এসিডিটি দূর করার উপায়

আজকে আমি আপনাদের সাথে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এ কথা বলতে এসেছি। এসিডিটি, বুক জ্বালা, বদহজম চিরতরে কিভাবে নির্মূল করবেন?


আমরা সকলেই কোনোনা কোনো সময়ে এসিডিটি তে আক্রান্ত হয়েছি। পেটে তীব্র ব্যথা, জ্বলন, ফোলা ভাব, হেঁচকি, পেট ফাঁপা এসব গুলো এসিডিটির সাধারণ লক্ষণ। যদিও আমাদের তাৎক্ষণিক আরাম পাওয়ার জন্যে আমরা ডাক্তারের কাছে যাই এবং গাদা গাদা এন্টাসিড সেবন করি। এতে আপনাকে তাৎক্ষণিক স্বস্তি দিলেও দীর্ঘমেয়াদি স্বস্তি দিতে পারেনা। আজকে আমরা এমন কিছু ঘরোয়া টোটকা সম্পর্কে বলবো, যা আপনার দীর্ঘদিনের গ্যাস, অম্বল, বদহজম থেকে চিরতরে মুক্তি দিবে। শুধু তাই নয়, সাথে আপনার পাকস্থলীর ক্ষমতাও বাড়িয়ে দেবে বহুগুণ যাতে আপনার পছন্দের খাবার গুলো আপনাকে মিস না করতে হয় শুধুমাত্র গ্যাস, অম্বল আর বদহজমের ভয়ে। 

তাই চলুন, লেখাটি পড়তে থাকুন এবং অবশ্যই শেষ অব্দি পড়বেন কারন প্রত্যেকটি টিপস ই গুরুত্বপূর্ণ। 



এসিডিটি দূর করার উপায়,গ্যাস এসিডিটি দূর করার উপায়,গ্যাস্ট্রিক দূর করার উপায়,এসিডিটি দূর করার উপায়,গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা দূর করার উপায়,এসিডিটি,এসিডিটি দূর করার ঘরোয়া উপায়,গ্যাস্ট্রিক থেকে মুক্তির উপায়,পেটের গ্যাস দূর করার উপায়,পেটের গ্যাস বের করার উপায়,গ্যাস এসিডিটি বদহজম দূর করার উপায়,পেটের গ্যাস দূর করার ঘরোয়া উপায়,গ্যাস দূর করার সহজ উপায়,এসিডিটি দূর করার উপায়।,পেট থেকে গ্যাস দূর করার সহজ উপায়,পেটের গ্যাস দূর করার ঘরোয়া উপায়
এসিডিটি দূর করার উপায়


চলুন তবে জেনে নেয়া যাক সহজ ঘরোয়া উপায় গুলি কি কি:



১. কলা:


কলা পেট এবং পেটের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। কারন কলাতে ফাইবারের পরিমাণ অনেক বেশি যা হজম প্রক্রিয়া বাড়ায়। এগুলি পটাশিয়াম সমৃদ্ধ এবং পেটে শ্লেষমার উৎপাদন বাড়ায় যা অতিরিক এসিড গঠন প্রতিরোধ করে এবং অতিরিক্ত এসিড উৎপাদন এর ক্ষতিকারক প্রভাব গুলির বিরুদ্ধে লড়াই করে। প্রত্যেক দিন একটি করে পাকা কলা খেলে গ্যাস, বুক জ্বালা, বদহজমের মতো সমস্যা থেকে আপনি মুক্তি পাবেন চিরতরে। 



২. দুধ:


এটি একটি পরিচিত নাম, যা সবার ঘরেই পাওয়া যায়। আপনি হয়তো ভাবছেন দুধ কিভাবে গ্যাস বা বুকজ্বালা বা বদহজম থেকে নিরাময় করতে পারে? আপনি দুধের এই গুণাগুণ গুলি জানলে অবাক হয়ে যাবেন। দুধে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ এ ক্যালসিয়াম, যা একে হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য একটি সুপার ফুড তৈরি করে। তবে আপনি কি জানেন যে আপনার ওভার দা কাউন্টার এন্টাসিড গুলির প্রধান উপাদান ক্যালসিয়াম ও?

ক্যালসিয়াম পিএইচ ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং সঠিক হজমে সহায়তা করে। এই কারণে দুধ বুক জ্বালা, বদহজমের মতো সংবেদনশীলতা থেকে আপনাকে তাৎক্ষণিক স্বস্তি সরবরাহ করতে পারে। দুধে থাকা ক্যালসিয়াম ও এসিড তৈরি করে, বাধা দেয় এবং প্রতিরোধ করে এবং উৎপাদিত অতিরিক্ত এসিড ও শোষণ করে। যদিও মনে রাখবেন ঠান্ডা দুধ গরম দুধের চেয়ে কার্যকর এবং দুধে চিনি বা চকলেট পাউডার জাতীয় কোনো কিছুর সংমিশ্রণ করা চলবে না। 



৩. মৌরি:


মৌরি বীজের মধ্যে এনিতল নামক একটি যৌব থাকে যা পেটের জন্যে খুবই উপকারী এজেন্ট হিসেবে কাজ করে এবং বুক জ্বালা ও পেট ফাঁপা রোধ করে। এটি ভিটামিন, খনিজ এবং ডায়েটাল ফাইবার যুক্ত যা হজম প্রক্রিয়া টিকে সম্পন্ন করতে সহায়তা করে। এটাতে এন্টি আলসার বৈশিষ্ট্য থাকায় এটি পেটের আস্তরণ কে শীতল করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেও সহায়তা করে। গর্ভবতী মহিলাদের মধ্যে বদহজম এবং গ্যাস মোকাবেলায় মৌরির বীজ খুব কাজে আসে। গর্ভাবস্থায় প্রচুর গর্ভবতী মহিলার মারাত্মক বদহজম হয়। তবে তাদের প্রচুর খাদ্যসামগ্রী এবং ওষুধ সেবন থেকে নিষেধ করা হয়। বদহজম, গ্যাস এবং এসিডিটি মোকাবেলায় কার্যকর প্রাকৃতিক প্রতিকার হিসেবে মৌরি বীজ কাজ করে। এসিডিটির লক্ষণ গুলি হ্রাস করতে কয়েকটি মৌরি বীজ চিবিয়ে খান বা কয়েকটি  মৌরি বীজ জলে ভিজিয়ে চিবিয়ে খান বা কয়েকটি মৌরি বীজ জলে ভিজিয়ে সেই জল পান করুন। মৌরি বীজ গুলি চিবিয়ে নিন তাৎক্ষণিক উপশম পাবেন। 



৪. তুলসী:


তুলসী পাতা বা তুলসী প্রায় প্রত্যেকের ঘরের উঠানেই আপনি  এই গাছটি দেখতে পাবেন। শুধু এসিডিটির সমস্যায় নয়, আরো অনেক সমস্যা থেকেই সমাধান করে এই তুলসী। 

আজ আমরা আলোচনা করবো কিভাবে এই তুলসী ব্যবহার করে আপনি আপনার দীর্ঘদিনের গ্যাস বা বুক জ্বলা থেকে চিরতরে নিরাময় পাবেন। এটি পাকস্থলীর ভিতরে শ্লেষ্মা উৎপাদন করে। উৎপাদিত করে যা এসিডিটির সময় বুক জ্বালা এবং বমি বমি ভাব দূর করতে সাহায্য করে। আপনার পেটের এসিড কমাতে রোজ দুই থেকে তিনটি তুলসী পাতা চিবিয়ে খান। তুলসী পাতার এন্টি আলসার বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা গ্যাস্ট্রিক এসিডের উৎপাদন কে হ্রাস করে এবং গ্যাস উৎপাদন কমাতে সাহায্য করে। বদহজমের এবং গ্যাসের সমস্যার জন্যে আয়ুর্বেদিক ঔষুধ এর মধ্যে তুলসী পাতা কে ধন্বন্তরী বলে জানা হয়।




৫. আদা:


আদা হলো এমন একটি মূল্য বান বস্তু যা আমাদের প্রত্যেকের রান্না ঘরে পাওয়া যায়। আপনি হয়তো ভাবছেন এতে আবার মূল্যবানের কি আছে? তবে জেনে নিন। আদাতে পাওয়া যায় এমন উপাদান, যা সাধারণ সর্দি কাশি, বিভিন্ন হজম এবং অন্ত্রের অসুস্থতা খুব স্বল্প সময়ে নিরাময় করে থাকে। আদাতে এমন বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা এসিডিটি, কায়লরি ব্যাকটেরিয়া ট্রিগার করে, পেটের মধ্যে জ্বালা কমায় এবং বমি বমি ভাব হ্রাস করে এবং পেটের পেশী শান্ত করে। কাঁচা আদা বমি ভাব নিরাময়ে ও সহায়তা করে। বদহজমের জন্যে প্রচুর আয়ুর্বেদিক ঔষুধের মধ্যে আদা একটি সক্রিয় উপাদান। কাঁচা আদা আপনার চায়ের সাথে বা বেটে আপনি খেতে পারেন। গুরুতর বদহজম এবং এসিডিটি তে ভুগলে একটি আদাকে থেঁতো করে এবং তাতে লেবুর রস দু চামচ দিয়ে মিশ্রিত করুন এবং সেটিকে সামান্য জলের মধ্যে গরম করুন এবং তা প্রত্যেকদিন সকাল বেলায় এক চামচ করে সেবন করুন। এটি আপনার দীর্ঘদিনের গ্যাস, বদহজম, বুক জ্বালা থেকে খুব সহজেই আপনাকে মুক্তি দিবে। হয়তোবা মাত্র সাতদিনে আপনি মুক্তি পেতে পারেন। শুধু তাই নয়, এটি আপনার পাকস্থলীকে পরিষ্কার রাখবে এবং কোনোরকম এসিড উৎপন্ন হতে বাধা দেবে।



৬. রসুন:


অনেক লোকজন ই অবাক হয়ে যায় যে বদহজমের চিকিৎসার জন্যে রসুন একটি দুর্দান্ত প্রাকৃতিক প্রতিকার। রসুন আসলে এন্টি অক্সিডেন্ট গুলির একটি পাওয়ার হাউজ, যা স্পষ্টতই হৃদরোগের মতো একটি বড় রোগ কেও নিরাময় করতে পারে খুব সহজেই। তবে এটি এসিডিটির প্রতিষেধক হিসেবেও সমান শক্তিশালী। কাঁচা রসুন প্যাথোজেনিক মাইক্রো অর্গানিসম কে মেরে ফেলে যা গ্যাস্ট্র এন্টোরাইটিস সৃষ্টির প্রধান কারণ। আপনার প্রতিদিন এর খাবারে রসুন অন্তর্ভুক্ত করা আপনার পেটের স্বাস্থ্য কে আরো শক্তিশালী করতে পারে এবং বদহজম, এসিডিটি এবং বুক জ্বালার মতো রোগ থেকে আপনাকে চিরতরে মুক্তি দিতে পারে। তবে বেশি পরিমাণে রসুন খেলে তার পাশ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। সেই জন্যে প্রতিদিন এক কোয়া করে রসুন খাওয়াটাই স্বাস্থ্যের পক্ষে বেশি উপযোগী। 


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন