বেশির ভাগ মানুষ ই এখন আর আগের মতো স্মার্টফোন নিয়ে তেমন উত্তেজনা বোধ করেনা। কারন প্রতিটি স্মার্টফোন কোম্পানি বছর বছর একই ধরণের একঘেয়ে আপডেট দিয়ে গ্রাহকদের সন্তষ্ট করে রাখার চেষ্টা করে। তবে টেসলা তার পাই স্মার্টফোন এর মাধ্যমে তার ভক্তদের মধ্যে ইদানিং ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছে। পাই ফোনে যে শুধু বিস্ময়কর স্পেসিফিকেশনস ই আছে তা কিন্তু নয়, এই ফোনে রয়েছে টেসলার নিজস্ব ইকোসিস্টেম প্রযুক্তি। তা টেসলার এই ইকোসিস্টেম তার গ্রাহকদের কি কি সুবিধা প্রদান করে? আর এই প্রযুক্তি ঠিক কতটা আধুনিক? টেসলা পাইফোন কিভাবে তার নিজস্ব ইকোসিস্টেম এর মাধ্যমে দুনিয়াকে জয় করবে তা জানতে হলে লেখাটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
যারা অতীতে এপলের নতুন ফোনটি সবার আগে হাতে পাওয়ার জন্য রাতভর অপেক্ষা করতেন তারা যদি এই লেখাটি পড়েন তাহলে সেই পুরোনো দিনের উত্তেজনাময় অনুভূতি কিছুটা হলেও অনুভব করতে পারবেন। সেই সময় এপলের নতুন ফোন বাজারে ছাড়ার রাতে মানুষ ঘুমানোর জন্যে বিছানা কম্বল নিয়ে এসে এপলের শোরুমের সামনে ক্যাম্প করতেন যাতে করে দোকানে বিক্রি শুরু হওয়ার সাথে সাথেই তারা ফোনটি কিনতে পারেন। তবে বর্তমানে অনলাইনে অগ্রিম বুকিং এর ব্যবস্থা চলে আসায় এখন আর মানুষের মাঝে সেই আগের উত্তেজনা বিরাজ করেনা। সত্যি কথা বলতে কি স্মার্টফোন এখন মানুষের হাতে হাতে চলে আসায় এখন আর মানুষের মধ্যে স্মার্টফোনকে ঘিরে সেই আগের মতো উত্তেজনা বোধ করার মতো কিছুই নেই। কিন্তু টেসলা পাই ফোন অন্যান্য সকল স্মার্টফোন থেকে একেবারে আলাদা হতে যাচ্ছে।
টেসলা পাইফোন |
বর্তমান বিশ্বে ইলেকট্রিক কার আর সোলার প্যানেল এর মার্কেটে একচেটিয়া প্রভাব বিস্তার করা শেষে টেসলা এখন স্মার্টফোন মার্কেট এ যোগ দিতে যাচ্ছে। ইলন মাস্কের নেতৃত্বে টেসলা পাই ফোন ইতিমধ্যেই স্মার্টফোন মার্কেটে খুবই সাড়া ফেলে দিয়েছে। টেসলা পাই ফোনের মতো ফিচারফুল স্মার্টফোন বর্তমান বিশ্বে আর একটিও নেই। এর পিছনে কারণ হচ্ছে ইলন মাস্ক টেক দুনিয়ার নামকরা সব কোম্পানির থেকে সবচেয়ে আধুনিক সব প্রযুক্তি এনে তার এই পাই ফোনে যুক্ত করার পিছনে কাজ করে যাচ্ছেন । আমরা আশা করি তার এই প্রচেষ্টা স্মার্টফোন বাজারে প্রধান প্রধান প্রতিযোগীদের সাথে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বীতার সুযোগ করে দিবে। এই স্পেকস গুলি টেসলার ঘোষণাকৃত ইকোসিস্টেম এর খুবই ছোট একটি অংশ। তারা কিভাবে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী স্মার্টফোন তৈরি করতে যাচ্ছে সে বিষয়ে আমরা একটু পরেই বিস্তারিত আলোচনা