প্রাকৃতিক উপায়ে ডায়াবেটিস চিকিৎসা (Diabetes treatment in natural way)
ডায়াবেটিস শনাক্ত হওয়ার পর আমরা অনেকেই ঘাবড়ে যাই এবং ভাবি যে আমাদের জীবনটাই বুঝি শেষ হয়ে গেল। কিন্তু আসলে এটিতে ঘাবড়ে যাওয়ার কিছু নেই। ডায়াবেটিস একটি সাধারণ রোগ এবং এটি যদি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন তাহলে আপনার স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় কোনো ব্যাঘাত ঘটবে না। আপনি জটিলতাগুলো এড়াতে পারবেন এবং আর দশজন স্বাভাবিক মানুষের মতো জীবন যাপন করতে পারবেন। তবে ডায়াবেটিস সুনিয়ন্ত্রিত রাখতে হবে তার জন্য আপনার চেষ্টা করাই যথেষ্ট। ডায়াবেটিস সুনিয়ন্ত্রিত বলতে আমরা কি বুঝি সেটা আগে জেনে নেই,
ডায়াবেটিস চিকিৎসা |
নিয়ন্ত্রণে থাকা ডায়াবেটিস মানে হচ্ছে খালি পেটে যদি ডায়াবেটিসের মাত্রা বা সুগারের মাত্রা ৬ মিলিমোল প্রতি লিটারের নিচে থাকে । খাবারের ২ ঘন্টা পর সেটি ৮ মিলিমোল প্রতি লিটার নিচে থাকা উচিত। তিন মাসের গড় সুগারের মাত্রা সেটাকে আমরা এইচবিএওয়ানসি বলা হয় সেটি যেন ৭ এর নিচে থাকে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য আপনার কিছু পরিবর্তন আনতে হবে সবথেকে বড় পরিবর্তন আনতে হবে খাদ্যাভাস এবং আপনার শরীরচর্চায়।
ডায়াবেটিসের রোগীদের যে শুধু চিনি, মিষ্টি খাওয়া নিষেধ তাই নয়। তাদের সিম্পল কার্বোহাইড্রেট যুক্ত শর্করা এগুলো কম খেতে হবে। জটিল শর্করা খেতে হবে যেগুলো থাকতে আমাদের শরীরে বেশি সময় লাগে। যেমন সাদা ভাতের তুলনায় রুটি বা লাল চালের ভাত জব, ভুট্টার তৈরি খাবার এগুলো খেতে হবে। এইগুলো সবই শর্করা কিন্তু এগুলো ভালো মানের শর্করা। আমরা ভালো শর্করাটা গ্রহণ করতে চাই এবং সাধারণ শর্করা যেমন চিনি, মিষ্টি কেক এগুলো থেকে দূরে থাকতে চাই। আমরা যে শর্করাগুলো খেতে চাই সেগুলো যেন একটা নির্দিষ্ট বিরতিতে নিয়মিত মাত্রায় খাওয়া হয়। শর্করা খাবার একদম বন্ধ করে দেয়া যাবে না, সারাদিনে অল্প অল্প করে নিয়ম মেনে খেতে হবে। একবারে বেশি না খেয়ে সারাদিনে ভাগ করে খাওয়া উচিৎ।
শুধু শর্করায় নয়, আমির এবং স্নেহ জাতীয় খাদ্য আমাদের হিসাব করে খেতে হয়। আমিষের ক্ষেত্রে আমরা মাছ, মাংস, দুধ, ডিম এর ক্ষেত্রে যতটা নির্ভর করতে পারি কিন্তু যেগুলো তে উচ্চমাত্রায় চর্বি এবং কোলেস্টেরল আছে সেগুলো এড়িয়ে চলাই ভালো। কারণ একজন ডায়াবেটিস রোগীর যত দ্রুত শরীরের ওজন কমাবেন ততো দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। সেই কারকারনে উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার ভাজাপোড়া, ঘি, মাখন দিয়ে তৈরী খাবার বা ফাস্টফুড যত এড়িয়ে চলা যায় ততই ভালো। এগুলো যত কম খেতে পারবেন শরীরের ওজন ততো তাড়াতাড়ি কমে আসবে এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।
আরও পড়ুন- সঠিকভাবে ব্লাড প্রেসার মাপার নিয়ম
শরীরচর্চা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এই একটা মাত্র রোগেই আমরা শরীরচর্চা বা ব্যায়ামকে ওষুধ হিসাবে দেখে থাকি। কারণ একজন ডায়াবেটিসের রোগী যখন হাঁটতে শুরু করেন বা ব্যায়াম করতে শুরু করেন তখন তার শরীরের ইনসুলিন এর কার্যকারিতা কমে যায়। তখন তার নিজের দেহের ইনসুলিন নিজের দেহে বেশি করে কাজ করতে শুরু করে। প্রতিটি কোষগুলো তখন ইনসুলিনের প্রতি সেনসিটিভ হয়ে যায়। তখন আপনাকে নিয়মিত ইনসুলিন নিতে হবে না।
কিভাবে শরীরচর্চা ব্যায়াম করব
সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট সপ্তাহে তিন দিন আমাদের মডারেটর লেভেলের এক্সারসাইজ করতে হবে। সেটা ৩০থেকে ৪০মিনিট হতে পারে। এই ব্যায়াম বা হাটা এমন লেভেলের হতে হবে যেন আপনার হৃস্পন্দন দ্রুত হয়ে যায়, আপনার শ্বাস-প্রশ্বাস যেন দ্রুত হয়। আপনার ফুসফুস এবং হৃদযন্ত্র যেন দ্রুত কাজ করছে সেটা আপনি বুঝতে পারেন।
ব্যায়ামের তিনটি অংশ আছে, প্রথম ক্ষেত্রে ওয়ার্ম-আপ (warm-up) মানে শরীরটাকে ব্যায়াম করার জন্য প্রস্তুত করতে হয়, তারপর এক নাগাড়ে হেঁটে যেতে হয় শেষে বিশ্রাম নিতে হয়। এই সঠিকভাবে যদি ব্যায়াম করতে পারেন এবং সপ্তাহে অন্তত 150 মিনিট হাঁটতে পারেন বা যেকোনো ধরনের ব্যায়াম করতে পারেন তাহলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা আপনার জন্য কোন ব্যাপার নয়। এর পাশাপাশি নিয়মিত আপনাকে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করতে হবে অথবা ইন্সুরেন্স গ্রহণ করতে হবে। নিয়মিত নিয়েছে ডায়াবেটিকস নিজে পরীক্ষা করা শিখতে হবে।
এই মন্তব্যটি লেখক দ্বারা সরানো হয়েছে।
উত্তরমুছুনভাল লাগলো
উত্তরমুছুন