গুগল সার্চ এর প্রতিদ্বন্দী আসছে অ্যাপল সার্চ

বছরের পর বছর ধরে গুগল সার্চ ইঞ্জিন দুনিয়ার শীর্ষে অবস্থান করছে। ইয়াহু (Yahoo) এবং বিং (Bing) এর মতো যোগ্য পতিপক্ষ গুগলকে (Google) তার শীর্ষ স্থান থেকে সরিয়ে দেওয়া জন্য ব্যাপক চেষ্টা চালিয়েছে। কিন্তু শীর্ষে থাকাকালীন সময়ে  গুগলকে অনেক প্রাতিযোগীতার মোকাবেলা করতে হয়েছে এবং তারা এসময় অনেক অনেক কম্পানির উত্থান পতন দেখেছে। কিছু সময়ের জন্য মনে হয়েছিল কেউ এই মাল্টিবিলিয়ন ডলারের করপোরেশনকে পরাজিত করতে পারবে না। কিন্তু সেটা বেশি দিনের জন্য না। মনে হয় গুগলের যোগ্য প্রতিপক্ষের খোঁজ মিলেছে। হয়তোবা, বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান ব্র্যান্ড অ্যাপল তাদের অবশেষ পরাজিত করলেও করতে পারে।

গত কয়েক বছরে গুগল বিশ্বের শক্তিশালী এবং প্রভাবশালী প্রযুক্তি কোম্পানি গুলোর মধ্যে একটি হয়ে উঠেছে। গুগল সার্চের  আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ করে অ্যাপল তার নিজস্ব সার্চ ইঞ্জিনের ওপর কাজ করছে বলে মনে হচ্ছে। আপনার কি বিশ্বাস হয় যদি এমন কোন কম্পানি থাকে  যা ইন্টারনেট সার্চ ইঞ্জিনের রাজাকে হারাতে পারবে  তবে তা হল অ্যাপল সার্চ

apple search,google search alternative,অ্যাপল সার্চ,apple,সার্চ ইঞ্জিন,new search engine,yahoo search engine,bing search engine,new search engine,apple search ads,apple search,apple search engine,apple search ads advanced,apple search ads best practices,apple,apple search ads tutorial,apple search ads optimization,apple ad search,search,apple search ads basic,apple new search engine,search ads,app store search ads,apple search ads cost,apple search ads help,what is apple search ads,app search ads,what are apple search ads,apple search ads account,apple search ads bidding
Apple VS Google


সৌভাগ্য ক্রমে অন্যান্য নতুন সার্ভিস গুলো তুলনায় অ্যাপল একদমই আলাদা। এটি আপনার ব্যাংক আ্যকাউন্ট এর কোন ক্ষতি করবে না। আপনি হয়তো জানেন না, অ্যাপলের সমস্ত ডিভাইসের  ডিফল্ট সার্চ ইঞ্জিন হওয়ার জন্য বহু বছরের চুক্তির ভিত্তিতে  গুগল   অ্যাপলকে   ১২ বিলিয়ন ডলার প্রদান করে। যা অত্যন্ত বড় একটি অংক। ইউএসএ আইন বিভাগ গুগল এর বিরুদ্ধে আস্থা ভঙ্গের একটি তদন্ত শুরু করার পরে প্রথমে বারের মতো অ্যাপলের সার্চ ইঞ্জিনের খবরটি প্রকাশ করে । তখন ইন্টারনেটকে গেট কিপিং মাধ্যমে অন্যান্য প্রতিযোগিদেরকে  প্লাটফর্ম থেকে দূরে সরিয়ে রাখে। এই কারণেই আইন প্রয়োগকারী সংস্থা গুলোকে নিজের পিছন থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার জন্য অ্যাপলকে তার নিজস্ব সার্চ ইঞ্জিনের পিছনে কাজ শুরু করতে হয়।

 