করবো। টেসলা পাইফোন অনেক আকর্ষণীয় এবং এডভান্সড ফিচারে পরিপূর্ণ থাকবে। এর মধ্যে কিছু ফিচার ইতিমধ্যে অনেক ফোন কোম্পানি তাদের ফোনে ব্যবহার করছে কিন্তু এদেরকে কিভাবে আরো অনেক বেশি আকর্ষণীয় করে উপস্থাপন করা সম্ভব এ বিষয়ে তারা খুব একটা বেশি জানেনা। উদাহরণ স্বরূপ আমাদের ফোনের পিছনের ক্যামেরার কথাই ধরুন। পাইফোনেই যে সবার আগে একাধিক ব্যাক ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়েছে এমনটি কিন্তু নয় কিন্তু পাইফোন ই প্রথমবারের মতো একেক ধরণের কাজের জন্য ভিন্ন ভিন্ন লেন্স ব্যবহার করতে যাচ্ছে।
টেসলা পাইফোনে ভিডিও ধারণের জন্যে একটি লেন্স আবার কাছের ও দূরের ছবি তোলার জন্য আলাদা আলাদা লেন্স ব্যবহার করা হবে। অন্যান্য ফোন নির্মাতারা স্ক্রিনের নীচে নতুন ধরণের ক্যামেরা স্থাপনের কাজে খুবই সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। এককথায় বলা গেলে কোনো কোম্পানি আন্ডার স্ক্রিন ক্যামেরা দিয়ে এখনো খুব একটা সন্তোষজনক ফলাফল অর্জন করতে পারেনি। অন্যদিকে টেসলা দাবি করছে যে তাদের তৈরি নতুন ফোনের আন্ডার স্ক্রীন ক্যামেরা খুবই শার্প এবং উজ্জ্বল ছবি তুলতে পারবে। এবার চলুন টেসলার ইকোসিস্টেম সম্পর্কে আবারো আলোচনা করা যাক। টেসলার পাইফোনে ব্যবহৃত ইকোসিস্টেমটি অনেক কোম্পানির সাহায্যে বিশাল ব্যাপ্তি নিয়ে তৈরি করা হয়েছে। এই কাজে টেসলার পাশাপাশি ইভি বা ইলেকট্রিক ভেইকল বাণিজ্যে নামকরা অনেক কোম্পানি একসাথে কাজ করেছে। উদাহরণ স্বরূপ ইলন মাস্কের বিশ্বখ্যাত স্পেসএক্স এবং নিউরালিঙ্ক কোম্পানির কথাই ধরা যাক। স্পেসএক্স প্রতিনিয়ত উন্নত স্পেসশিপ নিয়ে গবেষণা করে এবং নিয়মিতভাবে রকেট উৎক্ষেপণ করে। অন্যদিকে নিউরালিঙ্ক মানুষের ব্রেইনের সাথে প্রযুক্তির সমন্নয় ঘটানোর চেষ্টা নিয়ে গবেষণা করে যাচ্ছে। টেসলা পাইফোনে এই কোম্পানি দুইটির বিভিন্ন প্রযুক্তিরও সমন্নয় ঘটানো হবে। এই কোম্পানি দুইটি টেসলা পাইফোন ইকোসিস্টেম এ কিভাবর অবদান রাখতে যাচ্ছে এবং কেন এই ফোনটিকে অন্যান্য ফোন থেকে একেবারে আলাদা বলে প্রচার করা হচ্ছে তা নিয়ে এখন আমরা আলোচনা করবো।
সোলার এনার্জি ইন্ডাস্ট্রিতে যে এখন টেসলাই সবার সেরা তা নিয়ে আসলে নতুন কিছুই বলার নেই। তাদের হাতে সর্বাধুনিক সোলার প্যানেল প্রযুক্তি থাকায় তারা খুব সহজেই পাইফোনে সোলার চার্জিং প্রযুক্তি সংযুক্ত করতে পেরেছে। এর কারণে আপনি যদি কোনো কারণে বিদ্যুতের সাহায্যে ফোনটিকে চার্জ দিতে নাও পারেন সেই ক্ষেত্রে আপনি সূর্যের আলো ব্যবহার করতে পারবেন অনায়াসেই। এই ফিচারটি এখন পর্যন্ত অন্য কোন ফোনে নিয়ে আসা হয়নি। এছাড়াও টেসলা তাদের পাইফোনে খুবই