জীবনের নানা টানাপোড়নে কখনো বা কখনো কোনো বিষয় নিয়ে কোন বিষয় নিয়ে দুশ্চিন্তা বা টেনশন করেননি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কষ্টকর। তবে কিছু কিছু মানুষ অনেক ছোট বিষয় নিয়ে টেনশন করে থাকে বা দুশ্চিন্তায় ভোগেন। হতাশায় থাকেন বা ডিপ্রেশনে ভোগেন। আর এভাবেই যে ভয়ঙ্কর ব্যাধির মুখোমুখি নিজেকে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছেন সেটা কি আপনি জানেন?
ডিপ্রেশন দূর করার উপায় |
কিভাবে বুঝবেন আপনি দুশ্চিন্তায় রোগে আক্রান্ত বা ডিপ্রেশনে ভুগছেন আর এর থেকে কিভাবে মুক্তি পাবেন।
দুশ্চিন্তা বা ডিপ্রেশন সাধারন একটা মানসিক চাপ। আমরা প্রতিটি মানুষই প্রতিনিয়ত ডিপ্রেশন বা দুশ্চিন্তার সম্মুখীন হচ্ছি। দুশ্চিন্তা
নিয়ে কিছুদিন আগে ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন (WHO) একটা জরিপ করেছে যে বাংলাদেশের প্রায় ৬৯ লাখ মানুষ দুশ্চিন্তা বা ডিপ্রেশনে ভুগছে।
আজকে আমরা জানবো কিভাবে দুশ্চিন্তা থেকে নিজেকে দূরে রাখতে পারব।
দুশ্চিন্তা বা ডিপ্রেশন রোগ আসলে কি
দেখা গেল যে আপনি বাজারে গেছেন ওখানে গিয়ে আপনি প্রিয় একটা জিনিস খুঁজলেন পেলেন না, বাসায়
এসে হয়তো সেটা নিয়ে বিরক্ত হচ্ছেন অথবা অফিসের কলিগ একটা কথা বল যেটা আমার মনের মতো হলো না।
এরকম অনেকই হতে পারে। এটা তো খুব সাধারণ একটা বিষয়। কিন্তু আমরা হয়তো অতিরিক্ত রেগে যাচ্ছি,
এটাই হচ্ছে দুশ্চিন্তা। একটা কথা মাথায় রাখতে হবে যে প্রত্যেকটা ইমোশনই মানুষের মাঝে থাকবে।
কিন্তু ইমোশনের প্রকাশটা যদি নিয়ন্ত্রণ করা যায় তাহলে আপনার সম্পর্ক গুলো সুন্দর থাকবে।
আপনি কি দুশ্চিন্তা রোগে ভুগছেন??
উপসর্গগুলো জেনে নিন।
দুশ্চিন্তা বা ডিপ্রেশন যদি আপনার হয় তাহলে আপনি বেশ কিছু উপসর্গ আপনার মাঝে দেখতে পাবেন।
সকল মানুষের মধ্যে একটা পোস্টও থাকে যে আমি দুশ্চিন্তা বা বিষণ্ণতায় ভুগছি সেটা আমি বুঝব কিভাবে।
আপনি যদি দেখেন যে আপনি প্রতিনিয়ত অল্পতেই রেগে যাচ্ছেন, ধরেন আপনার রাগের কোন কিছু ঘটেনি
কিন্তু আপনার খিটখিটে মেজাজ হচ্ছে তাহলে বুঝবেন আপনি দুশ্চিন্তা বা ডিপ্রেশনে ভুগছেন।
দুশ্চিন্তা রোগ বা ডিপ্রেশন থেকে মুক্তির উপায়
যারা দুশ্চিন্তা বা ডিপ্রেশনে ভোগে তারা এটা থেকে মুক্তির জন্য কিছু খারাপ পথ বেছে নেয়। যেমন নেশা করা
এবং যার নেশা করে তারা আরো মাত্রাতিরিক্ত নেশা করতে থাকে। এগুলো কখনোই দুশ্চিন্তা বা ডিপ্রেশন থেকে