অ্যাপল শীঘ্রই গুগলের সাথে তাদের ব্যবসায়ীক সম্পর্কে  অবসান ঘাটাবে বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও এটি বেশ সাহসী পদক্ষেপ। তবে আমার মনে করি এর মধ্যেমে ভাল কিছুও হতে পারে। আমার বিশ্বাস করি অ্যাপল সার্চ গুগল সার্চকে পরাজিত করবে।

চলুন এর পিছনে কারণ গুলি একবার দেখে নেওয়া যাক। গ্রাউন্ড  আপ  থেকে ওয়েব তৈরি  ইন্ডেক্স করার ক্ষমতা যে আল্প কয়েকটি কম্পানির আছে তার মধ্যে অ্যাপল অন্যতম।  গুগল সার্চ ইঞ্জিনের একটি যোগ্য প্রতিপক্ষ গড়ে তুলতে কয়েক বছর সময় লাগতে পারে। কিন্তু অ্যাপলের মুনাফা এ বছরের ৫৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাতে পারে। তাই বলা যায় কম্পানিটি দীর্ঘ মেয়াদী বিনিয়োগ করতে পারবে।অ্যাপলের কাছে ইতিমধ্যেই সার্চ ইঞ্জিন তৈরির প্রযুক্তি ও যথেষ্ট লোকবল রয়েছে। ২০১৫ সালে অ্যাপল  অ্যাপলবট নামে একটি ওয়েব   ক্রাউলার এর অস্তিত্ব প্রকাশ করেছিল। 


অ্যাপলবট  অনলাইন প্লাটফর্মে একটি বিশাল ডাটাবেজ তৈরী করে। যা যেকোন সার্চ ইঞ্জিনের ভিত্তি তৈরি করতে সক্ষম।। বিশেষজ্ঞদের মতে  বর্তমানে  অ্যাপলবটের গতিবিধি অনেকটা এগিয়ে আছে। যখন ক্রাউল  রেট বেরে যায় তখন বোঝা যায় যে কম্পানিটি  আরো বেশি তথ্য সংগ্রহের জন্য চেষ্টা করছে। যদিও কিছু কিছু কোম্পানিতে কাছে বিগ জিকে টপকে যাওয়ার মত অর্থিক সামর্থ্য আছে। কিন্তু সত্যিকার শুধুমাত্র অর্থে অ্যাপলের  মতো   অল্প কয়েকটি কম্পানির কাছেই গুগলের সাথে প্রতিযোগিতায় নামার অর্থ যথেষ্ট পরিমাণ রয়েছে।

এবার অ্যাপলের ইকোসিস্টেম নিয়ে কথা বলা যাক।ইয়াহু বা বিংশ এর চাইতে অ্যাপল বর্তমানে খুব সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে কারণ তারা আইফোন ও আইওএস এর  ডিফল্ট  ব্রাউজারকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে । এই কারণে তারা যেহেতু  তারা তাদের কোটি কোটি ব্যবহারকারী কাছ থেকে সহজেই অনলাইন সার্চ ডেটা সংগ্রহ করতে পারছে। বর্তমানে বিশ্বে অ্যাপলের এক বিলিয়নের ও বেশি ডিভাইস ব্যবহার করা হচ্ছে। অ্যাপল যদি তার নিজস্ব সার্চ ইঞ্জিন বানাতে চায় তবে তা খুব একটা কঠিন হবে না। কারণ প্রযুক্তিগত কাজের  অ্যাপলের একটি নির্ভরযোগ্য টিম এবং প্রযোজনীয় সকল অভিজ্ঞতাই আছে।