উন্নত প্রযুক্তির ব্যাটারি ব্যবহার করেছে। টেসলা তাদের ইলেকট্রিক কারে যেই প্রযুক্তির ব্যাটারি ব্যবহার করে পাইফোনেই সেই একই প্রযুক্তির ব্যাটারি ব্যবহার করা হবে। এই কারনে এই ফোনে দীর্ঘ সময় ধরে চার্জ থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই ফোনে নানাবিধ অত্যাধুনিক ফিচার থাকার পরেও একবার চার্জ দিয়ে বেশ কয়েকদিন ব্যবহার করা যাবে। এর সাথে যদি আবার টেসলার সোলার চার্জিং এর কথা আপনি মাথায় রাখেন তাহলে আপনি এরই মধ্যে বুঝতে পারবেন যে টেসলার হাতে এরই ভেতর অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বীদের চেয়ে অনেক উন্নত একটি স্মার্টফোন চলে এসেছে।
তবে এখানেই শেষ নয়। টেসলার পাইফোন তৈরি পিছনে টেসলার ইভি বা ইলেকট্রিক ভেইকল ডিভিশনের আরো অনেকগুলো অবদান রয়েছে। টেসলা ইলেকট্রিক কারের ফাস্ট চার্জিং সিস্টেম অন্যান্য ইলেকট্রিক কার থেকে অনেকটাই উন্নত। তাদের সুপার চার্জিত নেটওয়ার্ক পুরো দুনিয়ায় ছড়িয়ে রয়েছে। তারা বর্তমানে ছোট এবং মাঝারি আকারের ইলেকট্রিক ট্রাক তৈরি করেছে। এই ইলেকট্রিক ট্রাকের অপেক্ষাকৃত বড় ব্যাটারীকে দ্রুত চার্জ দিতে টেসলা এখন মেগা চার্জিং নেটওয়ার্ক ব্যবহারের চেষ্টা চালাচ্ছে। এই প্রযুক্তিকেই তারা ছোট করে পাইফোনে ব্যবহার করবে যার ফলে এই ফোন খুবই দ্রুত গতিতে চার্জ হতে সক্ষম হবে। টেসলা তাদের ইলেকট্রিক কার তৈরিতে যেই প্রযুক্তি গুলো ব্যবহার করে ঠিক সেই একই প্রযুক্তি পাইফোনে ব্যবহার করায় ব্যবহারকারীরা তা সম্পর্কে জানতে পারছেন এর ফলে দুটি প্রোডাক্ট ই ভবিষ্যতে উপকৃত হবে।
এন্ড্রয়েড ও আইওএস এর জন্যে টেসলার বিভিন্ন এপ আছে কিন্তু উভয় প্ল্যাটফর্ম এই এটি থার্ড পার্টি এপ হওয়ার কারণে এর ব্যবহার অনেকটাই সীমাবদ্ধ। অন্যদিকে টেসলা পাইফোনে এই এপ ব্যবহারের মাধ্যমে গ্রাহকেরা খুব সহজেই তাদের টেসলা কারকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। এছাড়াও তারা পাইফোনের সাহায্যে তাদের টেসলা কারের সকল ক্যামেরাকে একটিভ রাখতে পারবে এমনকি সর্বদা নজর রাখতেও সক্ষম হবেন। ধরুন আপনি আপনার টেসলা কারকে রেখে দূরে কোথাও ছুটি কাটাতে গেলেন। আপনি যদি চান আপনার পাইফোনের সাহায্যে এত দূর থেকেও আপনার গাড়িটির আশেপাশে কি ঘটে চলেছে তা দেখতে পারবেন। আর আপনার গাড়িটি যদি চুরিও হয়ে যায় তাহলেও আপনি এই এপের মাধ্যমে খুব সহজে গাড়ির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে চোর সমেত গাড়িটিকে নিয়ে নিকটস্থ পুলিশ স্টেশন পর্যন্ত পৌঁছে দিতে পারবেন। এপের মাধ্যমে আপনি গাড়ির দরজা লক করে দেয়ায় চোর চাইলেও পালাতে পারবেনা। বিষয়টি খুবই মজার তাই না?
