পানির নিচে খুঁজে পাওয়া আশ্চর্যজনক আবিষ্কার (Amazing discovery found underwater)

পানির নিচে খুঁজে পাওয়া আশ্চর্যজনক আবিষ্কার
আমাদের পৃথিবীতে সমুদ্রের মধ্যে প্রচুর পানি রয়েছে কিন্তু আমরা এই পানির ৫ শতাংশও অনুসন্ধান করে দেখতে পারিনি। আর এই ৫ শতাংশ অনুসন্ধান করেই আমরা এত চমৎকার প্রাণী এবং সম্পদ খুজে পেয়েছি।

লেক বৈকাল,Lake Baikal,সামুদ্রিক সম্পদ,Marine resources,Temple of Santiago,টেম্পল অফ সান্টিয়াগো,ম্যাকসিক্যাল ক্যাথেড্রাল,Mexican cathedral,অর্ধ ডুবন্ত জাহাজ,Half sinking ship,Museo Atlantico,মিউজিও আটলান্টিকো,পানির নিচের জাদুঘর,Colombian resources
Amazing discovery found underwater


লেক বৈকাল (Lake Baikal):

এটি রাশিয়ার সাইবেরিয়ার দক্ষিণ অঞ্চলের বেশ ঠান্ডা একটি লেক। এই লেকের ভেতরে বড় বড় গাড়ি আটকে যায় এবং কোথাও যেতে পারে না। বর্ষাকালে এখানে বোঝাই যায়না লেক কোথায় এবং রাস্তা কোথায় এর কারণে চালকেরা রাস্তা থেকে লেকে নেমে পড়ে। আর তাদের গাড়ি এখানেই আটকে যায়। কিন্তু বরফের কারণে গাড়িগুলো ডুবে যায় না। জানা যায় এই লেকে আকাশ থেকে উল্কাপিণ্ড পরেছে। ধারণা করা যায় এই লেকে কোনো ম্যাগনেটিক পাওয়ার (চৌম্বকীয় শক্তি) আছে। এটি কোন সাধারণ লেক নয়। এটি পৃথিবীর মধ্যে সবথেকে গভীর এবং পুরানো একটি লেক। আর পৃথিবীর মিষ্টি পানির ২২ শতাংশ এখানে রয়েছে। এটি পাঁচ হাজার ফিট গভীর। এই লেকের পানিতে এখন পর্যন্ত ৯২ টি গাড়ি, ১৮ টি বোট, ৫৫ স্নো মোবাইল, দুটি মোটরসাইকেল, ট্রাক্টর, হেলিকপ্টার মনকি একটি প্লেন ডুবেছে।


সমুদ্রের নিচে রাইনোসর(Rinosaurs under the sea):

ডুবুরিরা যখন পানির গভীরে যায় তখন তারা কোন সম্পদ বা নতুন প্রাণীর খোজে যায়। কিন্তু এক্ষেত্রে ডুবুরিরা যখন পানির গভীরে নেমেছিল তখন তারা মাছের কোন প্রজাতি খুঁজে পায়নি কিন্তু তারা এখানে রাইনোসরের প্রাচীন প্রজাতি খুঁজে পায়। 10 ফিট লম্বা বেশ বড় রাইনোসর, যা দেখতেও ভয়ঙ্কর। আর এটি বর্তমানে থাকা রাইনোসরের পূর্বপুরুষ ছিল।


সামুদ্রিক সম্পদ(Marine resources):

স্প্যানিশ জাহাজের সম্পদ পাওয়ার পূর্বে নষ্ট সেনোরাস সব থেকে মূল্যবান সম্পদ ছিল। এটি ১৯৮৫ সালে পাওয়া যায়। এটি অ্যাডভেঞ্চার মিলকিফিসিয়ার খুঁজে বের করেন। প্রত্যেক ডুবুরিই স্বপ্ন থাকে তারা যেন পানির নিচে বহু মূল্যবান সম্পদ খুঁজে পায়। আর মিলকিফিসিয়ার সেই স্বপ্ন যখন পূরণ হয়ে যায় তখন সে খুব ধনী হয়ে যায়। ১৬২২ সালে এই জাহাজটির দুর্যোগের কবলে পরে ডুবে গিয়েছিল। জাহাজটাতে ৪০ টনেরও বেশি সম্পদ ছিল। এখানে স্বর্ণ-রুপা সহ আরো অনেক মূল্যবান পাথর ছিল। এটি খুঁজে পাওয়ার পরে সেখানে আরও ৪৫০ মিলিয়ন ডলারের সম্পদ উদ্ধার হয়। কিন্তু সেই সম্পদের সবটুকু পাওয়া সম্ভব হয়নি। কারণ জাহাজটি ভেঙে ডুবে গিয়েছিল।


টেম্পল অফ সান্টিয়াগো(Temple of Santiago):

ম্যাকসিক্যাল ক্যাথেড্রাল (Mexican cathedral)
মাঝে মাঝে দুর্যোগ আসার কারণে বা পানির লেভেল বেড়ে যাওয়ার কারণে অনেক শহর পানির নিচে ডুবে যায়। আর সেই পানি শুকাতে অনেক বছর লেগে যায়। এমন হয়েছে মেক্সিকান একটি ক্যাথেড্রালের সাথে। এটি ৫০ বছর আগে পানির নিচে গায়েব হয়ে যায়। 500 বছরের পুরনো এই ক্যাথেড্রাল স্প্যানিশরা ১৬০০ শতাব্দিতে তৈরি করে। এর নাম ছিল টেম্পল অফ সান্টিয়াগো(Temple of Santiago)। ৪৮ ফিট উঁচু এই ক্যাথেড্রাল ডুবে যায় যখন এর পাশে ১৯৬০ সালের দিকে একটি ব্যারেজ তৈরি করা হয়েছিল। পানি শুকিয়ে যাওয়ার পরে এই ক্যাথেড্রালটি আবারো দেখতে পাওয়া যায়। বর্তমানে পর্যটকরা এটি দেখার জন্য আসে। লোকাল ভোট নিয়ে পর্যটকদের এই ক্যাথেড্রালের বেশ কাছাকাছি নিয়ে যাওয়া হয়।



