NFT কিংবা নন ফাঞ্জিবল টোকেন (Non Fungible Token) ইদানীংকালের একটি নতুন ট্রেন্ড, যার প্রতি সকলেই আকৃষ্ট হচ্ছেন। সকলেই জানতে চাচ্ছেন, NFT আসলে কী? ইন্টারনেট জগতে অনেকেই একে ঘিরে আলোচনা করছেন; আর সবচেয়ে বড় ব্যাপারটি হলো অনেকেই চাচ্ছেন অন্তত একটি NFT এর মালিক হতে।
অনলাইন জগতে নিয়মিত বিচরণ থেকে থাকলে আপনি অবশ্যই ২-১টি NFT এর নাম মিডিয়ায় শুনে থাকবেন। Nyan Cat GIF একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় NFT যা ৩০০ ইথেরিয়ামের বিনিময়ে বিক্রি হয়েছিল, যা তখনকার সময়ের ৫৯০,০০০ ডলারের সমতুল্য ছিল। আরেকটি জনপ্রিয় NFT হচ্ছে টুইটারের সিইও জ্যাক ডরসির প্রথম টুইট। এটি ১৬৩০.৫৮ ইথেরিয়াম কিংবা তৎকালীন ২.৯ মিলিয়ন ডলারে বিক্রি হয়েছিল। আপনারা হয়তো চিন্তা করছেন এই NFT আসলে কী জিনিস। যার জন্য মানুষ পাগলের মতো বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে যাচ্ছে। আমরা আজকে লেখায় NFT সম্পর্কে বিস্তারিত জানব এবং সকল প্রশ্নের উত্তর দেয়ার চেষ্টা করব।
Non Fungible Token |
ক্রিপ্ট ওয়ার্ল্ডের জনপ্রিয় ব্লকচেইন বেইজড গেইম Crypto Kittes এর মাধ্যমে NFT এর কথা পুরো ইন্টারনেট বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। এই গেমটি মাধ্যমে ব্লকচেইন এবং NFT পাবলিক মেইন স্ট্রিমে সকলের নজর কাড়তে সক্ষম হয়েছে। Crypto Kittes গেমটির মাধ্যমে অনেকেই ক্রিপ্টো এবং ব্লক স্পেস সম্পর্কে জানতে পেরেছে যা অনলাইন বিশ্বে একটি নতুন যুগের সূচনা ঘটিয়েছে। আপনারা কি জানেন গেমটির প্রত্যেকটি kitty একটি অন্যটি থেকে ভিন্ন। অর্থাৎ এই kitty নিজেরাই একেকটি NFT।
আপনারা কি কখনো গ্রামি বিজয়ী প্রযোজক এবং সংগীতজগতের সুপরিচিত নাম ক্যালভিন হ্যারিসের নাম শুনেছেন। সম্প্রতি তিনি নিজেও NFT বিশ্বে যুক্ত হয়েছেন। তিনি খুবই কনফিডেন্সের সাথে বলেছেন যে ,"NFT ভবিষ্যতে সমগ্র মিউজিক ইন্ডাস্ট্রিতে বিপ্লব ঘটাবেইষ" তার মত এত প্রখ্যাত ব্যক্তির বক্তব্য থেকে বোঝা যাচ্ছে যে এরই ভিতর পুরো ইন্ডাস্ট্রিতে NFT কতটা গভীর ভাবে জড়িয়ে গেছে। NFT এর জনপ্রিয়তার আরেকটি কারণ হচ্ছে NBA Top shot । ২০২০ সালের মাঝামাঝি সময় মার্কেটপ্লেস এ আসার পর থেকেই NBA টপ শর্ট তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। আপনারা কি কেউ জানেন? NBA টপ শর্ট কি জিনিস? এটি আসলে একটি ডিজিটাল ট্রেডিং কার্ড যেখানে NBA এর গেমসমূহের বিশেষ মুহূর্তগুলো ছবি ধারণ করা হয়। মার্কেটে আসার পর থেকেই এই ট্রেডিং কার্ড ক্রিপ্টো স্পেসের ব্যাপক সম্ভাবনা কথা প্রতিনিয়ত প্রমাণ করে চলেছে।
বর্তমান এই স্মার্টফোনের যুগে যেকোনো ডিজিটাল কনটেন্টকে কপি করা থেকে শুরু করে নকল করা খুবই সহজ হয়ে ওঠায় কোন ডিজিটাল কনটেন্টের একক মালিকানা ধরে রাখা খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে । কিন্তু NFT আসার পর থেকে বিভিন্ন ডিজিটাল কনটেন্টকে রক্ষা করা কিছুটা সহজ হয়েছে। আমরা আগেই বিশ্বজুড়ে NFT এর জনপ্রিয়তার কথা উল্লেখ করেছি। মিডিয়াতে NFT এর কথা নিয়মিতভাবে প্রচার করা হচ্ছে। এত স্বল্প সময়ে যেভাবে NFT মেইনস্ট্রিম মিডিয়া জুড়ে তার প্রভাব বিস্তার করে ফেলেছে তা খুবই প্রশংসার দাবিদার। NFT. এর সাথে সাথে ক্রিপ্টোকারেন্সি এবং ব্লক চেইন সংক্রান্ত সচেতনতাও চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। শুধু তাই নয় ক্রিপ্টো রিলেটড বিভিন্ন কোম্পানিও তাদের কর্ম পরিধি বাড়াতে বর্তমানে কাজ করে যাচ্ছে।
বিভিন্ন বড় বড় কর্পোরেশন তাদের ব্যবসায়িক কাজে ব্লক চেইনের প্রয়োজনীয়তা ও সুবিধা সম্পর্কে সচেতন হওয়া ক্রিপ্টো ওয়ার্ল্ড খুব দ্রুতগতিতে চারদিকে বিস্তার লাভ করছে। এছাড়াও কিছুদিন ধরে Blockchain As A Service বা BAAS নামক নতুন এক ধরনের কোম্পানি বিভিন্ন ব্যক্তি এবং করপোরেশনকে টোকন তৈরিতে সাহায্য করার পাশাপাশি ব্লকচেইনের বিভিন্ন সার্ভিস ব্যবহারে প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছে। তাহলে বুঝতেই পারছেন ব্লকচেইন এবং ক্রিপ্টোকারেন্সি বর্তমানে সকলের নাগালের ভিতরেই চলে এসেছে।