চুল পড়ার সমস্যার পাশাপাশি আরেকটি সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় মেয়েদের, তা হল চুল লম্বা না হওয়া। অনেক মেয়েই অভিযোগ করে থাকেন যে তাদের চুল লম্বা হয় না। মূলত চুল তিনটি ধাপে লম্বা হয়ে থাকে। অ্যানাজেন, ক্যাটাজেন, এবং টেলোজেন। অ্যানাজেন ধাপে চুল জন্ম গ্রহণ করে থাকে। ক্যাটাজেন ধাপে নতুন চুল গজিয়ে থাকে, টেলোজেন ধাপে চুল জন্মানো বন্ধ হয়ে যায়। এটি চুলের জীবনচক্র। কিছু উপায়ে আছে যার মাধ্যমে আপনি আপনার চুল দ্রুত লম্বা করতে পারেন। এবং সেটা নিজের ঘরে বসেই। তেমনি একটি রেমেডি নিয়ে আজ আমি হাজির হয়েছি আপনাদের সামনে। এটা ব্যবহারের ফলে আপনার চুলের দ্রুত বৃদ্ধি তো ঘটবেই। সাথে সাথে আপনার চুল পড়ার সমস্যার সমাধান করবে। চলুন দেখে নেওয়া যাক চুল লম্বা করার উপায়।
তো চলুন সময় নষ্ট না করে পড়ে নেয়া যাক কিভাবে এটা তৈরি করতে হয়। এই রেমিডিটি তৈরি করতে আমাদের যা লাগবে তা হলো পেঁয়াজ। পেঁয়াজ এমনই একটি উপাদান যা চুলের জন্য যা চুলের জন্য দারুন ফলদায়ক। পেঁয়াজ ত্বক ও চুলের জন্য টনিক হিসেবে কাজ করে। কারণ এতে রয়েছে বিভিন্ন পুষ্টিক উপাদান যেগুলো ত্বক ও চুলকে সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে। যেকোন সংক্রমণ রোগে পেঁয়াজে বিদ্যমান এন্টিবায়োটিক তা দূর করে। এছাড়া পেঁয়াজে ভিটামিন , মিনারেল, সালফার, ক্যালসিয়াম পটাশিয়াম ইত্যাদি রয়েছে। এটা আপনার চুল লম্বা হওয়ার জন্য খুবই ভালো কাজ করে পাশাপাশি এটা আপনার চুল পড়া রোধ করতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এরপর আমাদের লাগবে আদা।
লম্বা চুল |
আপনার চুল পড়ার সমস্যা থাকলে আদা আপনার সেই সমস্যার সমাধান করতে পারে। কারণ আদায় ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম ,ফসফরাস এবং আরও নানাবিধ উপকারী উপাদান হেয়ার ফলিকের পুষ্টির ঘাটতি দূর করে। ফলে স্বাভাবিক ভাবে চুল এতটাই শক্তপোক্ত হয়ে ওঠে যে হেয়ার ফলের আশঙ্কা কমে। তাছাড়া আদায় থাকা জিনজারাল নামক উপাদানটি স্কালফে প্রবেশ করার পর চুলের গোড়ায় রক্তের প্রবাহ বাড়িয়ে দেয়। ফলে স্বাভাবিক ভাবে চুলের স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে সময় লাগে না। এমনটা হলে চুল সুন্দর হয়ে উঠতে যে সময় লাগে না তাকে আর বলার অপেক্ষা রাখে।
এখন এই আদাকে ছোট ছোট টুকরো করে কেটে নিন। তারপর এটাকে ব্লেন্ডার দিয়ে ব্লেন্ড করে রস বের করে নিন। তারপর আমাদের লাগবে নারকেলের তেল। বন্ধুরা আদিকাল থেকে চুলের যত্নে নারকেলে তেলের ব্যবহার হয়ে আসছে। রুক্ষ, মলিন প্রাণহীন চুলকে ঝলমলে স্বাস্থ্যউজ্জ্বল করে তুলতে নারকেল তেলের জুড়ি নেই। নারকেল তেলের প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার চুলকে করে তোলে নরম, কোমল। এছাড়া নারকেল তেলে আছে প্রোটিন ফ্যাটি এসিড ,ভিটামিন বি ও সি, জিংক, পটাশিয়াম যা চুলকে ভেতর থেকে পুষ্টি যোগায়। নারকেল তেলে কিছু পুষ্টিগুণ রয়েছে যা চুলের রুক্ষতা দূর করে চুলকে কোমল স্বাস্থ্যোজ্জ্বল করে চুল বৃদ্ধি করে। আর আমাদের সর্বশেষে লাগবে তেজপাতা।
ত্বকের যত্নে তেজপাতা খুবই ভাল একটি উপাদান এটি ত্বকে প্রাকৃতিক টোনারের কাজ করে ও চুলের রুক্ষতা দূর করতে খুবই ভালো কাজ করে।
এখন আমি আপনাদেরকে বলবো কীভাবে এই অসাধারণ তেল তৈরি করবেন। প্রথমে একটি পেঁয়াজ নিন। তারপর এর খোসা ছাড়িয়ে ফেলুন। তারপর এটাকে ছোট ছোট টুকরো করে কেটে নিন। এখন এই টুকরোগুলো একটি ব্লেন্ডারে নিয়ে ব্লেন্ড করে নিন। ভালোভাবে ব্লেন্ড করার পর এই ব্লেন্ড থেকে পেঁয়াজের রস বের করে নিন। তারপর এক টুকরো আদা নিন এবং এটাকে থেঁতলে নিন। এখন একটি পাত্রে ১০০-১৫০ গ্রামের মতো নারিকেলের তেল নিন। বন্ধুরা আমরা এই তেলকে ডবল মেথড পদ্ধতিতে গরম করবো। এখন এই তেলের সাথে তিন থেকে চারটি তেজপাতা মেশান। এখন এই উপাদান দুটিকে একত্রে ৫ থেকে ৭ মিনিট গরম করুন।
তারপর এতে পেঁয়াজের রস ও আদার রস যোগ করুন। তারপর ভালোভাবে মিশ্রিত করে নিন এবং আরো ৩ থেকে ৪ মিনিট গরম করুন। তারপর এটাতে জ্বাল দেওয়া বন্ধ করে দিন। তারপর এটা রেখে দিন ঠাণ্ডা হওয়ার জন্য। যখন এটা ঠান্ডা হয়ে যাবে তখন এটা আপনি আপনার চুলে ব্যবহার করতে পারবেন। এখন আমি এটা ব্যবহারের নিয়মাবলী আপনাদের সাথে শেয়ার করব। বন্ধুরা প্রথমে আপনারা স্কালফে এই তেল ভালোভাবে লাগাবেন। তারপর ৫ মিনিট ভালোভাবে ম্যাসাজ করতে হবে। বন্ধুরা চুলের যত্নে ম্যাসাজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।স্কালফে ভালোভাবে ম্যাসাজ করার পর এটা আপনার সমস্ত চলে ভালোভাবে লাগান। আর হ্যাঁ বন্ধুরা আপনার এটা রাতে ব্যবহার করবেন। আর সারারাত রেখে দিবেন।আর সকালে উঠে শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলবেন। আপনারা এটা একটা বায়ুরোধী পাত্রে রেখে ১৫ দিন পর্যন্ত এটা সংরক্ষণ করতে পারবেন। আর আপনারা এটা সপ্তাহে চার থেকে পাঁচবার ব্যবহার করতে পারবেন।