে এই ১২টি হাইড্রোআকামুডেশন। এরপরেও যদি কোন কারণে নিউক্লিয়ার রিয়েক্টরের ভেতরে উত্তাপ বেড়ে যায় কিংবা উত্তাপ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় আটোমেটে সিস্টেমের মাধ্যমে এর নিচে তৈরি করা স্প্যশালাইজ টাঙ্কের মাধ্যমে জমে যাবে। স্বল্প সময়ের মাধ্যমে টাঙ্কিতে সেটা জমে সেটা শিল হয়ে যাবে এবং পরবর্তী সময়ে সেটাকে স্থানান্তর করার ব্যবস্থাও থাকবে। এখন আবারও প্রশ্ন হতে নিউক্লিয়ার ফুয়েল যেখানে ব্লাস্ট হয় সেখানে সেটা জমে যাবে কিভাবে? উত্তর হচ্ছে চুল্লির ডিজাইনটি এমনভাবে করা হয় যাতে ফিলগুলো গলে জমে যায়। রোসাটমের বিজ্ঞানীরা নিরাপত্তা জায়গাটা ঠিক এখানেই শেষ করেনি কোন অনাকাঙ্খিত কারণে যদি পরমাণু চুল্লিতে ব্লাস্ট করে তবে তার নিরাপত্তা কি? সর্বশেষ নিরাপত্তা হিসাবে রোসাটমের বিজ্ঞানীরা তৈরি করেছেন স্পেশালাইজড। রিয়েক্টর বিল্ডিং ডিজাইনটা এমনভাবে করা হয়েছে যদি কোন কারণে ব্লাস্ট করেই ফেলে তবে এর রেডিয়েশন ৩০০ মিটার বেশি ছড়াবে না।
কারণ রিয়েক্টর বিল্ডিংএর ৫ সূত্রে নিরাপত্তা বেষ্টনীর সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারটি ছিল এটি। তবে আপনি কী জানেন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিরাপত্তা স্বর্থে কত মিটার জায়গা খালি রাখা হয়ছে? উত্তর হচ্ছে ৮০০ মিটার সোও এটা নিশ্চিত ভাবে বলা যায় কোন কারণে যদি ব্লাস্ট করে ফেলে ৩০০ মিটার পর্যন্ত রেডিয়েশন ছড়ানোর কথা সেখানে বাংলাদেশ নিরাপত্তার স্বার্থে আরো ৫০০ মিটার জায়গা খালি রেখেছে। সবমিলিয়ে পরমাণু চুল্লির বাইরে সবসময় ঐ ৮০০ মিটার এলাকা সবসময়ের জন্যই খালি থাকবে। গতানুগতিক ধারার বলা য়ায়, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে নিরাপত্তার ব্যাপারে খুব বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয় না কিন্তু এক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এবং বিজ্ঞানমন্ত্রী দুজনের বলেছেন পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিরাপত্তা নিশ্চিতের প্রয়োজনের সময় এবং অর্থ ব্যাপারে কম্প্রোমাই বাংলাদেশে কোন কম্প্রোমাইজ করবে না। এটা আমি নই বলছেন ইন্টারনেলনাল অটোমেটিক এর্নাজির কর্মকর্তারা তারা এখানে অনেক বারই এসেছেন ইন্সপেকশনের।
নিরাপত্তা এবং চুল্লি নিয়ে তখন এত কথা বলছি তখন এটাও মাথায় আসতে পারে পরমানবিক কতটুকু ব্যয়বহুল। সোও একটা পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যায়ের সবচেয়ে বড় অংশজুড়ে রয়েছে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি সম্পূর্ণরূপে তৈরি করা পর্যন্ত । আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশের কাছে আকাশছোঁয়া বেশি খরচটা মাথায় বাজ পরার মত। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র সম্পূর্ণরূপে তৈরি করা পর্যন্ত বাংলাদেশের খরচ হয়ে যাচ্ছে ১৩.৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বাংলা টাকায় অর্থের এই পরিমাণটা গিয়ে দাঁড়ায় ১১ লক্ষ ১৩ হাজার কোটি টাকার বেশি। টাকা বিশাল এই সংখ্যাটা নিশ্চিতভাবেই আপনাকে বলে দিচ্ছে টাকার অঙ্কে এটাই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় কোন প্রজেক্ট। কিন্তু আপনি কি জানেন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র এটা সবচেয়ে বড় খরচ ।
বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি পরিচালনা জন্য পরবর্তী সময়ে যে পরিমাণ খরচের প্রয়োজন হবে সেটা উৎপাদনে তুলনায় খুবই সামান্য। উদাহরণস্বরূপ ইউরেনিয়াম 235 এর এক গ্রাম দিয়ে প্রায় ২৪ হাজার কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়। এ পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য একটা কয়লা চালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সব মিলিয়ে ৩ টনের বেশি কয়লা পোড়াতে হয়। বর্তমান বাজারে এক টন কয়লার দাম ১৫০ ডলার থেকে ২০০ ডলারের বেশি। যেখানে এক গ্রামে ইউরেনিয়ামের দাম মাত্র ৩০ থেকে ৩০ ডলার। মানেটা হচ্ছে ১ গ্রাম বা ৩০ ডলার খরচ আপনি যে বিদ্যুৎ পেয়ে যাচ্ছেন সেই বিদ্যুৎ কয়লা চালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্র উৎপাদন করার জন্য আপনাকে খরচ করতে হচ্ছে অন্তত ৪৫০ ডলার থেকে ৬০০ ডলারের বেশি । খুব সহজে বোঝা যায় উৎপাদন এবং খরচ দুদিক থেকে পরমাণু বিদ্যুৎ অন্তত্য ১২ থেকে ১৫ গুনেও বেশি সাশ্রয়ী।
উদাহরণটা ঠিক এমনভাবে দেওয়া যায়, একটা সোনার ডিম পাড়া হাঁসের মতো। পেলে-পুষে যদি কোনো একটি হাঁস যদি আপনি সোনার ডিম পাড়া পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারেন। তারপর থেকে প্রতিনিয়ত সে সোনার ডিম দিয়ে যাবে শুধু নিয়মিত তাকে খাওয়ানোটা প্রয়োজন। এখন আবারও প্রশ্ন করতে পারেন পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য প্রায় ১২ বিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থতো রাশিয়ায় লোন দিচ্ছে। তাহলে আমরা কম দামে বিদ্যুৎ পাব কিনা? উত্তর হচ্ছে প্রথম ২০ বছর রাশিয়াকে বাংলাদেশে তাদের লোন পরিশোধ করবে। লোন পরিশোধকালে বাংলাদেশের সবচেয়ে কম দামে যে বিদ্যুৎ পাওয়ার কথা সেটা হয়তো পাবে না। তবে বর্তমানে বাজারে বিদ্যুতের যে দাম তার চেয়ে কিছুটা কমই থাকবে। ২০ বছরের মাথায় যখন লোনটা পরিশোধ হয়ে যাবে পরবর্তী সময় ৬০ থেকে ৮০ বছর পর্যন্ত বাংলাদেশের তার ইতিহাস সবচেয়ে কম দামে বিদ্যুৎ পাবে।
এক্ষেত্রে আপনার প্রশ্ন হতে পারে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি সত্যিকার অর্থে কত বছর পর্যন্ত টিকবে? রোসাটমের তথ্য অনুযায়ী তাদের পরমাণু চুল্লিটির ডিজাইন এন্ড ডেভেলপমেন্ট এমনভাবে করা হয়েছে যাতে এটি নির্দ্বিধায় ৬০ বছর পর্যন্ত সার্ভিস দিতে পারে এবং ভালোভাবে তদারকি করা যায় তবে অন্তত ১০০ বছর পর্যন্ত এর থেকে বিদ্যুৎ নেওয়া সম্ভব। আপনি যদি মনে করে থাকেন পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাংলাদেশের জন্য শুধুমাত্র পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রে। তবে আপনি ভুলের মধ্যে রয়েছেন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি আমাদের জন্য টোটাল একটা এম্পারস্টাকচার । কারণ পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি পরিচালনার জন্য কিংবা তার তার রক্ষনাবেক্ষনের স্বার্থে আমাদের এখানে প্রয়োজন হচ্ছে মেকানিক্যাল ইন্ডাস্ট্রির, কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি, টেকনোলজি ইন্ডাস্ট্রি এবং সবচেয়ে বড় অংশজুড়ে যা প্রয়োজন তা হচ্ছে নিউক্লিয়র সাইন্স এন্ড টেকনোলজি ম্যান পাওয়ার।নিউক্লিয়র সাইন্স এন্ড টেকনোলজি ম্যান পাওয়ারের কথা যদি বলতে চাই তবে বাংলাদেশ এই ক্ষেত্রে প্রায় শূন্যের কোঠায় অবস্থান করছি।
যেখানে নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট পরিচালনা করার জন্য দক্ষ অন্তত ১৬০০ মানুষের প্রয়োজন হয়। গুড নিউজ হচ্ছে বাংলাদেশের পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিচালনার জন্য অন্তত তিন হাজার মানুষের একটা দক্ষ জনবল তৈরি করার প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এরই মধ্যে ৮৫০ জনের একটি দলকে রাশিয়ায় পাঠানো হয়েছে এবং যারা একাডেমিক এবং প্রাকটিক্যাল দুটি ট্রেনিং নিয়েছেন রাশিয়ায়। ৮৫০ জনের এই দলের ট্রেনিংটি শেষ হলে তারা চলে আসবে দেশে এবং আরো ৮৫০ জনের একটি দল চলে যাবে রাশিয়ায়। প্রথম ৮৫০ জন ট্রেনিং নিয়েছেন রাশিয়ায় দেশে আসার পরে তারা এই আরো ৮৫০ জনের একটি দলকে দেশে ট্রেনিং দিবেন। আর এভাবেই স্বল্প সময়ের মধ্যে পাওয়ার প্লান্ট পরিচালনার জন্য দেশে জনবল তৈরি করা হচ্ছে। ট্রেনিং নেওয়া জন্য এসব স্টুডেন্টদের বাছাই করি হচ্ছে বুয়েট, ঢাকা ইউনিভার্সিটি, এমআইটির মতো বিদ্যাপীঠ গুলো থেকে । আর পুরো প্রকল্প এবং প্রকল্পের পরিচালনার জন্য জনবল তৈরি কাজ সবকিছুই তদারকি করে যাচ্ছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
বাস্তবতা হচ্ছে শুধু মাত্র ৩ হাজার দক্ষ জনবল দিয়ে এত বড় একটি প্রকল্প পরিচালনা অসম্ভব প্রায়। তাই এটা একটা কন্টিনিয়াস প্রসেস এভাবে জনবল তৈরি কাজ চলমান থাকবে। সোও পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ অনেক ধরনের কনফিউশনের জন্ম দিয়েছে। কেউ কেউ নিষেধাজ্ঞা পড়েছে যেমন আবার কেউ অস্ত্র তৈরি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। সোও বাংলাদেশের জন্য কোন নিষেধাজ্ঞা অপেক্ষা করছে কিনা কিংবা কোন ধরনের অস্ত্র তৈরি পরিকল্পনা বাংলাদেশের আছে কিনা? কিছুদিন আগে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সরাসরি খুব ক্লিয়ার করে বলেছেন বাংলাদেশ পরমাণু অস্ত্র তৈরি করবে না বাংলাদেশের টার্গেট শুধু বিদ্যুৎ। পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্পের কারণে ইরান কিংবা উত্তর কোরিয়ার মত কোন ধরনের নিষেধাজ্ঞা পড়ার সম্ভাবনা আছে কিনা? উত্তর হচ্ছে না এখন পর্যন্ত কোনভাবেই নেই। কারণ হচ্ছে বাংলাদেশের IAER-এর নন-প্রলিফারেশন ট্রিটি সাইন করেছে।
মে চুক্তিটি বিশালতা অনেক। ছোট করে বলতে গেলে IAER যদি আপনাকে সন্দেহ করে কিংবা কোনো কারণে মনে হয় বাংলাদেশ পরমাণু অস্ত্র তৈরির পথে হাঁটছে। তবে তারা ইনস্পেকশন আসবে আর তাদেরকে ইনস্পেকশন করতে না দেওয়া কিংবা কোনো কারণে তাদেরকে সহযোগিতা না করার মানে হচ্ছে আপনার জন্য বড় ধরনের নিষেধাজ্ঞা অপেক্ষা করছে।যে কারণে নিষেধাজ্ঞা পড়েছিল ইরান এবং উত্তর কোরিয়া। কিছুদিন আগেও IAEA-এর ১৯ জনের একটি দল বাংলাদেশ এসেছে এবং রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ইন্সপেকশন করে গেছে এবং তার সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে। সোও পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য বাংলাদেশের এখনো নিষেধাজ্ঞা পড়ার কোন সম্ভাবনা নেই। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কারণে সে অঞ্চলের মানুষের কি উপকার হচ্ছে? সত্যিকার অর্থে রূপপুর পাবনার রুপকথায় পরিণত হয়েছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং তার আশেপাশের এলাকা গুলোতে তেমন জমির দাম বেড়ে গিয়েছে কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছে তেমনি ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও সেখানে জমি খোঁজা শুরু করেছে। আবার রূপপুরে আকাশে উঁকি মেরেছে রূপকথার চাঁদ।
আকাশে চুম্বি অট্টলিকার দেখা হয়তো আপনি ঢাকা চট্টগ্রাম কিংবা দেশের সেরা চার পাঁচটা শহরের মধ্যে পেতে পারেন। কিন্তু পাবনার রূপপুর কোনো কোনো অংশে সেই বিশালতাকেও ছাড়িয়ে গেছে। এখানে আকাশ আপনি পাবেন আকাশে চুম্বি অট্টলিকার দেখা পাবেন তেমনি প্রকল্প এলাকার প্রায় প্রতিটি প্রান্তে আপনি খুঁজে পাবেন রাশিয়ানদের। তথ্য বলছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এলাকায় বসবাস করছে প্রায় ৫ হাজারের বেশি রাশিয়ান পাশাপাশি কিছু ইন্ডিয়ানের বসবাসও রয়েছে এখানে। এখানে রাস্তা ঘাটের তেমন পরিবর্তন হয়ে গেছে তেমন সাধারণ মার্কেট গুলো পুরোপুরি রাশিয়ান সাজে সেজেছে। দোকানের সাইনবোর্ড থেকে সাধারণ মানুষের মুখে রাশিয়ান ভাষা ব্যবহার খুব স্বাভাবিকভাবেই লক্ষ্য করা যায়। ভাষা বৈচিত্র্যোর দিক থেকে বাংলাদেশের মানুষ যেখানে ইংরেজি এবং বাংলার উপর সবচেয়ে বেশি নির্ভরশীল। সেখানে রাশিয়ান আমাদের জন্য নতুন কিছু ।
রূপপুর মানুষ প্রমাণ করেছে কোন ভাষাই কঠিন নয় কোন জাতিকে আপন করে নেওয়া অসম্ভব নয়। পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কারণে রূপপুর জুড়ে এমন অসাধারণ কিছু পরিবর্তন ঘটেছে যেগুলো সাধারণ মানুষ বর্ণনা করেছেন ম্যাজিকের মতো। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পারমানবিক চুল্লি কিংবা স্পেশাল ইকুয়েপমেন্ট গুলো ছাড়া এখানে মত ধরনের কাঁচামালের ব্যবহার হচ্ছে তার সবকিছুই বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠানগুলোর তৈরি। উদাহরণস্বরূপ রড সিমেন্টের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাঁচামাল গুলো তার শত ভাগ যোগান দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশি কোম্পানিগুলো।শেষ দিকে এসে এটাই বলতে হয় রূপপুর শুধুমাত্র একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নয়।এটা স্বাধীনতা পূর্ব এবং পরবর্তী বাংলাদেশের জন্য অর্ধশত বছরের বেশি সময় ধরে লালিত একটি স্বপ্ন।যে স্বপ্ন বাস্তবাতায় মুখ দেখেছে। হয়তো এ স্বপ্ন থেকে আলো পেতে ২০২৩ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। রূপপুর আলো ছড়ালে আলোকিত হবে সারা বাংলাদেশে । লেখাটির পুরো তথ্য জানার পর আপনার কি এখন মনে হচ্ছে, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র আমাদের জন্য ধ্বংস ডেকে আনতে পারে কিংবা আমাদের জন্য কোন কারণে ক্ষতি হতে পারে ?
আপনার মতামত জানান আমাদের।