অ্যাপল ইতিমধ্যে তার সার্চ টুল গুলো জন্য পরীক্ষা নিরীক্ষা শুরু করেছে। আইওএস১৪  আপডেটর মাধ্যমেঅ্যাপল তার নিজস্ব সার্চ ইঞ্জিনের ফলাফল উপস্থাপন করা শুরু করেছ। যা ব্যবহারকারীদের গুগলের নিয়ে যাওয়ার পরিবর্তে সরাসরি ওয়েবসাইটের সাথে সংযুক্ত করে দেয়। তবে এটি কেবলই তাদের সার্চ ইঞ্জিন তৈরির প্রথম পদক্ষেপ। বিশেষজ্ঞদের মতে অ্যাপলোর ওয়েব সার্চিং এর সক্ষমতা কম্পানিটি আভ্যন্তরীণ উন্নয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ রাখবে। একইসাথে এটি গুগলের  উপর একটি পূর্ণাঙ্গ আক্রমণের ভিত্তি তৈরি করতে পারবে। সম্প্রতি সময়ে অ্যাপলের শীর্ষস্থানীয় কর্মচারীদের মত বদলে কারণেও তারা আলোচোনায় এসেছে। অ্যাপল  তাদের কম্পানির কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার  দক্ষতা ও ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্টকে উন্নত করার লক্ষ্যে গুগলের হেড ওফ সার্চ ইঞ্জিন  জন গিয়ানন্দ্রিয়া আট বছরের জন্য নিয়োগ দিয়েছে।

এছাড়াও অ্যাপল  সম্প্রতি  সার্চ ইঞ্জিনের বিষয়ে দক্ষ ইঞ্জিনিয়ারদের বিষয়ে চাকরি বিজ্ঞাপন দিয়েছে। যার সার্চ টেকনোলজির বিকাশে সরাসরি কাজ করছে। অ্যাপল একটি দক্ষ সার্চ ইঞ্জিন তৈরি করতে প্রয়োজনীয় জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা সম্পন্ন একটি টিম গঠনের লক্ষ্যে খুব কঠোর পরিশ্রম করে  যাচ্ছে। অ্যাপল তার ডিজাইনে গোপনীয়তা রক্ষা করার কারণেও আলোচনায় এসেছে।

এখন কথা হচ্ছে কীভাবে গুগলের মতো ডাটা মতো ডাটা জয়েন্টের সাথে প্রতিযোগিতায় নামা সম্ভব?
এর উত্তর আসলে খুবই সহজ। বিশ্বো জুড়ে ইন্টারনেট জগৎতে  প্রাধান্য বিস্তারের লক্ষ্যে প্রচুর পরিমাণ ডাটাকে তাদের নিয়ন্ত্রণে রেখে। যে কারণে তাদের প্রয়াই ডাটা হাঙ্গরি  ইঞ্জিন নামে ডাকা হয়। অ্যাপল খুব সহজেই গুগলের এই র্দূনামকে তাদের সুবিধার্থে কাজে লাগাতে পারে। ব্যবহারকারীদের প্রাইভেসি রক্ষার্থে কম্পানিটির দৃঢ় অবস্থান  এবং বিজ্ঞাপন যুক্ত বিভিন্ন সেবার সাথে একমত না থাকায় অ্যাপল তার নিজস্ব সার্চ ইঞ্জিন তৈরি করতে চাচ্ছে।

নিজেদের এ সার্চ ইঞ্জিনের মাধ্যমে তারা তাদের নিজস্ব গ্রাহকদের নিজস্ব প্রাইভেসি সম্পর্কে গ্যারান্টি দিতে পারবে। তবে অ্যাপল যদি তাদের গ্রাহকদের  ডাটা সংগ্রহ নাই করে। তাহলে তারা কীভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামবে? সে বিষয়টি এখনো স্পষ্ট নয়। গুগল মূলত তাদের ব্যবহারকারীদের সার্চ ডাটা থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করে তাদের সার্চ ইঞ্জিনকে আপডেট করে এবং এর মধ্যমে তারা তাদের  গ্রহকদের আরো নিখুঁত সার্চকৃত  ডাটা প্রর্দশন করেতে পারে

সবকিছু দেখে মনে হচ্ছে গুগলের সাথে প্রতিদ্বন্দীতা করার আগে বেশ কিছু ব্যপার আগে থেকে  ঝালাই করে নিতে হবে। কিন্তু আমরা নিশ্চিত যে কেউ যদি কাজটি আসলে করতে সক্ষম হয় তবে সটি হচ্ছে অ্যাপল । অ্যাপল কম্পানির মার্কিট যুক্তরাষ্ট্রের স্মার্টফোন প্রস্তুতকারক হিসাবে নিজেদের শক্ত অবস্থান তৈরি করেছে।অ্যাপলের ম্যাকবুক এবং আইপ্যাড গ্রাহকদের মধ্যে একটি তুমুল জনপ্রিয় এবং বর্তমান প্রজন্ম অ্যাপল ইকোসিস্টেমকে  খুবই পছন্দ করে। ফলস্বরূপ অ্যাপলের গ্রাহকেরা তাদের সার্চ ইঞ্জিন পরিবর্তন নিয়ে খুব একটা চিন্তিত নয়। ভবিষ্যতে কোটি কোটি স্মার্টফোনের   আর্টিফিশিয়াল সার্চ ইঞ্জিন হিসাবে  গুগল সার্চ ইঞ্জিনের পরিবর্তে সিরিজে জনপ্রিয় করা লক্ষ্য অ্যাপল এখন থেকে তাদের প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করে দিয়েছে। তারা যদি খুব দ্রুত গতিতে নির্ভুল সার্চ ডাটা নিশ্চিত করতে পারে। তাহলে তারা খুব সহজেই সর্বসাধারণের নিকট তাদের আস্থা ধরে রাখতে পারবে।

তবে প্রশ্ন  হচ্ছে গুগল এর মধ্যে  সার্চ ইঞ্জিন দুনিয়ার যে পরিমাণ সাফল্য অর্জন করেছে তা অ্যাপল কীভাবে দ্রুততম সময়ে মধ্যে অর্জন করতে সক্ষম হবে?
অ্যাপল এর জন্য  একটি পজিটিভ দিক হচ্ছে তাদের তৈরিকৃত সার্চ ইঞ্জিনের গুগলের  চাইতে উন্নত না হলেও চলবে। বেশিরভাগ অ্যাপলের গ্রাহক তাদের কম্পানির ওপর আস্থা রেখে কোন রকম অভিযোগ ছাড়াই সাদরে বরণ করে নিবে। বিশ্ব জুড়ে অ্যাপল এর অগনিত ভক্ত রয়েছে । তারা তাদের সার্চ ইঞ্জিনের সকল সুবিধা দুনিয়ার জুড়ে সকল অ্যাপল ডিভাইসের প্রদান করতে পারবে। তবে ভবিষ্যতে  তাদের সার্চ ফিচারটিকে গুগলের থেকে অবশ্যই অত্যাধুনিক করতে হবে। 

বর্তমানে বিশ্বের গুগলের পরিবর্তে  ইয়াহু বা বিং ব্যবহার করে না তার পিছনে যৌক্তিক কিছু কারণ আছে। এই সার্চ ইঞ্জিনই গুলি গুগল এর মতো একই রকম ভাবে মান বা ব্যবহারকারী জন্য কোন সুবিধা প্রদান করে না। একটি সার্চ ইঞ্জিনের বিকাশ এবং রক্ষণাবেক্ষণ করা একটি অতি কঠিন কাজ এবং  গুগলের মতো একটি শক্তিশালী সার্চ ইঞ্জিন তৈরি করাটা খুবই সময় সাপেক্ষো ব্যপার। তবে অ্যাপলের কাছে  একটি সফল সার্চ ইঞ্জিন তৈরি করার জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা , মেধা ও ফান্ডিং এর কোনটারই অভাব নেই। তবে দিনশেষে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ফলাফল কেমন হবে তা আগে থেকে জানা কোন উপায় নেই।

হয়তো বা অ্যাপল এমন একটি সার্চ ইঞ্জিন তৈরি করবে যা কিনা বিশ্বকে কাপিয়ে দিয়ে বছরের পর বছর রাজত্ব করে যাবে।
অন্যদিকে গুগল হয়তো সার্চ ইঞ্জিনের দুনিয়ার নিজের রাজত্ব ধরে রেখে আমাদেরকে আরো বহুদিন সেবা দিয়ে যাবে।
শুধু সময়ই  বলতে পারবে এই  দুই টেক জায়ান্টের মধ্যে দ্বন্দ্ব যুদ্ধ কোন দিকে মোড় নিবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন