অ্যাপেল পার্ক (Apple Park) হলো বিশ্ব বিখ্যাত অ্যাপেল কোম্পানির হেড কোয়ার্টার। বিভিন্ন ইলেকট্রনিক পণ্য তৈরি করার ক্ষেত্রে অ্যাপেল যেমন সবসময় আলাদা কিছু করার চেষ্টা করে তেমনি নিজেদের হেডকোয়ার্টার তৈরিতেও স্বতন্ত্রতার পরিচয় দিয়েছে। অ্যাপেল কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা স্টিভ জবস এর মৃত্যুর আগে শেষ পদক্ষেপ ছিল এটি। জীবনের শেষ দুই বছর এই ক্যাম্পাস নিয়ে কাজ করেছেন।
Apple Park |
প্রথম দেখায় যে কেউ এটিকে এলিয়েন জান ভেবে ভুল করতে পারে। মূল ভবনের দেয়াল গুলো নির্মাণে ব্যবহার করা হয়েছে বিশ্বের সর্ববৃহৎ বাঁকা কাঁচের খন্ড। পুরো ভবনে ব্যবহার করা হয়েছে তিন হাজারেরও বেশি এমন কাঁচ। ভবনের সিলিং গুলো নির্মাণে ব্যবহার করা হয়েছে উচ্চমানের পলিশ কংক্রিট। গুণগত মানের দিক থেকে একবিন্দুও ছাড় দেয়া হয়নি। ভূমিকম্প প্রতিরোধে বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে এই ভবনগুলোতে। ভূমিকম্পের সময় পুরো ভবনটি প্রায় চার ফুটের মধ্যে এদিক-ওদিক নড়াচড়া করতে পারবে। মূল ভবনে ২৮ লক্ষ বর্গ ফুট অফিস অফিস স্পেস এবং 83 হাজার বর্গফুটের মিটিং স্পেস। রয়েছে ১ লক্ষ বর্গ ফুটের ফিটনেস সেন্টার। ভবনটির আন্ডারগ্রাউন্ডে রয়েছে ১০০০ আসন বিশিষ্ট অডিটোরিয়াম। স্টিভ জবস এর নামে এটি নামকরণ করা হয়েছে। বর্তমানে অ্যাপেল পার্কে ১২ হাজারেরও বেশি কর্মচারী নিয়োজিত আছে। কর্মীদের গাড়ি পার্কিং করার জন্য রয়েছে স্মার্ট পার্কিং প্লেস। যেখানে একসাথে ১১ হাজার গাড়ি একসঙ্গে পার্ক করা যায়। বিশালাকৃতির অ্যাপেল পার্কে সম্পূর্ণ নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার করা হয়। মূল ভবন এবং পার্কিং এর ছাদে লাগানো হয়েছে অসংখ্য সৌর বিদ্যুতের প্যানেল। সম্পূর্ণ ভবনটিতে এয়ারকন্ডিশন ছাড়াও প্রাকৃতিক ভাবে শীতল করার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
অ্যাপেল পার্কটি আগের অ্যাপেল হেডকোয়ার্টার থেকে মাত্র ১ মাইল দূরে অবস্থিত। কর্মীদের সুবিধার্থে দুইটা ক্যাম্পাসকে একটি ট্যানেলের মাধ্যমে সংযুক্ত করেছে। কর্মীদের যাতায়াত সহজ করার জন্য সেখানে এক হাজারেরও বেশী সাইকেল রয়েছে। ক্যাম্পাস টিতে ছোট-বড় মিলিয়ে মোট সাতটি ক্যান্টিন রয়েছে। কর্মকর্তা-কর্মচারী ব্যতীত মূল ভবনে কেও প্রবেশ করতে পারে না। তবে দর্শনার্থীরা যেন পুরো ক্যাম্পাসের ধারণা নিতে পারে সেই জন্য রাখা হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। দর্শনার্থীদের জন্য রাখা হয়েছে ১০ হাজার বর্গফুটের বিশাল অ্যাপেল স্টোর। যেখানে লেটেস্ট মডেলের সবকিছু সবার আগে পাওয়া যায়।