এবার টেসলার ইভি বিজনেস থেকে তাদের সেমি কন্ডাক্টর চিপ বিজনেসের ব্যাপারে সামান্য কথা বলা যাক। আপনারা হয়তো অনেকেই জানেননা টেসলা বর্তমানে সেমি কন্ডাক্টর চিপস তৈরির দিকেও নজর দিয়েছে। কিছুদিন পূর্বে বিশ্বব্যাপী চিপস স্বল্পতার কারণে টেসলার গাড়ি উৎপাদন অনেকটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। তখন থেকেই তাদের নিজস্ব চিপস তৈরির দিকে মনোনিবেশ করেন। টেসলা এখন খুবই আধুনিক ও দক্ষ চিপস তৈরি করে বিশ্বব্যাপী খ্যাতি অর্জন করেছে। এই চিপ টেসলা পাইফোনে ব্যবহার করা হবে যার কারণে এই ফোনটি খুবই শক্তিশালী একটি ডিভাইস এ পরিণত হবে যা প্রায় যেকোনো ধরণের টাস্ক খুবই সহজে পরিচালনা করতে পারবে। টেসলা পাইফোনে প্রসেসিং স্পিড বাজারের অন্যান্য ফোন থেকে অনেকটাই বেশি হবে।
এছাড়াও পাইফোনে টেসলা কোম্পানির আরো অনেক প্রযুক্তি যোগ করা হবে। টেসলা এখন বাসার ছাদে ব্যবহারের জন্য উন্নত সোলার প্যানেল তৈরি করে যা সম্পর্কে আমরা একটু আগেই কিছুটা আলোচনা করেছি। এই প্যানেল ব্যবহারের মাধ্যমে আপনি একদম বিনামূল্যেই নিজস্ব বিদ্যুৎ তৈরি করে নিতে পারবেন। টেসলা পাইফোনের মাধ্যমে আপনি দূরে বসেই আপনার বাসার বিদ্যুৎ উৎপাদন পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন। আবার ইচ্ছামত বন্ধ ও রাখতে পারবেন। যখন আপনার বাসায় প্রয়োজনের চাইতে বেশি বিদ্যুৎ তৈরি হয়ে যাবে তখন আপনি চাইলে সেই বিদ্যুৎ পাওয়ারঅল নামক আপনার টেসলার ব্যাটারি স্টোরেজ সিস্টেমেও জমা রাখতে পারবেন। এই পুরো প্রক্রিয়া টি আপনি দূর থেকে সহজেই টেসলা পাইফোনের সাহায্যে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হবেন। আপনার ব্যাটারি সম্পূর্ন চার্জ হলে বা চার্জ শেষ হয়ে গেলে আপনার পাইফোনে নোটিফিকেশন এলার্ট পৌঁছে যাবে। ইলন মাস্কের স্পেস কোম্পানি স্পেসএক্সও টেসলা পাইফোনের ইকোসিস্টেমে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে চলেছে। আপনি হয়তো ভাবতে পারেন একটি ফোন তৈরির সাথে একটি স্পেস কোম্পানির কি সম্পর্ক থাকতে পারে? তবে স্পেসএক্স এই প্রথমবারই মাস্কের অন্যান্য কোম্পানিকে সাহায্য করছে তা কিন্তু নয়।
টেসলার সাইবার ট্রাক তৈরিতে যেই স্টিল ব্যবহার করা হয়েছে স্পেসএক্স মঙ্গলযাত্রার জন্যে তৈরি করা স্পেসশিপে সেই একই স্টিল ব্যবহৃত হচ্ছে। এছাড়াও টেসলা সবচেয়ে দ্রুত গতি সম্পন্ন গাড়ি রোড স্টার দুই কপালশন সিস্টেম তৈরিতেও স্পেসএক্স গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। স্পেসএক্স তাদের স্টার লিঙ্ক নামক স্যাটেলাইট এর সাহায্যে টেসলা অটোসিস্টেম এ যুক্ত হতে যাচ্ছে। আপনারা হয়তো অনেকেই এই স্টারলিংক সম্পর্কে জানেন। ইলন মাস্ক মূলত তার মঙ্গল অভিযানের