অর্ধ ডুবন্ত জাহাজ(Half sinking ship):

কোন কোন জাহাজ পানিতে পুরোপুরিভাবে ডুবে যায় না। বরং এগুলোকে পৃষ্ঠ থেকেও দেখা যায়। একটি জাহাজ কানাডার অন্টারিওতে কয়লা নিয়ে যাচ্ছিল। ১৮৮৫ সালে এটি ডুবে যায়, তখন এ কালকে কোন মত উদ্ধার করে তীরে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু এটা ঠিকভাবে মেরামত করা সম্ভব হয়নি। আর এখন এটা পর্যটকদের জন্য জনপ্রিয় স্থানে পরিণত হয়েছে। প্রচুর দর্শক এই জাতিকে উপর থেকে দেখতে আসে। আবার কোন কোন পর্যটক পানির ভিতরে গিয়েও দেখে থাকে। কয়েক বছর আগে ডুবুরিরা এর ভিতরে গিয়ে সবকিছু অনুসন্ধান করতে পারত, কিন্তু সে এখন সেটাও নিষেধ করে দেয়া হয়েছে। এখন এটিকে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য সংরক্ষণ করা হচ্ছে।


পানির নিচের জাদুঘর (মিউজিও আটলান্টিকো)(Museo Atlantico):

এটি একটি আন্ডারওয়াটার মিউজিয়াম যা স্পেনে রয়েছে। এটি ব্রিটিশ আর্টিস্ট জেসন ডিক্যাইরেস টেইলোর (Jason decaires Taylor) ডিজাইন করেছেন। তিনি একজন মেরিন এক্সপার্ট এবং ড্রাইভার ছিলেন। তিনি তাঁর ক্যারিয়ার পানির গভীরে কাজ করে কাটিয়েছেন। টেইলার বোঝাতে চেয়েছিলাম যে আমাদের এই পৃথিবীটাকে বাঁচাতে হবে। তিনি এক বিশেষ উপকরণ দিয়ে এই ভাস্কর্যগুলো বানান যা পানিতে মিশে যায় না। এখানে 200 টিরও বেশি মূর্তি বা স্ট্যাচু বানিয়ে বৃত্তাকারভাবে সাজিয়ে রাখা হয়। এটি এমন করে বানানো হয়েছে যাতে এখানে সামুদ্রিক প্রাণী এসে থাকতে পারে।


কলম্বিয়ান সম্পদ (Colombian resources):

যখন প্লেন ছিল না তখন মানুষ এক দেশ থেকে অন্য দেশে যেতে বা যুদ্ধ করতে জাহাজ ব্যবহার করত। অনেক বছর আগে কলম্বিয়ার সাথে ব্রিটিশ এবং স্প্যানিশদের যুদ্ধ হয়। সেই যুদ্ধে ব্রিটিশরা জিতে যায় এবং স্পেনের একটি জাহাজ ডুবে যায়। স্পেনের জন্য এটা বিরাট লোকসানের ব্যাপার ছিল কারণ এই জাহাজের স্বর্ণ এবং মহামূল্যবান বস্তু ছিল। সাউথ আমেরিকা থেকে সম্পদ নিয়ে এই জাহাজ স্পেনে যাচ্ছিল। আজকের দিনের মূল্য অনুযায়ী এই জাহাজের সমস্ত সম্পদের মূল্য ছিল ১৭ বিলিয়ন ইউ এস ডলার। ২০১৫ সালে কলম্বিয়া এই জাহাজের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পায়। বিশেষজ্ঞদের মতে সমুদ্রের নিচে খুঁজে পাওয়া এটি আজ পর্যন্ত সবচেয়ে দামি আবিষ্কার। কিন্তু প্রশ্ন হল এই সম্পদের মালিক কে হবে। এই জাহাজে স্প্যানিশদের, কিন্তু এই জাহাজ কলম্বিয়ান সমুদ্রের খুঁজে পায় কলম্বিয়ানরা। তাই এই জাহাজটি কলম্বিয়ানদের পাওয়া উচিত।


পানিতে পাওয়া শহর(City found in water):

গ্রিসের দক্ষিণের সমুদ্রের ১৩ ফিট নিচে পৃথিবীর সব থেকে বিখ্যাত এবং পুরাতন শহর খুঁজে পাওয়া যায়। এটি আনুমানিক ৫ হাজার বছর আগে বানানো হয়। এর নাম এখনো জানা যায়নি। গবেষকদের মতে এটি পূর্বে একটি সমৃদ্ধশালী শহর ছিল। ভূমিকম্পের কারণে এটি পানিতে ডুবে যায়। এটি এখনও প্রায় অক্ষত, এটিকে খুব সুন্দর ভাবে ডিজাইন করা হয়েছে। এর লে আউট বর্তমানে বড় বড় শহরগুলোর থেকেও ভালো। এখানে মাঠের বিভিন্ন হাড়ি পাতিল এবং মূর্তি পাওয়া যায়। আর এর থেকে বোঝা যায় এটি এক সময় অনেক বড় শহর ছিল।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন