দ্বীপ সাধারণত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত। পৃথিবীতে অনেক দ্বীপ রয়েছে। এর মধ্যে কিছু দ্বীপে মানুষ ঘুরতে যেতে পারবে। তবে কিছু দ্বীপ হয়েছে খুবই ভয়ঙ্কর যেখানে গেলে মৃত্যু নিশ্চিত। আজ বলবো বিখ্যাত কিছু দ্বীপ সম্পর্কে।
Most mysterious island in the world |
Rabbit Island (খরগোশের দ্বীপ):
জাপান এমন একটি আইল্যান্ড বা দ্বীপ রয়েছে যা পৃথিবীর মধ্যে সবথেকে রহস্যময় দ্বীপ যা রাবিট আইল্যান্ড (Rabbit Island) নামে পরিচিত। এখানে লাখ লাখ খরগোশ রাজত্ব করেন দ্বীপটিকে। পূর্ব সাগরের পাশে অবস্থিত এই দ্বীপটিতে প্রতিবছর বহু পর্যটক ঘুরতে যায়। আর এইসব খরগোশদের সঙ্গে আনন্দ করে। সেখানে রাস্তায়, বনে সব জায়গায় খরগোশ তাদের ঘিরে ধরে। প্রচলিত আছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপান ছয় হাজার মেট্রিকটনের বেশি বিষাক্ত গ্যাস তৈরি করেছিল, পরবর্তীকালে সেই বিষাক্ত গ্যাসের প্রভাব পরীক্ষা করার জন্য এখানে কয়েক হাজার খরগোশ ছেড়ে দেয়া হয়। আর আজ সেই খরগোশের আয় এই দ্বীপটিকে শাসন করছে।
Cat Island (বিড়ালের দ্বীপ):
এই বিড়ালের দ্বীপ জাপানের মিয়াগি শহর অবস্থিত। যার আসল নাম তাস ফিরোজা আইল্যান্ড। আর অবাক করা তথ্য হলো এখানে বিড়ালের সংখ্যা মানুষের থেকে কয়েক গুণ বেশি। আর এ কারণে একে বিড়ালের দ্বীপ বলা হয়। এখানে বিড়ালকে জাপানের মধ্যযুগীয় সময় আনা হয়েছিল। আর দিনদিন এখানে মানুষের বসতি কমে যাওয়ায় বিড়ালের বসতি বেড়ে গিয়েছে। এ কারণেই এখানে আসলে চারপাশে চোখে পড়বে লাখ লাখ বিড়াল।
Crab Island (কাকড়ার দ্বীপ):
ভারত মহাসাগরে অবস্থিত এই দ্বীপের নাম ক্রিসমাস আইল্যান্ড। এই দ্বীপের সব জায়গায় আপনার নজরে পড়বে লাল রঙের হাজার হাজার কাঁকড়া। আর এই লাল রঙের কাকড়ার জন্য এখানকার রাস্তাঘাট সবসময় লাল হয়ে থাকে। এই দ্বীপের বাড়ি, রেস্তোরাঁ, সব জায়গায় এই কাকড়াদের দেখতে পাবেন। সারাবছরই এখানে প্রচুর পরিমাণে কাঁকড়া দেখা যায়। তবে বছরের একটি বিশেষ সময়ে এখানে 12 কোটির বেশি কাকড়ার সমাগম হয়। তখন এই লাল কাকড়ার দল প্রজনন করার জন্য দ্বীপের এক প্রান্ত হতে অন্য প্রান্তে অবস্থিত ভারত মহাসাগরের সমুদ্রতল পর্যন্ত যাত্রা করে। আর এই সময় দ্বীপের বেশিরভাগ রাস্তাতে গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়।
আরও পড়ুনঃ- কুয়াকাটা লাল কাকড়ার চর
Snake Island (সাপের দ্বীপ):
