বিটকয়েন হলো সবথেকে জনপ্রিয় ক্রিপ্টোকারেন্সি। বর্তমানে একটি বিটকয়েনের মূল্য বাংলাদেশি ৪৪৫০০০০ টাকার থেকেও বেশি (এটার দাম সবসময়ই ওঠানামা করে অনুগ্রহ করে সঠিক দামটি জেনে নেবেন)। এটি একধরনের ডিজিটাল মুদ্রা। যেকোনো ব্যক্তি নিজের পরিচয় গোপন রেখে বিটকয়েনের লেনদেন করতে পারে। অনেকেই বিটকয়েন কে ভবিষ্যতের মুদ্রা মনে করেন। আজকের এই লেখায় বিটকয়েন সম্পর্কে আলোচনা করা হবে।
বিটকয়েন |
২০০৮ সালের ১৮ আগষ্ট bitcoin.org ডোমেইন কি নিবন্ধিত হয়েছিল। সেই বছরই নভেম্বরে বিটকয়েন নিয়ে ছদ্মবেশে একজন একটা আর্টিকেল প্রকাশ করে। কিভাবে বিটকয়েন কাজ করে সেই সম্পর্কে।
বিটকয়েন হলো পিয়ার টু পিয়ার ব্যবস্থা। অর্থাৎ প্রাপক এবং প্রেরকের মাধ্যমে বিটকয়েন লেনদেন সম্পন্ন হয়। এর মাঝখানে কোন তৃতীয় ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠান হস্তক্ষেপ প্রয়োজন হয় না।
ক্রিপ্টোগ্রাফি কি
বিট কয়েনের মতো ক্রিপ্টোকারেন্সি থেকে আর্থিক লেনদেন করাকে বলে ক্রিপ্টোগ্রাফি। ক্রিপ্টোগ্রাফি দ্বারা লেনদেনের সত্যতা যাচাই করা হয়। বিটকয়েনের ক্রিপ্টোগ্রাফি ব্লকচেইন এর মাধ্যমে সম্পন্ন হয়।
ব্লকচেইন কি
ব্লকচেইন হলো একপ্রকার উন্মুক্ত হিসাবের খাতা। কোন ব্যক্তির চাইলেই দুর্নীতিবাজ ব্যাংকারের মতো হিসাবের গরমিল করতে পারবে না।
বিটকয়েন কিভাবে তৈরি হয়
নতুন বিটকয়েন তৈরি করার জন্য জটিল কম্পিউট প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। যাকে বলা হয় মাইনিং। কয়েক বছর আগেই যে কোন সাধারণ কম্পিউটার দিয়েই মাইনিং করা যেত। কিন্তু বর্তমানে মাইনিং করে লাভজনক হতে হলে অনেক অর্থ বিনিয়োগ করে বড় মাইনিং ফার্ম হাউস তৈরি করতে হয়। বর্তমানে মাইনিং অনেক জটিল হয়ে পড়েছে কারণ অনেকেই মাইনিং শুরু করেছে। তবে আপনি চাইলেই বিটকয়েন ইচ্ছামত উৎপাদন করতে পারবেন না। বিটকয়েনের সংখ্যা কখনোই ২ কোটি ২0 লাখের উপরে যেতে পারবেনা। ১৯৪০ সালের পর নতুন করে আর বিটকয়েন তৈরি করা যাবে না।
বিটকয়েনের মূল্য
স্বর্ণের দাম যেমন বৃদ্ধি পেতে থাকে, তেমনি বিটকয়েনের দাম এভাবেই বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৩ সালের পর থেকে বিটকয়েনের দাম দিন দিন বাড়তেই থাকছে। মানুষ বিটকয়েন কে স্টক মার্কেট এর মত ব্যবহার করতে শুরু করে। তখন অল্প দামে বিটকয়েন কিনে বেশি দামে বিক্রি করার চেষ্টা করে সবাই। বিগত কয়েক বছরে বিটকয়েনের দাম অনেক গুন বেড়ে গিয়েছে। বিভিন্ন বড় বড় কোম্পানি বিটকয়েনের মাধ্যমে কেনাবেচা পছন্দ করে।
বিটকয়েনের প্রয়োজনীয়তা
বিটকয়েন এর প্রয়োজনীয়তা জানতে হলে আপনাকে আগে বর্তমানের ব্যাংকিং সিস্টেম সম্পর্কে জানতে হবে। বর্তমানের ব্যাংকিং সিস্টেমে কিছু সংখ্যক লোক সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে। এতে আপনার লেনদেনকৃত সকল তথ্য তাদের কাছে থেকে যায়। অনেক সময় এই টাকা বেহাতিও হয়ে যায়। গোপনে এবং নিরাপদে টাকা ট্রান্সফার করার জন্য বিটকয়েন তৈরি করা হয়েছে। কেন্দ্র নিয়ন্ত্রিত অর্থ ব্যবস্থার কারণে অনেক সময় অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দেয়। একারণেই নতুন ধরনের মুদ্রা ব্যবস্থার প্রচলন ঘটে, যার নাম ক্রিপ্টোকারেন্সি। আর এই ক্রিপ্টোকারেন্সি পরীক্ষামূলক প্রথম মুদ্রা হলো বিটকয়েন। সকল ধরনের ব্যাংক এবং সরকারের হস্তক্ষেপ এড়িয়ে স্বাধীন অর্থব্যবস্থা পরিচালনার জন্য বিটকয়েন তৈরি হয়েছিল। এই অর্থ কিছু সংখ্যক লোকের হাতে সীমাবদ্ধ নয়। সারা পৃথিবীর ছড়িয়ে থাকা সকল ব্যক্তির কম্পিউটারের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয়।