ঘরে বসে ওজন কমানোর উপায়। কিভাবে সহজেই ওজন কমাবেন। মেয়েদের ওজন কমানোর উপায় ও মেয়েদের ওজন কমানোর ডায়েট চার্ট।
আপনি কি কোন রকমের শারীরিক ব্যায়াম করে ছাড়াই অল্প সময়ের মধ্যে স্বাস্থ্যকর উপায়ে ওজন কমাতে চাচ্ছেন। মনযোগ দিয়ে পুরোটা পড়ুন আশা করা যায় এই ডায়েট চার্ট আপনার জীবনকে বদলে দেবে।
সুস্থ থাকতে হলে আপনাকে অবশ্যই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। তাই বর্তমান সময়ে ওজন কমানো নিয়ে এত সব আয়োজন। মনে রাখবেন সঠিক নিয়মে ডায়েটের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে স্বাস্থ্যকর উপায়ে খুব কম সময়ের মধ্যেই ওজন এবং পেটের মেদ চর্বি দূর করা সম্ভব এমন অনেকেই রয়েছে যারা শারীরিক ভাবে মোটা শরীরের মেদ সমস্যায় ভুগছেন। তাদের জন্য আজকের এই ডায়েট চার্ট। নিয়ম করে এই ডায়েট চার্টে মেনে চললে মাত্র 7 দিনে আপনার শরীরের অতিরিক্ত ওজন ম্যাজিকের মতো কমতে থাকবে।
ভোর সকালের করণীয়
সকালে ঘুম থেকে উঠে দাঁত ব্রাশ সেরে নিয়ে 40 থেকে 50 মিনিট হাটাহাটি করবেন। সকালবেলা হাঁটাহাঁটি করলে আপনার ওজন এবং পেটের মেদ দ্রুত কমে যাবে এবং হজম শক্তি বাড়বে, গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর হবে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে।
ভোর সকালের নাস্তা
হাঁটাহাঁটির পর একগ্লাস লেবুর ও মধুর পানি খাবেন। এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে 1 চা চামচ মধু এবং একটি লেবুর অর্ধেক অংশ নিয়ে সঠিকভাবে মিশিয়ে নিয়ে পান করবেন। লেবুতে যদি এসিডিটি থাকে তাহলে লেবুর রস কমিয়ে নেবেন। অথবা খালি পেটে না খেয়ে হালকা কিছু খেয়ে তারপর খাবেন। প্রতিদিন সকালে লেবু মধুর পানি পান করলে আপনার শরীরের অতিরিক্ত ওজন দ্রুত কমতে থাকবে, সেইসাথে এই পানীয়টি আপনার ত্বক পরিষ্কার করবে, ব্রণ ওঠা রোধ করবে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করবে।
সকালের খাবার
সকালের নাস্তায় মাঝারি সাইজের গমের আটার রুটি খাবেন। রুটির সাথে এক কাপ রান্না করার সবজি খাবেন অথবা এক কাপ রান্না করা বুটের ডাল খাবেন। ডিম খাবেন একটা। একটা কুসুম ছাড়া সিদ্ধ ডিম খাবেন। আধা কাপ টক দই খাবেন। টক দই পেটের চর্বি কমাতে বিশেষ উপকারী খাবার। মেদ কমানোর পাশাপাশি এটি শরীরের ক্যালসিয়াম, ফসফরাস এবং ভিটামিন ডি এর যোগান দেয়। ভিটামিন ডি দাঁত এবং হাড়কে শক্তিশালী করে।
মধ্য সকালের নাস্তা
25 গ্রাম পরিমাণ ভাজা কলাই খাবেন। কলাইতে শর্করা এবং ফ্যাটের পরিমাণ খুবই কম থাকে এবং প্রোটিনের পরিমাণ অনেক বেশি থাকে। তাই ওজন কমাতে এটি বেশ কার্যকরী একটি খামার। এক কাপ পরিমান মৌসুমি সবজির সালাদ খাবেন। অথবা দেড়শ থেকে দুইশ গ্রাম ওজনের একটি কাঁচা শসা খাবেন। সালাদে ক্যালরির পরিমাণ নেই বললেই চলে। এই খাবার আপনার পেট ভরাবে ঠিকই কিন্তু কোন ক্যালোরি দিবেনা। যার ফলে অতিরিক্ত ওজন কমবে এবং শরীরের শক্তি বৃদ্ধি পাবে।
দুপুরের খাবার
দুপুরের খাবারে ভাত খাবেন এক কাপ। ভাতের সাথে শাক খাবেন 1 কাপ। 1 কাপ রান্না করা সবুজ অথবা রঙিন পাতাযুক্ত শাক খাবেন। এর সাথে খাবেন সবজিসহ রান্না করা একটা বড় সাইজের মাছের টুকরা। এখানে সবজির পরিমাণ হবে তিন সার্ভিং অর্থাৎ দেড় কাপ এবং মাছের টুকরা ওজন হবে 120 গ্রামের মতো অথবা সবজিসহ রান্না করা ৪ থেকে 5 টুকরা মাংস খাবেন। এখানে মাংসের পরিমাণ হবে 120 গ্রামের মতো। সেই সাথে আরও খাবেন আধাকাপ পরিমাণ এর সবজির সালাদ এবং এক টুকরা লেবু।
বিকেলের নাস্তা
বিকেলের নাস্তায় সিজনাল ফল খাবেন 2 সার্ভিং, 100 থেকে 150 গ্রাম এর মত। আপনার আশেপাশেই ঋতুভেদে যে ফল পাওয়া যায় সেই ফল খাবেন। তবে খেয়াল রাখবেন আপনার ফলের তালিকার যেন তিনভাগের দুইভাগ টকজাতীয় ফল থাকে। বিকেলের নাস্তায় এক কাপ গ্রিন টিও খেতে পারেন। তবে সম্ভব হলে খাবেন না হলে খাবেন না।
রাতের খাবার
রাতের খাবারের রুটি খাবেন একটা একটা মাঝারি সাইজের গমের আটার রুটি খাবেন রুটির সাথে সবজি রান্না করা দুই থেকে তিন টুকরা মাংস খাবেন। অথবা সবজিসহ রান্না করা এক কাপ ছোট মাছের তরকারি খাবেন। অথবা এক কাপ নিরামিষ তরকারি খাবেন।
আরও পড়ুন- ওজন কমাতে তেঁতুল খাওয়ার নিয়ম
এবার দেখে নিন গুরুত্বপূর্ণ কিছু স্বাস্থ্য টিপস যেগুলি ওজন কমাতে চাইলে ডায়েটের পাশাপাশি আপনাকে অবশ্যই মেনে চলতে হবে।
ডাইট এর পাশাপাশি হালকা ব্যায়াম করবেন। ব্যায়াম করলে শরীর একটিভ হয় এবং পুষ্টি উপাদান গুলো ঠিক মতো কাজে লাগে। এর ফলে শরীরের বাড়তি মেদ দ্রুত কমে যায়। প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে পানি পান করবেন। কারণ শরীর থেকে মেদ বা চর্বি বের করে দিতে পানির ভূমিকা অসাধারণ। তাই প্রতিদিন কমপক্ষে 10 থেকে 12 ক্লাস পরিমাণে পানি পান করবেন। প্রতিদিন কমপক্ষে সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করবেন। প্রতিদিন রাত দশটা থেকে এগারটার মধ্যে ঘুমিয়ে পরুন। ঘুম ভালো হলে শরীরের মেদ কমে এবং জমা মেদ ঝরাতে সাহায্য করে।