এই দ্বীপটি অবস্থিত ব্রাজিলে। যাকে ক্লে আইল্যান্ড বলা হয়। এখানে সাপের সংখ্যা এতটাই বেশি যে প্রতি স্কয়ার মিটারে পাঁচটির বেশি সাপ দেখা যায়। এই দ্বীপে গোল্ডের ল্যান্সফেজ নামে এক প্রজাতির সাপ পাওয়া যায়। আর এটি পৃথিবীর বিষধর সাপের মধ্যে অন্যতম একটি সাপ। এই সাপ কামড়ালে মানুষ 10 থেকে 15 মিনিটের মধ্যে মারা যায়। ব্রাজিলের যত মানুষ মারা যায় তাদের মধ্যে ৯০ শতাংশ মানুষ মারা যায় এই সাপের কামড়ে। বর্তনী ব্রাজিলের নেভি এই দ্বীপে পর্যটক যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
Crocodile Island (কুমিরের দ্বীপ):
বার্মান নিকটে অবস্থিত এই দ্বীপের আসল নাম হচ্ছে রামলি আইল্যান্ড। এই দ্বীপে কুমিরা মানুষের এত মানুষের ক্ষতি করেছে এবং মেরে ফেলেছে যে সেটা গিনিস বুক অব রেকর্ডে স্থান পেয়েছে। এই দ্বীপে অনেক ছোট ছোট ঝিল রয়েছে, এবং সেই ঝিলের নোনা পানিতে রয়েছে হাজার হাজার কুমির। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এক হাজার জাপানি সৈনিক আসে এখানে বসবাস করতে কিন্তু তার ভেতর বেশিরভাগ সৈনিক মারা যায় এই ভয়ঙ্কর কুমিরের আক্রমণে। বলা হয়ে থাকে সেই আইল্যান্ড থেকে মাত্র ২০ জন সৈনিক বেচে ফিরতে পেরেছিল।
Komodo Island (কোমোডো আইল্যান্ড):
এটি ইন্দোনেশিয়ার নিকটবর্তী একটি সমুদ্র অবস্থিত। এই দ্বীপে বসবাস করছে কোমোডো ড্রাগন নামে বিশাল আকারের হাজার-হাজার গিরগিটি। আর তাদেরই রাজত্ব চলে এখানে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় একটি বিমান এই দ্বীপের নিকটে এসে ভেঙে পড়ে। পাইলট সাঁতরে এই দ্বীপে এসে আশ্রয় নেয়। তিনি লক্ষ করেন এই দ্বীপে বসবাস করছে হাজার হাজার কোমোডো ড্রাগন।
Wild Horse Island (জংলি ঘোড়াদের দ্বীপ):
এই দ্বীপটির নাম সেভেল দ্বীপ যা নভা স্কোটিয়া(Nova Scotia) থেকে একশ মাইল দূরে অবস্থিত। এই দ্বীপ লাখ লাখ জংলি ঘোড়াদের আবাসস্থল বলে জানা যায়। 20 জুন 2013 তে কানাডা সরকার এটাকে ন্যাশনাল পার্ক বলে ঘোষণা করে দেয়। সেখান থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের পর্যটকরা সেই জায়গাটিকে ছুটি কাটানোর স্থান হিসেবে বেশ পছন্দ করেছেন।
Shell Island (ঝিনুকের দ্বীপ) :
পশ্চিম আফ্রিকা তে সেনেগালে এক আজব দ্বীপ রয়েছে যাকে মানুষ ঝিনুকের দ্বীপ বলে। কারণ এই দ্বীপে কোটি কোটি ঝিনুক এসে এক হয়েছে। আরেকটি মজার বিষয় হলো এখানে এসে আপনি যেদিকে তাকাবেন শুধু ঝিনুক আর ঝিনুক দেখতে পাবেন। এখানকার রাস্তা ঝিনুক দিয়ে তৈরি, দোকানের দেয়ালে ঝিনুক ব্যবহার করা হয়, এমনকি কবর পর্যন্ত ঝিনুক দিয়ে দেয়া হয়।