মুক্তি দিতে পারে না। বন্ধুবান্ধব থেকে দূরে সরে যাচ্ছে পরিবার থেকে দূরে গিয়ে একা থাকার চেষ্টা করছে এগুলো
সবই পালানোর চেষ্টা।
দুশ্চিন্তা রোগ বা ডিপ্রেশনকে না বলুন
হতাশা, দুশ্চিন্তা, ডিপ্রেশন যে নামেই ডাকি না কেন এটাকে ম্যানেজ করার স্বাস্থ্যকর কিছু উপায় রয়েছে।
কারণ আমাদেরকে মনে রাখতে হবে দুশ্চিন্তা বা ডিপ্রেশন আমাদের জীবন থেকে সম্পূর্ণরূপে যাবে না,
এমন কি এটা রাতারাতি সমাধান করাও সম্ভব নয়। কিন্তু এটা নিয়ন্ত্রণ করার উপায় আমরা শিখে নিতে পারি।
অনেকেই আছেন যারা মুখের উপর না বলতে পারেন না।
না বলতে পারা একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আপনার নিজের মনোভাব সম্পূর্ণ রূপে প্রকাশ করতে হবে। অনেক
সময় সরাসরি না করতে না পারার কারণে অনেক মিথ্যা কথা বা কথা ঘুরায় পেচায় বলার চেষ্টা করে, এতে কিন্তু
মস্তিষ্কের ওপর অনেক চাপ পড়ে।
অন্যরা কি বলবে সেটা না ভাবা,
দেখা যায় আমরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যে কোন ফলাফল নিয়ে অনেক চিন্তা করি, শুধু পরীক্ষার ফল-ই নয় বিভিন্ন
ক্ষেত্রে। এটা যে কোন কাজেরই ফলাফল হতে পারে। ফলটা আশানুরূপ না হলেও সেটা নিয়ে দুশ্চিন্তা বা উদ্বিগ্ন
হওয়া যাবে না। কারণ কোন ফলাফল যদি খারাপ হয় লোকে কি বলবে। এটাই খুবই বড় দুশ্চিন্তার ভান্ডার।
কাজের ফলাফলের উপর বেশি চিন্তা না করে কাজটি সুষ্ঠুভাবে করা উপর বেশি চিন্তা করতে হবে।
সামাজিক যোগাযোগ বৃদ্ধি করুন
এটা যদি আপনি খেয়াল করেন যে আপনার জীবনে পরিবর্তন আসছে যে আপনি অনেকদিন কিছু বন্ধুকে কল
করেন না, নিয়মিত কল করা আগে আপনার একটা অভ্যাস ছিল। পরিবারের সদস্যদের বিভিন্ন কাজে সাহায্য
করতেন কিন্তু ইদানিং সেটা করছেন না। সেগুলো আপনাকে করতে হবে। এক কথায় সামাজিকতা রক্ষা করতে
হবে।
আপনার মানবিক গুণাবলি বাড়ান
আরো কিছু সামান্য কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আছে যেমন আমরা প্রতিদিনের জীবন যাপনে নিয়মিত স্বাস্থ্যকর খাবার
খাই, নিয়মিত ব্যায়াম করি। সবকিছু নিয়মিত এবং রুটিন মাফিক করলে সেটা আমাদের দুশ্চিন্তা,
হতাশা বা ডিপ্রেশন কমাবে। আমরা তো প্রতিনিয়ত কাজ করতে থাকবো কিন্তু দুশ্চিন্তা বা হতাশা আমাদের
জীবনের কোন পাশ দিয়ে চলে আসবে সেটা বুঝতেই পারবেন না। কিন্তু সেটা যদি দূর করার উপায় জানা
থাকে তাহলে তো কোনো সমস্যা নেই।