ব্যয়ের পিছনে অর্থ সংগ্রহের মাধ্যম হিসেবে এই স্টারলিংকের যাত্রা শুরু করেছিলেন। টেসলা পাইফোন এই স্টারলিংকের আল্ট্রা হাই স্পিড স্যাটেলাইট ইন্টারনেট এর সাথে সরাসরি যুক্ত হতে পারবে। এই ফোনে অত্যন্ত দ্রুত গতির ডাউনলোড ও আপলোড স্পিড থাকবে যা অন্যান্য ফোনে কোনোভাবেই আশা করা যাবেনা। স্টারলিংকের ইন্টারনেট সার্ভিস স্যাটেলাইট নির্ভর হওয়ায় আপনি বিশ্বের যেই প্রান্তেই থাকুন না কেন সিগনাল নিয়ে আপনাকে কোনই চিন্তা করতে হবেনা।
স্টালিংকের মাধ্যমে আপনি বিশ্বের যেকোনো দুর্গম অঞ্চল থেকেও ইন্টারনেট এর সাহায্যে সংযুক্ত হতে পারবেন। স্যাটেলাইট ইন্টারনেট এর আরেকটি সুবিধা হচ্ছে আপনি ফোনটিকে সিমকার্ড ছাড়াই ব্যবহার করতে পারবেন। সেলুলার নেটওয়ার্ক না থাকলেও আপনি সহজেই ম্যাসেজ আদান প্রদান করতে সক্ষম হবেন। যারা ভবিষ্যতে মঙ্গল গ্রহে যাবার স্বপ্ন দেখছেন তারা জেনে খুশী হবেন যে স্পেসএক্স মঙ্গল গ্রহেও স্টারলিংক স্থাপনের চিন্তা ভাবনা করছে। মঙ্গল অভিযাত্রীদের কাছে শুধু মাত্র একটি পাইফোন থাকলেই তারা পৃথিবীর সাথে অনায়াসেই যোগাযোগ রাখতে পারবেন। পাইফোন ইকোসিস্টেমে নিউরালিঙ্ক ও অবদান রাখবে। মানুষের মস্তিষ্কে চিপ বসানোর কথা আসলেই সাধারণ মানুষ তো বটেই অনেক বিশেষজ্ঞ পর্যন্ত দ্বিধা বোধ করেন। তবে মাস্কের নিউরালিঙ্ক মানুষের মস্তিষ্কে চিপ লাগানোর মাধ্যমে শুধুমাত্র মানুষের উপকারই করতে চাচ্ছে।
পরবর্তীতে বানরের উপরেও এই পরীক্ষা চালানো হয়েছিল। টেসলার পক্ষ থেকে দাবি করা হয় এই চিপের সাহায্যের বানরেরা পিং পং খেলাতেও সক্ষম হয়েছিল। মাস্ক বলেন যে এই চিপ ইমপ্ল্যান্ট এর সাথে কোনো স্বাস্থ্যঝুঁকি নেই এবং এই চিপ সহজেই খুলে ফেলা যায়। নিউরালিঙ্ক ২০২২ সালে মানুষের উপরেও পরীক্ষা শুরু করবে বলে জানিয়েছে। তাদের এই পরীক্ষা নিরীক্ষা র জন্যে অনেক স্বেচ্ছাসেবক ও প্রস্তুত রয়েছে। পাইফোনে নিউরালিংকের এই প্রযুক্তিও থাকবে বলে জানা গিয়েছে। এর মাধ্যমে গ্রাহকের মস্তিষ্ক থেকে বিভিন্ন রকমের সিগনাল পাইফোনে ট্রান্সমিট হতে থাকবে। এছাড়াও টেসলা দাবি করছে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে গ্রাহকেরা পাইফোন স্পর্শ না করেই শুধু তাদের চিন্তার মাধ্যমে ফোনটিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। টেসলা পাইফোন এতটাই শক্তিশালী যে এটি মানুষের মস্তিষ্ক থেকে সিগনাল গ্রহণ করে তাকে মানুষের বোধগম্য ভাষায় রূপান্তরে সক্ষম হবে। বর্তমান বিশ্বে এমন কোনো ফোন নেই যারা ঠিক এই একই কাজ করে দেখাতে পারে। টেসলা পাইফোন তার বিস্তৃত ইকোসিস্টেমের মাধ্যমে শীঘ্রই বিশ্বজুড়ে স্মার্টফোন দুনিয়ায় আধিপত্য বিস্তার করে ফেলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।